For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)গিললো। পাস্তা থেয়ে হুকায় কয়েকটা টান দিয়ে মাচায় উঠে বুড়া সেই যে নিন্দ পাড়তে
শুরু করলো, আল্লা রে আল্লা, সন্ধ্যাবেলার ঝড়, ঝড়ের পর বৃষ্টি, তারপর আসমানের একটু
জিরিয়ে নেওয়ার পর ফের টিপটিপ বৃষ্টি-_মানুষটা এসবের কোনো খবরই যদি রাখে! পেট
ঠাণ্ডা থাকলে বুড়া কী ঘুমটাই যে পাড়ে! ' কাল সকালে বুড়াকে কয়েকটা শাক আলু পেটে জামিন দিয়েছিলো কুলসুম। ব্যাস ওই
পর্যন্ত। এ ছাড়া এ পর্যন্ত তার মূখে একটা দানা পড়েনি। তার আর ঘুম হয় কোথেকে ?
ঘরে-তোলা-উনান একটা আছে, কিন্তু পরের দিন বাদলা হলে চাল Boca কী করে__এই
বিবেচনায় হাঁড়ির চালটুকুতে গন্ধ নিয়ে কুলসুম গুটিসুটি মেরে era পড়েছিলো স্বামীর
পাশে | ঘরে এবার নতুন চাল ছাওয়া হয়েছে, কোনোখান দিয়ে পানি পড়ছে না- এই সুখে
বিভোর কুলসুমের চোখেও যে রাজ্যের ঘুম নেমে এসেছিলো সে তার কিছুই টের পায়নি।
তারপর তমিজের বাপ কখন উঠলো, বাইরে গেলো কথন, আবার ফিরে এসে STA পড়লো
মেঝেতে- এসব কিছুই টের পায়নি কুলসুম। তমিজের বাপ এখন যতই ঘুমাক, বেলা করে
ঘুম থেকে উঠে পিচুটি-জড়ানো- চোখে ঘরের কোণে ইাড়িবাসনের দিকে Ere করে
তাকিয়ে থাকবে, তারপর ভাত না গেলে তার সারা শরীরে সাড়া পড়ে যাবে, তখন গলা
থেকে কাশি জড়ানো যে স্বর বেরোবে তাতে আর-কারো ঘরে টেকা দায়। তবে সেই স্বর বেরুতে এখনো দেরি আছে, বুড়া অঘোরে ঘুমাচ্ছে। এই সুযোগে
ঘরের দুটো আ্যালুমিনিয়ামের Siva ওপরকার মাটির সরা তুলে কুলসুম প্রাণ ভরে নিশ্বাণ
নেয়। এই SI করতে তাকে মেঝেতে নামতে হয়নি, মাচায় বসেই মাচার শেষ প্রান্তের
জিনিসপত্র নাড়াচাড়া করা যায়। তো তার তিনটে কী চারটে নিশ্বাসে Siva সের দেড়েক
চালে. বলকানো ভাতের সুবাস পাওয়া যায়। এতে তার পেট, তারপর তলপেট, তলপেট
থেকে পেট হয়ে ওপর দিকে বুক ও একেবারে জিভ পর্যন্ত চনচন করে ওঠে | চালের ভাতের
গন্ধ পেয়ে পেটের এই তোলপাড়ে কুলসুমের গতর কিন্তু এলিয়ে পড়ে না, বরং আরো চাঙা
হয়। গতরের সাড়ায় সে তখন এটা করে, ওটা FCA! যেমন, FAL মাস আগে টাউন
থেকে তমিজের নিয়ে আসা বড়ো আযালুমিনিয়ামের হাঁড়ির ওপরকার মাটির সরা সরিয়ে
তমিজের্ মায়ের আমলের একটা ওষুধের শিশি আলগোছে তুলে তার খরখরে আঙুলে কাচের
মসৃণ ছোয়া নেয়। ছোটো গোল আয়নাটা ডান হাতে নিয়ে একবার নিজের মুখের
ডানদিকে, একবার বাদিকে, একবার চিবুক দেখে । দুই গাল ও চিবুক দেখার পুনরাবৃত্তি
চলে বেশ কয়েকবার। দুই গালের মধ্যে তার তেমন ফারাক নাই, শরীরের শ্যামলা রঙ
গালে ফ্যাকাশে হয়ে এসেছে বলে নিজের মুখটাকে তার প্রায় ফর্সাই ঠেকে। টিকলো না
হলেও নাকটা তার উঁচুই, সামনের দিকটা একটু বড়ো। ঠোটজোড়া তার দাদার মতো
অতটা পাতলা নয়, কিন্তু পান খেলে দাদার মতোই দুটো ঠোটই টুকটুকে লাল দেখায়।
দাদার মুখে পানশুপারি থাকতো দিনরাত, কুলসুম পান পায় কোথায় ? আয়না ভালো করে
.দেখে সেটা পাশে রেখে RGA ভেতর থেকে একটা একটা করে তমিজের পুরোনো পিরান,
লুঙি ও তিলে-ধরা-কিস্তি-টুপি হাতে নিয়ে নাকের সঙ্গে ঠেকিয়ে কুলসুম জোর জোরে
নিশ্বাস টেনে গন্ধ নেয়। তমিজের পিরানের পিঠটা ছেঁড়া, তমিজ ফেলে যাবার পর আর
ধোয়া হয়নি। জামার বুকে ঘামের গন্ধ দিন-দিন ফিকে হয়ে আসছে, কুলসুমের নিশ্বাসের
তোড়ে শিগগরিই মুছে না যায় ? না-কি, নিশ্বাসে নিশ্বাসেই এর গন্ধ এখন পর্যন্ত টিকে আছে
কি-না তাই বা কে জানে ! - ১৬