সুধীন্দ্রনাথ দত্তের গল্পসংগ্রহ | Sudhindranath Datter Galpasangraha

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
পুরুষ কথক নিজের মনোগত তঅত্তিপ্রায়, দুর্বলতা বা ছলনা প্রকাশ করেন GHA | আচ্ছন্ন অবচেতনের উন্মোচনের দৃষ্টান্ত আছে তার গল্পে; মনের কারখানাঘরে চলতে-থাকা বিকলনও তার গল্পে অবয়ব পায়। কিন্তু সেগুলি কোন প্রবাহ তৈরি করে না, যেন ঘটনার বাহিরানায় থম্কে যায় তার চিজ্তাসূত্র। চরিত্রের প্রকাশরূপের প্রবলতা মনের স্পর্শাতুর অনুভূতির ভাবরূপকে রুদ্ধ করে পদে-পদে। 'চার্বাক চট্টোপাধ্যায় গল্পে জনপ্রিয় সমকালীন বাঙলা উপন্যাসের প্রচলিত ao বিষয়ে তীব্র CHT থাকলেও, পাঠককে মানতেই হয়, সুধীন্দ্রনাথের গল্পের বয়ান স্বতন্ত্র হ'লেও চরিত্রের পরিণতিতে বাস্তব সামাজিক অবস্থা সম্ভবত তাকে বন্কিমচন্দ্র বা শরৎচমন্দ্রের' অনুসারী করেছিল। গত শতকের তৃতীয় দশকে কোন কবি-লেখকের রচনা প্রকাশের সমস্যা ও সংগ্রামের বেশ কিছু পরিচয় আছে সুধীন্দ্রনাথের গল্পে। লেখা ফেরৎ-আসা বা তার বিরুদ্ধে মুষ্ট্যাঘাত সমিতির প্রতিবাদের অতিরঞ্জিত ব্যঙ্গচিত্র অথবা “খ্যাতি গল্পে রচনা প্রকাশের পেছনে সাহিত্য-অতিরিক্ত অন্য বিবেচনার প্রয়োগ এ-সময়ের সাহিত্য-পরিবেশের এক বিশ্বস্ত চিত্র মনে হয়। সুধীন্দ্রনাথের গল্পেব ভাষা অনেকসময়েই মনে হয় যেন প্রবন্ধের | এর ফলে বছ Has প্রসঙ্গ আলোচনা যেমন সুগম হয়েছে, তেমনি প্রতিহত হয়েছে গল্পের ATS | এই ত্রুটি অবশ্য অনেকটাই লাঘব হয়েছে সংলাপ-রচনার কুশলতায়। এ-বিষয়ে তার বাক্সিদ্ধি যেন গল্পগুলির রক্ষাকবচ। তার এই দক্ষতা বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ সচেতন ছিলেন ব'লেই সম্ভবত সুধীন্দ্রনাথের গল্পে আখ্যান বয়ন বা ঘটনা অথবা চরিত্র বিশ্লেষণের তুলনায় সংলাপ বেশি মনোযোগ পায়। গল্পের টান ধ'রে রাখে চরিত্রানুযায়ী ভাষা। বিশেষ ক'রে মেয়েদের মুখের ভাষায় তিনি সঞ্চার ক'রে দিতে পারেন প্রাণের স্পন্দন। ক্রেগধে বা করুণায়, বিদ্বেষে বা মিনতিতে তারা জীবন্ত হয়ে ওঠে সংলাপের গুণে। যে-ব্যঙ্গ-বক্রিম' ভাষাব্যবহার তার পরিণত গদ্যের — আর অবশ্যই হাইনে অনুবাদের - ব্যক্তিচিহ্ন হয়ে উঠেছিল, তার স্বাক্ষর আছে এই আদি পর্বের গদ্যে ও নাগর রসিকতায় ভরা পদ্যের অনুশীলনের মধ্যেও | “শিল্পগত আত্মপ্ুকাশের প্রতি তার অবজ্ঞা হিংস্র না-হলে, এ-অবস্থায় তিনিও হয়তো ARMA পাঠক নামক কপোলকলষ্পিত দাতাকর্ণের কাছে অপরিমেয় অনুকম্পার আবেদন পাঠাতেন।”- এ-জাতীয় বাক্য অজম্র ছড়িয়ে থাকে তার আখ্যান জুড়ে | সুধীন্দ্রনাথের ভাষানির্মাণের একটি বৈশিষ্ট্য প্রবাদের ব্যবহার | দেশজ প্রবচনের পাশে তিনি অনুবাদও ক'রে দেন AMA | আবার কখনো গভীর পর্যবেক্ষণ থেকে রচনা করেন প্রবচনময় উক্তি : “পর্যাপ্তির পরে আসে Gaba, সীদামিনীর শেষে জাগে ঘনাদ্ধকার, সংরাগের সীমান্তে থাকে ঘৃণা এবং অবসাদ ।” অন্যদিকে, সম্পূর্ণ শব্দগঠনের নিয়ম মেনে তৈরি করেন 'অস্তম' বা 'বক্রিম”। 'গাড়ল'” বা 'মাগী”'র মতো অশিষ্ট শব্দ যেমন প্রয়োগ করেন, তেমনি প্রচলিত ব্যবহারের বিপর্যয় ঘটিয়ে প্রয়োগ করেন 'মামুলি*, চপলতা'” বা “মুষ্টিমেয়” শব্দগুলি; পদ্যের 'সনে'র মতো “পুছবি'-জাতীয় শব্দ ব্যবহারেও তার শুচিবায়ূ থাকে ati তার গল্পে হাল্কা রসিকতার ছড়ার পাশাপাশি সংস্কৃত ছন্দের বাঙলা রূপাস্তরও ভাষাপ্রয়োগে তার দক্ষতার পরিচয় দেয়। সুধীন্দ্রনাথের ace চার্বাক, লিলি বা মাধবীর সঙ্গে ফিরে দেখার মতো দু-চারটি ঘটনা ছাড়া আকস্মিক কাকতালের আশ্রয় বেশি নেননি গল্পকার । প্রকৃতি বর্ণনাও সংখ্যায় অল্প ও অকারণে দীর্ঘ নয়। কিন্তু গল্প যখনই দীর্ঘ হ'য়ে ওঠে তার হাতে, পাঠক হয়তো ঈষৎ বিভ্রান্ত হন [১৫]



Leave a Comment