সাতকাহন | Satkahan

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
যেতে হল সেই ডাক্তারের কাছে । আমি তো মণিকার সঙ্গে কয়েকবার গিয়েছিলাম | ওষুধ-টযুধ নিয়ে পৌছে দিয়ে গেল আমাকে হোস্টেলে ।' “এইটে তোমার কাণ্ড ?' ‘Wa! তা কেন হবে ?' 'তাহলে ”' 'ভদ্রলোকের স্ত্রী, যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি নাকি আমাদের হেড মিসট্রেসের বোন, ব্যাপারটা ভাব | সেই বোন যদি বেঁচে থাকত তাহলে মানুষটার অবস্থা কি হত ?' দীপাবলী কি উত্তর দেবে বুঝতে পারেনি | বনানীদি যদি শ্যামবাজারের কথা বলতে আসতেন তাহলে বালিগঞ্জ থেকে শুরু করতেন | এবং যে-কোন বিষয়েই কথা বলতে গেলে একবার না একবার হেডমিসট্রেস চলে আসতেনই | খাটে শুয়ে চোখ TH করে দীপাবলী ডাকল, “তিরি !' তিরি দূর থেকে সাড়া দিল | তারপর তার পায়ের আওয়াজ ঘরে এল | দীপাবলী বলল, 'শোন, তোকে আমি যখন যা প্রশ্ন করব তখনই তার উত্তর দিবি । ফেনাবি না 1 'আমি তো উত্তর দিই ! সরল গলায় বলল তিরি | 'তোকে অর্জুন নায়েক কি বলেছিল ?”' 'ও, ওই কথা ! না, শুনলে তুমি রাগ করবে |’ 'আবার ?' 'মানে, আমার যখন চৌদ্দ বছর বয়স তখন চার চারটে বিয়ের সম্বন্ধ এসেছিল । নেখালি থেকে না | যেসব গ্রামে বৃষ্টি হয়, চাষবাস কবা যায় সেইসব গ্রাম থেকে । বাবার তো পয়সা ছিল না যে বিয়ে দেবে । তা সবাই বলল অর্জুনবাবুকে গিয়ে ধর । একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে । বাবা গেল | অর্জুনবাবু বলল, 'আগে তোমার মেয়েকে চোখে দেখি তারপর বিয়ের খরচ দেব ।' তাই শুনে মা কিছুতেই রাজি নয় | এগ্রামের মেয়েদের চেহারা ভাল না বলে ডাক পড়ে A | কিন্তু অন্য গ্রামের মেয়েরা নাকি হপ্তায় একদিন অর্জুনের কাছে কাজের নামে গিয়ে ACH | একজনের পেটে বাচ্চা এসে গিয়েছিল, অর্জুনবাবু নেখালির একটা ছেলেকে টাকা দিয়ে তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল | মেয়েটা নেখালিতে আসার পরের রাতেই গলায় দড়ি দেয় | তাই মা আমাকে পাঠাল না | “তুই ধান ভানতে শিবের গীত গাইছিস কেন ?' “মানে ?' 'তারপর কি হয়েছিল ?' 'মা পাঠাল at | আমার বিয়েও হল না | এক বছর পরে যখন বাবা-মা সবাই কাজে গিয়েছে, ওই যে তেতুলতলার রাস্তাটা তৈরি হচ্ছিল, তখন অর্জুনবাবু লোক পাঠান আমাদের ঘরে | সেই লোক জিজ্ঞাসা করল আমি ওর ওখানে কাজ করতে যেতে চাই কি না । আমি না বললাম | ব্যাস্‌, সঙ্গে সঙ্গে নেখালির মানুষদের কাজে নেওয়া বন্ধ করে দিল অর্জুনবাবু ৷ সবাই আমার ওপর খেপে গেল | শগ্রামসুদ্ধ লোক বাবাকে গিয়ে বলল, তোমার মেয়েকে কাজে পাঠাও নাহলে আমরা না খেয়ে মরব | এইসময় বংশীদাদা এসে বাবাকে বলল এই কাজটার কথা | মা বলল, চলে যা নইলে তোকে বাঁচাতে পারব না | আমি চলে এলাম । তাই গ্রামের লোক খেপে গেল | বেশ কিছুদিন আমি এখানে চাকরি করতাম আর বংশীদার বাড়িতে থাকতাম | তারপর আগের সাহেব আসার পর-_ ।” মুখ নামাল তিরি । ‘Gl জানে যে তুই এখানে কাজ করিস ।' ১৮



Leave a Comment