নীললোহিত-সমগ্র [খণ্ড-৫] | Nillohit-samagrah [Vol. 5]

ঙ৬ মীললোহিত-সমগ্র ৫ পারিনি। এটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি নয় ? স্কুল হতে পারে, আর রাস্তা হতে পারে না? শুধু যে রাস্তা নেই তা নয়, এখানেও রাস্তা বানাবার কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়নি। ছেলেমেয়েরা এই আলের ওপর দিয়েই বেশ দৌড়ে চলে WA! আমি পায়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটি। আমি ছেলেবেলায় স্কুলে যেতাম নৌকোয়। এখন যেমন কলকাতার ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুলের বাস আসে, আমাদের জন্য তেমনি নৌকো আসত। রাস্তা বানাবার কোনো ঝামেলাই নেই। ASAT নৌকো উল্টে গেল, আমিও টুপ করে ডুবে গেলুম গুড়ের কলসির মতন। আমাকে যথা সময়ে ঈষৎ নীল চেহারায় উদ্ধার করা হলেও আমার বই খাতা উদ্ধার করা যায়নি। অন্যান্য বইয়ের মধ্যে আমার ইতিহাস বইটিও ছিল। জলের তলায় ডুবে আছে আমার ক্লাস সিস্সের ইতিহাস। এখানে নয়, আমার শৈশব কেটেছে অন্য এক পৃথিবীতে | স্কুল অনেকক্ষণ ছুটি হয়ে গেলেও হেড মাস্টারকে এখনো পাওয়া যাবে। টানা লম্বা টিনের শেডে স্কুল, এখন পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে, হেড মাস্টারমশাই সেই কাজ দেখাশোনা করেন। বিরাট কল্পনা শক্তি থাকলেও শ্যামপুর ব্লক জুনিয়র হাই স্কুলের হেড মাস্টারের চেহারা আন্দাজ করা যাবে all আমাদের হেড মাস্টারমশাইয়ের নাম ছিল রাসমোহন ভৌমিক। রাসমোহন নামটার মধ্যেই বেশ রাশভারি ব্যাপার আছে, আমার জ্যাঠামশাইয়ের, বয়েসী, উনি সোনার ফ্রেমের চশমা পরতেন, মুখখানা ঝুনো নারকোলের মতন। হেড মাস্টারমশাইকে দেখলেই আমরা ভয় পেতাম। একবার আমাদের ক্লাসের জয়ন্ত আড়াল থেকে হেড স্যারকে CHG বলেছিল, তারপর_ এখানকার হেড মাস্টার প্রথম দিন আলাপ হবার পর আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে এসেছিলেন! তার মানে এই নয় যে আমার বয়েস দারুণ বেশি, নীললোহিতের বয়েস সাতাশের বেশি হয় না। ইনি আমার পদবী শুনে ব্রাহ্মণ বলে চিনতে পেরেছিলেন। ব্রাহ্মণের যে এখনো কত খাতির, তা গ্রামে না এলে বোঝা যায় না। হেড মাস্টারমশাইয়ের বয়েস Kee, দেখলে মনে হয় উনিশ, খুব রোগা পাতলা চেহারা, হাফ প্যান্ট পরিয়ে অনায়াসে স্কুলের ফুটবল টিমে নামিয়ে দেওয়া যায়। ইনি সবুজ রঙের খদ্দরের পাঞ্জাবি পরেন এবং তাতের ধুতি। খানিকটা ভারিক্কী ভাব আনবার জন্য ইনি মোটা গোঁফ রেখেছেন। সরু মুখখানিতে মোটা CHE বেশ মজার দেখায়। এই ছোকরাটির অধীনে কয়েকজন বয়স্ক ও বুড়ো শিক্ষক আছেন। বুড়োদের মাথার ওপরে এই UAH ছেলেটি হেড মাস্টার, কারণ ইনি বর্ধমান