For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)অবতরণিকা ১৫ শোষিত ও সর্বহারা । তার ন্যুনতম যা দরকার, তা হচ্ছে মুক্তি | পুরুষতন্ত্র নারীকে নিয়োগ করেছে একরাশ ভূমিকায় বা দায়িত্বে । নারীকে নিয়োগ
করেছে কন্যা, মাতা, গৃহিণীর ভূমিকায়; এবং তাকে দেখতে চায় সুকন্যা, সুমাতা,
সুগৃহিণীরূপে | কোনো নিম্নপদকে অসার মহিমা দিতে হ'লে পদগুলোকে সুভাষিত
করতে হয়; পুরুষতন্ত্রও নারীর ভূমিকাগুলোকে সুভাষিত করেছে, সেগুলোর সাথে জড়িয়ে
দিয়েছে বড়ো বড়ো ভাব | তবে ওই ভূমিকাগুলোর YO তাৎপর্য একটি শব্দেই প্রকাশ
পায় : শব্দটি AT) এ-অঞ্চলে দেবী শব্দটি দাসীরই সুভাষণ | পুরুষতন্ত্র শুধু বলপ্রয়োগ
ক'রে অধীনে রাখতে চায় নি নারীকে, তাকে স্তবস্তৃতিও পান করিয়েছে। পুরুষ কখনো
মনে করে নি যে তার জীবনের সার্থকতা পুত্র, পিতা, গৃহস্থ হওয়াতেই; বরং
এ-ভূমিকাগুলো পেরিয়ে যাওয়াকেই মনে করেছে পৌরুষ; কিন্তু নারীর সার্থকতা নির্দেশ
করেছে কয়েকটি তুচ্ছ ভূমিকাপালনে । পুরুষ নারীকে গৃহে বন্দী করেছে, তাকে সতীত্ব
শিখিয়েছে, TOs নারীর জীবনের মুকুট ক'রে তুলেছে, যদিও লাম্পট্যকেই ক'রে
তুলেছে নিজের গৌরব । পুরুষ উদ্ভাবন করেছে নাবী সম্পর্কে একটি বড়ো মিথ্যা, যাকে
সে বলেছে fore নারী | তাকে বলেছে দেবী. শাশ্বতী, কল্যাণী, গৃহলক্ষ্মী, অর্ধেক
কল্পনা; কিন্তু পুরুষ চেয়েছে 'চিরন্তনী দাসী” ৷ পশ্চিমে নারীরা শোষিত, তবে
মানুষ-পুরুষ দ্বারা শোষিত; আমাদের অঞ্চলে নারীরা শোষিত পশু-পুরুষ দ্বারা । এখানে
পুরুষেরা পশুরই গোত্রীয়, তাই বঙ্গীয়, ভারতীয়, আর পূর্বাঞ্চলীয় নারীরা
যে-শোষণপীড়নের শিকার হয়েছে, পশ্চিমের নারীরা তা কল্পনাও করতে পারবে না।
বাঙলায় নারীরা এখনো পশুদের দাসী 1 পশ্চিমে নারীমুক্তির যে-আন্দোলন চলছে, তার
ঢেউ এখানে এসে এখনো ভালে।!ভাবে লাগে নি। উনিশশতকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে
বাঙলায় নারীদের শিক্ষার যে-ধারা শুরু হয়, তার উদ্দেশ্য নারীকে স্বাধীন স্বায়ত্তশাসিত
করা নয়, তার লক্ষ্য উন্নতজাতের স্ত্রী বা শয্যাসঙ্গিনী উৎপাদন | নারীশিক্ষাও প্রভু
পুরুষেরই স্বার্থে । বিবাহ এখানে নারীদের পেশা 1 বাঙলাদেশে যারা নারীদের কল্যাণ
চান, তারা মনে করেন নারীর কল্যাণ শুভবিবাহে, সুখী গৃহে; স্বামীর একটি মাংসল
পুতুল হওয়াকেই তারা মনে করেন নারীজীবনের সার্থকতা 1 স্বামী যদি ভাতকাপড় দেয়,
তার ওপর দেয় লিপস্টিক নখপালিশ ইত্যাদি, এবং আর বিয়ে না করে, করলেও অনুমতি
নিয়ে করে. বা তালাক না দিয়ে চার স্ত্রীকেই দেখে 'সমান চোখে", তাহলেই
নারীকল্যাণপিপাসুরা পরিতৃপ্ত, ও তাদের আন্দোলন সফল ভেবে ধন্য বোধ করেন। তারা
আসলে পুরুষতন্ত্রের শিকার; তারা নারীকে দেখতে চান সচ্ছল দাসীরূপে | নারীর জন্যে
এর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছু হ'তে পারে AT তারা মানুষ হিশেবে নারীর অধিকার
আদায়ের আন্দোলন করেন না, তাদের আন্দোলন হচ্ছে স্বামীতন্ত্রের কাছে স্্রীতন্ত্রের
আবেদননিবেদন। বিয়ে, স্বামী, সন্তান, গৃহ, সুখ, প্রেম মধুর বাজে কথা; এগুলোতে
নারীর মুক্তি নেই, এগুলোতেই বন্দী নারী । পশ্চিমের নারীবাদীরা প্রত্যাখ্যান করেছে
. এসব । নারীবাদীরা পশ্চিমের পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতাকে দিয়েছে একটা বড়ো নাড়া, ও
“ বুদুলে দিয়েছে অনেকটা, যদিও তাদের চূড়ান্ত সাফল্য আজো সুদূরে | পুরুষতন্ত্রের মতো