লীলা নাগ | Lila Nag

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
করেন। মৌলবী আশরাফউদ্দিন চৌধুরী ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লা জেলার স্বগ্রাম সুয়াগঞ্জ থেকে সেদিনফকার ঘটনা সম্পর্কে যা লিখেছেন, তা খুবই প্রণিধানযোগ্য। “Direct Action Day-% পরে হিন্দু- মুসলমানের মধ্যে যে দাঙ্গা হয়, তাতে এই মহীয়সী নারীর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা কখনও ভুলিবার নহে। তিনি অসংখ্য নিরীহ মুসলমানের প্রাণরক্ষার জন্য স্বীয় জীবনকে বহুক্ষেত্রে বিপন্ন করিয়াছেন, তাহা ইতিহাসে নজির হিসাবে রক্ষিত হওয়ার যোগ্য | তিন দিনের মধ্যে পার্ক সার্কাস অঞ্চল হইতে তিনি একটি মোটরে করিয়া Boys অঞ্চল হইতে যেভাবে নিজের জীবনকে বিপনন করিয়া আমাকে লইয়া গিয়াছিলেন, তাহা আজও মনে হইলে শরীর শিহরিয়া উঠে ।” ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ভারতের বিহারে ও পূর্ববাংলার নোয়াখালীতে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করে | ১৯৪৬ সালের অক্টোবরে নোয়াখালীর দাঙ্গার পর সেখানকার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রামগঞ্জ থানায় মহাত্মা গান্ধী পৌঁছার পূর্বেই লীলা রায় ও অনিল রায় তাদের মহিলা ও পুরুষ কর্মীদের নিয়ে পৌঁছে ক্যাম্প খুলে ছয় দিনে নব্বই মাইল ঘুরে চারশ অবরুদ্ধ হিন্দু নারীকে উদ্ধার করেন । নোয়াখালীর উপদ্রুত এলাকায় তাদেরই প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল সার্ভিস ইনস্টিটিউট'-এর নামে ১৭টি ক্যাম্প খুলে তারা দীর্ঘকাল বিপনন্দের উদ্ধার, সেবা ও সাহায্যের ব্যবস্থা করেন। নোয়াখালীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে সেবাকার্যে নিয়োজিত লীলা রায় ও অনিল রায়ের অভূতপূর্ব কর্মশক্তি দেখে মহাত্মা গান্ধী Yeh হন । আর এ সেবাকার্যের মাধ্যমেই তারা গান্ধীজীর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য লাভ করেন | ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে যে বাংলাকে অবিভক্ত রাখার শেষ চেষ্টা শরৎ বসু, feared রায়, আবুল হাশিম, ফজলুল হক ও সোহরাওয়ার্দী করেন, তার সাথেও লীলা রায় ও অনিল রায় যুক্ত ছিলেন । দেশ বিভাগ যখন তারা ঠেকাতে পারলেন না, তখন উভয়ে পূর্ববাংলায় থেকে সংখ্যালঘুদের স্বার্থে ও দেশের কল্যাণে কাজ করতে উদ্যোগী হলেন । কিন্তু সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম লীগ সরকার তাদের এ মহান কাজে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। দেশ বিভাগের এক বছর পর তারা প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে কলকাতায় চলে যান | অথচ ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দেশ বিভাগের অব্যবহিত পরেই লীলা রায় ঢাকায় “পূর্ব পাকিস্তান মহিলা সংহতি' নামক একটি সমিতি গঠন করেন। নিজের মাতৃভূমিতে থেকে জনসেবার এমন মনোবৃত্তি মনে হয় সত্যিই ATs | কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, গণবিরোধী মুসলিম লীগ সরকার লীলা রায়ের নিঃস্বার্থ সেনামূলক কর্মকাণ্ডও সহ্য করেন নি। কলকাতায় চলে যাওয়ার পরেও লীলা রায় ও অনিল রায়ের কর্মতৎপরতা এতোটুকু থেমে থাকে নি। তাঁরা সেখানে পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে সর্বক্ষণ নিজেদের নিয়োজিত রাখেন | ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত সময়ে অগণিত মানুষ পূর্ববঙ্গের আপন AGS ত্যাগ করে ভারতে চলে যায়। পশ্চিমবঙ্গে ২৯



Leave a Comment