সেরা মানিক | Sera Manik

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
নন্দ উৎসবে গিয়াছিল, বাড়ি ফিরিয়াই বলিল, “একটা চাকরি না হলে আর চলবে না, দিদি। রাত তখন দশটা বাজিয়াছে। যশোদা বলিল, "তুমি যদি চাকরি করবে তো, কেন্তন গেয়ে দিন কাটাবে কে? কাল সকালতক সুবুদ্ধি দিকবে না, টেকে তো, কাল সকালে চাকরির ভাবনা ভাবিস। এখন cata নিয়ে আমায় ছুটি দে তো, গরমে সিদ্ধ হলাম। ভাইকে ভাত বাড়িয়া দিয়া বলিল, “ম/ত বুড়ো আর সুধীর এখনো Ceca! জ্বালিয়ে খেলো দুটোতে আমাকে -চাকরাণী পেয়েছ আমায়। কাল যদি না তাড়াই দুটোকে-' আজ গুমোট দিয়া এমন গরম পড়িয়াছে যে, রাত্রে ঘরের মধ্যে যশোদার ঘুম আসিল aT) ঘণ্টাখানেক এপাশ-ওপাশ করিয়া আর প্রাণপণে হাত পাখা চালাইয়া সে উঠিয়া গেল ছাতে, ভাবিল, বাকি রাতটা ছাতেই মাদুর পাতিয়া শুইয়া থাকিবে। ছাতে গিয়া দ্যাখে কি, তিলধারণের স্থান নাই। দশ-বারজন মানুষ এলোমেলোভাবে মাদুর আর ছেড়া mealies বিছাইয়া সমস্ত ছাতটি দখল করিয়া আছে. কেউ ঘুমাইয়া পড়িয়াছে, কেউ বসিয়া টানি_তছে বিড়ি। দু'চারজন মানুষ হইলে যশোদা হয়তো গ্রাহা করিত না, একপাশে মাদুর বিছাইয়া শুইযা পড়িত। কিন্তু এতগুলি পুরুষের সঙ্গে ঘেঁষাথেঁষি করিয়া মেয়েমানুষ কি ঘুমাইতে পারে! মতি আর সুধীর খানিক আগে ফিরিয়৷ আসিয়াছে, ঘরের ভিতর হইতেই মশোদা সেটা টের পাইযাছিল। কিছু না বিছাইয়াই দু'জনে একপাশে শুইয়া পড়িয়াছে, বোধ হয়, যশোদাকে ছাতে আসিতে দেখিয়া। দু'জনে নেশা করিয়া আসিয়াছে সন্দেং নাই, কিন্তু রাত বারোটা বাজিতে না বাজিতে ফিরিয়া আসিয়াছে কেন? কি কাণ্ড করিয়া আসিয়াছে দু'জনে কে জানে! আলিসায় বসিয়া একজন লিড়ি টানিতেছিল, বলিল, “বড় গরম না, টাদের মা?” যশোদা ঠাহর করিয়া দেখিল, তার অন্য বাড়ির ভাড়াটে Hare | একটু আশ্চর্য হইয়া বলিল, “তুমি এ বাড়িতে ঢুকলে কখন? জগৎ বলিল, “মতি আর সুধীর দরজা খোলার জনো ডাকছিল, শুনতে পেয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর CASE | ভাবলাম কি, তোমার এ বাড়ির ছাতে যদি একটুকু হাওয়া পাই, তা শালার হাওয়া কই! ই কি গুমুটো গরম গো টাদের মা, air যশোদা কাছে আগাইয়া গেল, “গরম তো বটে, কিন্তু তোমার কি চোখে ঘুম নেই, রাতপূুপুরে বসে বসে বিড়ি টানছ? সকাল সকাল যেতে হবে না কাজে?” “ঘুম না এলে কল্ব কি বল? ঘরে গরমে সিদ্ধ করে দিল, ছাতে এলাম, তা এখানে যেমনি গরম, তেমনি মশা ।”-বিড়িটা ছুঁড়িয়া ফেলিয়া কাধের কাছে সশব্দে চড় মারিয়া জগৎ মশা মারে ; গরমটা যশোদা নিজেও অনুভব করিতেছে, মশার উৎপাতও যে কম নয়, তারও তো একটা প্রমাণ দেওয়া চাই! আলিসায় ভর দিয়া যশোদা কিন্তু ভাবে যে, কে জানে গরম আর মশা-ই তোমায় জাগিয়ে রেখেছে, না কারুর কথা ভেবে তোমার চোখে ঘুম নেই! “দেশে মশা নেই তোমাদের ?' “আছে না” মানুষ টেনে নিয়ে যেতে পারে, এমন WN “আমায় টেনে নিতে পারবে না, কি বল? তেমন গতর আমার নয়।” বলিয়া আলিসায় 'ঠেসান দিয়া যশোদ৷ একটু হাসিল। মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ অকারণে নিজের দেহের বিপুলতার কথাটা যশোদার মনে পড়িযা যায়। ক্ষীণ চাদের আলোয় ঘুমন্ত মানুষগুলিকে আবছা দেখা যাইতেছিল! সকলেই ঘুমের মধ্যে অল্প বিস্তর নড়িতেছিল, কেবল মতি আর সুধীর মটকা- ১২



Leave a Comment