মেয়েলি পাঠ | Meyeli Path

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৮ মেয়েলি পাঠ গ্রন্থে এক দাদামহাশয়ের জবানিতে সমর্থন করা হয় শাস্ত্রে শূদ্র ও নারীর অনধিকারেরও। এসব না লিখলে সমাজ যে লেখিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতেই দেবে না কোনো মেয়েকে! না হলে যে অনুরূপা দেবী নারী আন্দোলনে সামিল হতে পারেন, তাকেই কেন লিখতে হবে 'মা'র মতো উপন্যাস, যেখানে টাকার লোভে বিনা দোষে যে পুত্রবর্তী ATs বিতাড়িত করা হয় স্বামীগৃহ থেকে, সেই বধূ একটি প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারণ করে না! রাম-সীতার আদিরূপ এ আধখ্যানে নিহিত ছিল বলেই না A এত সমাদর পেয়েছিল পাঠকসমাজে! যদিও এই উপন্যাসে পুরুষের বছবিবাহকে অন্তত সমস্যাপট হিসেবে উপস্থিত করতে পেরেছিলেন লেখিকা : “মা, মাগো! সতীনের উপর মানুষ কেন মেয়ে দেয়। গঙ্গায় তো এখনও জলের কোন অভাব হয়নি।' তবু 'মন্ত্রশক্তি'র মতো উপন্যাস না লিখলে, বিবাহ-প্রতিষ্ঠানের জয়জয়কার না গাইলে, সাহিত্য জগতে তার কি এমন দাপট তৈরি হত! ‘SH উপন্যাসকে (১৯২০) একজন সমালোচক মনে করেন নিরুপমা দেবীর “দিদি” উপন্যাসের (১৯১৫) জবাব। কেননা স্বপত্মী-ঈর্ষা নয়, স্বপত্নী-প্রণয় থেকেই “দিদি' উপন্যাসে দাম্পত্য প্রেমের সমস্যাপট গড়ে উঠেছে। স্বামী-পরিত্যক্তা প্রথমা পত্নী স্বামীকে সপত্নীর স্বামী হিসেবে দেখতে চেয়েছে, আর যখন CHL স্বামী তারই প্রণয় যাচনা করে চলেছে, তখন তাকে প্রত্যাখ্যানও করতে পেরোছন। এক হিসেবে এও (তা এক প্রতিবাদ, যদিও সে প্রতিবাদ সমাজ-নির্দিষ্ট আইডিয়লজির আওতার ভিতরেই। শেষরক্ষা অবশ্য করতে পারেননি লেখিকা, স্বামীপ্রেমের কাছে হার মেনেছে আত্মসম্মান। 'দিদি' উপন্যাসের এই নায়িকার মতো রবীন্দ্রনাথের “মধ্যবর্তিনী' গল্পের হরসুন্দরীও তার স্বামীকে ANIA হাতে দান করেছিল, কিন্তু একসময় “হরসুন্দরীর মনে কোথা হইতে একদল শরিক আসিয়া উপস্থিত হইল, তাহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিল, তুমি তো ত্যাগপত্র লিখিয়া বসিয়া আছ কিন্তু আমাদের দাবি আমরা ছাড়িব না।'--রবীন্দ্রনাথ পুরুষ বলেই এই MUTA কথা লিখতে পেরেছিলেন, কোনো নারীলেখিকা একথা লেখার কথা ভাবতেই পারেন না। কোনো আত্মসুখের কথা মেয়েদের মুখে উচ্চার্য নয়, তারা বলবেন কেবল আত্মনিগ্রহের Ser সেই আত্মনিগ্রহের ছবি নিরুপমা দেবীর উপন্যাসে বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে, “দিদি' কিংবা 'অন্নপূর্ণার মন্দির” যার দৃষ্টান্ত। আর তাইতেই তো যশ! ‘wes মেয়ে উড়বে ছাই, তবে মেয়ের গুণ গাই'-_আমার ঠাকুমা- দিদিমাদের জন্যে এ যে ছিল মর্মান্তিকভাবে সত্য! ছোট একটি গল্পে রবীন্দ্রনাথ দুই বিবাহের সমস্যাপট যেভাবে উপস্থিত করতে পেরেছেন, তা বঙ্কিমচন্দ্র কিংবা শরৎচন্দ্রের রচনাতে ভাবতেও পারা যায় না, যুবতী বধূ এসে বৃদ্ধ স্বামী আর তার সমবয়সী সপত্মী-সন্তানদের ভালোবাসছে আন্তরিকভাবে, আবার ভালোবাসা পাচ্ছেও তাদের কাছ থেকে-গার্হস্থ্যহবি শান্তিকল্যাণ হয়ে আছে সব এঁদের রচনায়। 'রজনী'র লবঙ্গলতা কিংবা “দেবদাস”- এর পার্বতী তার দৃষ্টান্ত। লবঙ্গলতা বা পার্বতীর খুব বিপরীত অভিজ্ঞতা “পদ্মরাগ'-এর সৌদামিনীর, সপত্নী পুত্রকন্যাকে ভালোবেসে কাছে টানতে গিয়ে বারবার তাকে অপমানিত হতে হয়, অপবাদ পেতে হয়, শেষ পর্যন্ত সংসার ত্যাগ করতে হয়। আরো পরবর্তীকালের লেখিকা আমোদিনী ঘোষ- এর একটি উপন্যাসে প্রতিবাদ আরো ভয়ংকর। বয়স্ক স্বামীর যুবতী দ্বিতীয়া ভার্যা সমবয়সী পুরুষদের ভালোবাসতে চায়, সামাজিক সম্পর্কের থেকে সে পুরুষ তার পুত্রপ্রতিম হলেও তার প্রতি তার আদৌ পুত্রভাব জাগে না, লবঙ্গলতা বা পার্বতীর মতো সুমাতা হবার শখ নেই তার। তার আচরণকে কঠোরভাবে শাসন করেন তার Tass লেখক স্বামী। প্রতিবাদে অবশেষে গলায় দড়ি দেয় সে, গলায় ফাস লাগানোর আগে বদলে নেয় নিজের সধবা সাজ--স্বামী এসে দেখেন ঝুলন্ত এক বিধবামূর্তি! উপন্যাসটির নাম “ফস্কা cra’, পুরুষ প্রতাপের ব্ত্র-আঁটুনির প্রতি তীব্র শ্লেষ। এ



Leave a Comment