For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)সূচনা নিশ শতকের শেষদিকে সৃষ্টিধর্মী ও মননশীল সাহিত্য সৃষ্টি করে বাংলা সাহিত্যের
দেবদেউলকে ভাস্বর করে তুলেছিলেন প্রতিভাশালিনী লেখিকা স্বর্ণকুমারী দেবী।
প্রায় অর্ধশতাক্দীরও অধিককাল ধরে বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিকে সৃষ্টি, কার্য
চালিয়ে তিনি স্বকীয়তার্ নিদর্শনও রেখে গেছেন। স্বর্ণ-প্রতিভা শুধুই সাহিত্যসৃষ্টির বৈচিত্র
নয়, বাঙলা দেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মহলেও নিয়ে এসেছিল আলোড়ন। লেখনী
স্বর্ণকুমারীর আগেও বাঙালী মহিলা ধরেছিলেন, কিন্তু সে লেখনীতে নারীস্বভাবের স্পর্শ ছিল
বেশি-_ যে-স্বভাব থেকে HS হয়ে প্রথম ব্যক্তিত্বসম্পন্ন স্বকীয় সৃজনীপ্রতিভার নৈপুণ্য দেখালেন
স্বর্ণকুমারী। এই বিশিষ্টতা স্বর্ণকুমারী আকস্মিকভাবে পান নি, পেয়েছিলেন উত্তরাধিকারসূত্রে
জোড়াসীকোর ঠাকুরবাড়ীর দুকুলপ্রসারী উজানের পরিপূর্ণতায় ভরা জীবনবোধ থেকে।
গাকুরবাড়ীর পরিবার এই জীবনবোধ পেয়েছিল পাশ্চাত্ত্য নব্যসংস্কৃতি ও ভারতবর্ষের প্রাচীন
এতিহ্যের মানসিক সম্পদের সমন্বয় থেকে৷
শতাব্দীকাল ধরে বাঙালীর ভাব ও চিত্তার।জ্যে অক্ষু্ন উজ্জ্বলতা বহন করে আসছে যে
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ী সেই বংশেই স্বর্ণকুমারীর জন্ম | উনিশ শতকের প্রথমদিকে গণ্যমান্য
প্রগতিশীল ধনী বাঙালী বলে প্রসিদ্বি অর্জন করেছিলেন স্বর্ণকুমারীর পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর
(১৭৯৪--১৮৪৬)।
দ্বারকানাথের তিন পুত্র দেবেন্দ্রনাথ (১৮১৭--১৯০৫), গিরীন্দ্রনাথ (১৮২০--_৫৪)
ও নগেন্দ্রনাথ (১৮২৯--৫৮)। দেবেন্দ্রনাথের আগে দ্বারকানাথের এক অল্পায়ু কন্যাসস্তান
ছিল। দেবেন্দ্রনাথের পরেও এক পুত্র নরেন্দ্রনাথ (আয়ু ৩ বছর) এবং গিরীন্দ্রনাথের পরে এক
পুত্রভূপেন্দরনাথ (১৮২৬--৩৯) AGA দ্বারকানাথের জ্যেষ্ঠ পুত্র দেবেন্দ্রনাথ যখন জন্মগ্রহণ
করেন (১৮১৭ সাল) তখনও তার স্বোপার্জিত এই বিপুল বিত্তের আগমন হয় নি দ্বারকানাথের
তখনও পেতৃক গোলপাতার ঘর বিদ্যমান | অতুল এশ্বর্যের মধ্যে দেবেন্দ্রনাথের জন্ম হয় নি,
তিনি জন্মেছিলেন তার সূচনাক্ষেত্রে। 'আত্মজীবনী”তে দেবেন্দ্রনাথ বলেছেন, প্রথম যেদিন
তিনি শাল গায়ে দিয়েছেন সেদিনের কথা তার মনে আছে।* বিষয়সম্পত্তির পর্যবেক্ষণে,
তৎকালীন কলকাতার নানা লোকহিতকর অনুষ্ঠানে, ইউরোপীয় ও দেশীয় বিভিন্ন ব্যক্তিদের
সঙ্গে বিবিধ সামাজিকতায় দ্বারকানাথকে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হত। দেবেন্দ্রনাথের বয়স
যখন ছ-বছর তখনই দ্বারকানাথ গর্ভণমেণন্টের বিশ্বাসভাজন হয়ে ভাবী অতুল সম্পদের ভিত্তি
স্থাপনের নানা চেষ্টায় নিযুক্ত । কিন্তু কর্মবাহুল্য সত্ত্বেও ছেলের শিক্ষা, সভ্যতার দিকে তার দৃষ্টি
ছিল। ছ-বছর বয়সে হাতে খড়ি দিয়ে বাড়ীর পাঠশালায় গুরুমশায়ের কাছে দেবেন্দ্রনাথের
বিদ্যাযস্ত হল। তারপর কিছুকাল বাড়ীতেই তিনি গৃহশিক্ষকের কাছে ইংরাজী, বাংলা, ফারসী