কলকাতার আড্ডা | Kolkatar Adda

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বাঙালি তার জাতীয় চরিত্রের ছাঁচ বদলাচ্ছে। ছাচ-বদলানো আশঙ্কার কথা। আজকের MAS সভ্যতা প্রত্যেক মানুষকে গড়পড়তা এক ছাঁচে গড়ে তুলতে চাইছে। জাতীয় বৈচিত্র্য হারিয়ে এই গড়পড়তা এক ছাঁচের বিশ্বনাগরিক হওয়া সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রেত নয়। যুদ্ধিমান জাত তাই সহজে ছাঁচ বদলায় না। যেমন ইংরেজ। সব ত্রুটি সত্তেও তাই তারা জগতের সেরা জাত। বাঙালি নির্বৃদ্ধির মতো দ্রুত তার জাতীয় চরিত্রের ছাঁচ বদলে চলেছে! বাঙালির চণ্ডীমগুপ খালি। সে জায়গায় দোকানঘর করা হয়েছে, ভাড়া পাওয়া যায়। বাঙালি তাবু খাটিয়ে সর্বজনীন পুজো করছে। রেডিওতে টেপ-রেকর্ডে চণ্ডীপাঠ শুনছে। বাঙালির আড্ডার বৈঠক আজ খালি। কিন্তু বাংলার জল-হাওয়ার সঙ্গে আড্ডার এমন আত্মিক যোগ যে, এক জায়গা থেকে স্থানচ্যুত হয়ে সে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে-_ কর্পোরেশনে, অফিসে, রাষ্ট্রসভায়, AS, চায়ের দোকানে, খেলার তাবুতে, রাজনৈতিক দলের প্রত্যেক জেলা-সমিতিতে, স্কুলে, কলেজে-_ সর্বত্র সব কাজের ফাঁকে ফাঁকে নানা ছজ্মবেশে আড্ডাই বিরাজ করছে! কলকাতা শহরের আড্ডার ইতিহাস কোনও দিন লেখা হবে কি না তা জানি না-- যদি হত, তাহলে এই বাঙালি জাতের মনের আসল চেহারার অনেক খবর পাওয়া যেত, এই বিচিত্র জাতের মনস্তত্তবের অনেক দামি খবর পাওয়া যেত, বাঙালিকে বোবা অনেক সহজ হত। জনসনের বিখ্যাত আড্ডার ইতিহাসের সঙ্গে সে-যুগের ইংল্যান্ডের কালচার ও বিদগ্ধতার কাহিনি জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশেও এই রকম কয়েকটি আড্ডা ছিল যাদের আবহাওয়া থেকে বাংলা কালচারের মৌসুমী হাওয়ার খবরাখবর মিলত। এই শতাব্দীর গোড়ার দিকে কলকাতা শহরে এই রকম অনেকগুলি জমাট আড্ডা ছিল এবং এই সব আড্ডায় সেই সময়কার বাংলাদেশের বহু জ্ঞানী-গুণী ও বিশিষ্ট ব্যক্তি নিয়মিত আড্ডাবাজ ছিলেন । বাইরে সারাদিন এইসব গুরুগঞ্ভীর বিশিষ্ট লোকেরা যে যার কাজের মুখোশ পরে যে চেহারায় ঘুরে বেড়াতেন, যখন আড্ডায় ঢুকতেন তখন মুখোশ বাড়িতে রেখে আসতেন; আড্ডায় তাদের দিকে চাইলে তাঁদের সত্যিকারের মুখ দেখা যেত; তখন সে-মুখ দিয়ে যা বেরুত তার আলাদা স্বাদ, আলাদা দাম। আড্ডায় না দেখলে, মানুষের সবটা দেখা যায় না। বাইরে যে “$b টু কলকাতার আড্ডা



Leave a Comment