For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)১৬ করোনি। লেখবার যে সহজশক্তি তোমার আছে তা নিয়ে তুমি গৌরব করতে
পারো।' ১৩৩৮ সালের ২৯ বৈশাখে লেখা এই পত্রখানি লিখে কবির মন পরিতৃপ্ত
হয়নি। নিজের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ করবার জন্য তিনি soos সালের ১৮ কার্তিক
অপরাজিতা দেবীকে দ্বিতীয়পত্র লেখেন। এই পত্রে কবি লিখেছেন, 'আমার মনে পড়ছে তোমার বইখানি যখন আমার হাতে এল, তখন সংযত-
সতর্ক ভাষায় প্রশংসার একটুখানি আভাসমাত্র দিয়েছিলাম। যারা বিজ্ঞলোক,
তারা হাতে রেখে কথা বলে। যদি সব কথা পুরোপুরি বলতুম তাহলে তোমার
অহংকার হত। SM আমার সমব্যবসায়ী, সেই জন্যে তোমাকে প্রশ্রয় দিতে
সাহস হল না, কী জানি কোন্ দিন হয়তো বলে বসবে যে-_থাক সে কথা। 'আমার বলবার ইচ্ছে ছিল, তোমার লেখার যে-ভঙ্গী, যে-রঙ্গ, যে-কটাক্ষ,
হাসির কলকল্লোল, ভাষার যে বিচিত্র নাট্যলীলা, বাংলা-সাহিত্যে আর-কারো
কলমে সেটা এমন চঞ্চল হয়ে ওঠেনি। দুষ্ট ঘোড়ার মতো ওর অবারিত চাল,
অথচ খানা-ডোবাগুলো পার হয়ে যায় এক-এক লাফে | কারো বলবার জো নেই
তোমার হাসি আর কারো হাসির মতো, তোমার গলার সুর আর কারো
সুরে সাধা। অপরাজিতার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ' আঙিনার ফুল” কবি-ঠাকুরদা শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের শ্রীচরণে উৎসপীকৃত। গ্রন্থখানি পেয়ে কবিগুরু লিখলেন, “তোমার লেখনীর একটি স্বকীয় চেহারা আছে, তার ছবি আঁকা চলে।
পাহাড়ে ছোটো নদীতে নতুন বর্ষার বান নামলে নুড়ি ঠেলে ঠেলে জলের ধারা
যেমন কলকল করে টগবগ করে ছোটে, তেমনি তার STM, তার উচ্চহাসি,
তার প্রাণের উদ্বেলতা। তোমার বাণীতে তোমার নিজের কণ্ঠস্বর খুবই সুস্পষ্ট ।' ১৩৪০ সালের বিজয়া-দশমীতে লেখা এই পত্রের পরে অপরাজিতার cla দু-
খানি কাব্যগ্রন্থ 'পুরবাসিনী” এবং “বিচিত্ররূপিণী'” প্রকাশিত হয়েছে। আত্মপরিচয় গোপন
করবার জন্য কবি 'পুরবাসিনী'কে উৎসর্গ করলেন “'রাধারানী দেবী ও নরেন্দ্র দেবের
করকমলে'”। বই দুখানি পেয়ে রবীন্দ্রনাথ ৩০.৩.৩৭ তারিখে লিখছেন, “তোমার নতুন দুখানি বই পেলুম। মেয়েদের সংসারের উপরিতলে যে আলোর
ঝলক চমক খেলে, যে-সব ছায়ার আভাস ভেসে চলে যায়, তারই ধ্বনি ও ছবি
আশ্চর্য সহজ নৈপুণ্যে তোমার রচনার মধ্যে লীলায়িত হয়েছে! আমাদের সাহিত্যে
এই রঙ্গিমা ও ভঙ্গিমা অপূর্ব। তোমার ভাষার সঙ্গে তোমার লেখনীর পরিহাসকুশল
সখীত্র দেখে বিস্ময় লাগে কবিগুরুর এই পত্রচতুষ্টয়ের ভাষা একটু তুলনামূলক দৃষ্টি দিয়ে দেখলে বুঝতে
পারা যায় যে, তার সপ্রশংস স্বীকৃতি নব-নব বিশেষণ রচনা করে এই অজানা
কবিকে অভিনন্দিত করেছে। অপরাজিতা দেবীর সমস্ত রচনাই তার অভিন্নহৃদয়
বান্ধবী রাধারানী দেবীর হাত দিয়ে সাহিত্যসমাজে পরিবেশিত হত। রাধারানী
দেবীই যে অপরাজিতা দেবী. এ-কথা রবীন্দ্রনাথও মর্ত্য থেকে বিদায় নেওয়ার
আগে জেনে যেতে পারেননি।