অপুর সংসার সমগ্র | Apur Sansar Samagra

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সূর্যকে ডুবুড়ুবু দেখিয়া তাহারা woos হাঁটিতে আরম্ভ করিলেন। কিন্তু ঠাকুরঝি পুকুরের ধারে আসিতেই তাহারা Sewers হাতে পড়েন। দস্যুরা প্রথম ব্রাহ্মণের মাথায় এক ঘা লাঠি বসাইয়া দিতেই তিনি প্রাণভয়ে চিৎকার করিতে করিতে পথ ছাড়িয়া মাঠের দিকে ছুটিলেন, ছেলেও বাবার পিছু পিছু ছুটিল। কিন্তু একজন বৃদ্ধ অপরে বালক--ঠ্যাঙাড়েদের সঙ্গে কতক্ষণ দৌড়পাল্লা দিবে? অল্পক্ষণেই তাহারা আসিয়া শিকারের নাগাল ধরিয়া ঘেরাও করিয়া ফেলিল। নিরুপায় ব্রাহ্মণ নাকি প্রস্তাব করেন যে, তাহাকে মারা হয় ক্ষতি নাই, কিন্তু তাহার পুত্রের জীবনদান-_বংশের একমাত্র পুত্র-_-পিগুলোপ ইত্যাদি। ঘটনাক্রমে বীরু রায়ও নাকি সেদিনের দলের মধ্যে স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। ব্রাহ্মণ বলিয়া চিনিতে পারিয়া প্রাণভয়ার্ত বৃদ্ধ তাহার হাতে-পায়ে পড়িয়া অস্তত পুত্রটির প্রাণরক্ষার জন্য বহু কাককৃতি-মিনতি করেন--কিন্তু সরল ব্রাহ্মণ বুঝেন নাই, তাহার বংশের পিগুলোপের আশঙ্কায় অপরের মাথাব্যথা হইবার কথা নহে, বরং তাহাদিগকে ছাড়িয়া দিলে mere দলের অন্যরাপ আশঙ্কার কারণ আছে। সন্ধ্যার অন্ধকারে হতভাগ্য পিতাপুত্রের মৃতদেহ একসঙ্গে ঠাণ্ডা হেমস্ত রাতে ঠাকুরঝি পুকুরের জলে টোকাপানা ও শ্যামাঘাসের দামের মধ্যে পুঁতিয়া ফেলিবার ব্যবস্থা করিয়া ty রায় ab} চলিয়া আসিলেন।. এই ঘটনার বেশি দিন পরে নয়, ঠিক পর বৎসর পূজার সময়। বাংলা ১২৩৮ সাল। বীরু রায় সপরিবারে নৌকা্‌যোগে তাহার শ্বশুরবাড়ি হলুদবেড়ে হইতে ফিরিতেছিলেন। নাকিপুরের নিচের বড় নোনা গাঙ পার হইয়া মধুমতীতে পড়িবার পর দুই দিনের জোয়ার খাইয়া তবে আসিয়া দক্ষিণ শ্রীপুরের কাছে ইছামতীতে পড়িতে হইত। সেখান হইতে আর দিন-চারেকের পথ আসিলেই স্বগ্রাম। সারাদিন বাহিয়া আসিয়া অপরাহ্চু টাকীর ঘাটে নৌকা লাগিল। বাড়িতে পূজা হইত। টাকীর বাজার হইতে পূজার দ্রব্যাদি কিনিয়া রাত্রিতে সেখানে অবস্থান করিবার পর ITA নৌকা ছাড়িয়া সকলে দেশের দিকে রওনা হইলেন। দিন দুই পরে সন্ধ্যার দিকে ধবলচিতের বড় খাল ও ইছামতীর মোহনায় একটা নির্জন চরে জোয়ারের অপেক্ষায় নৌকা লাগাইয়া রম্ধনের জোগাড় হইতে লাগিল। বড় চর, মাঝে মাঝে কাশঝোপ ছাড়া অন্য গাছপালা নাই। একস্থানে মাঝিরা ও অন্যস্থানে বীরু রায়ের স্ত্রী রম্ধন চড়াইয়াছিলেন। সকলেরই মন প্রফুল্ল, দুষ্টদিন পরেই দেশে পৌঁছানো যাইবে। বিশেষত পৃজা নিকটে, সে আনন্দ তো আছেই। জ্যোৎস্না উঠিয়াছিল। নোনা গাঙের জল চক্চক্‌ করিতেছিল। হু-তু হাওয়ায় চরের কাশফুলের রাশি আকাশ, জ্যোৎস্না, মোহনার জল একাকার করিয়া উড়িতেছিল। হঠাৎ কিসের শব্দ শুনিয়া দু- একজন মাঝি রন্ধন ছাড়িয়া উঠিয়া woe চারিদিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিল। কাশঝোপের আড়ালে যেন একটা হুটপাট্‌ শব্দ, একটা ANS কষ্ঠ একবার অস্ফুট চিৎকার করিয়া উঠিয়াই তখনই থামিয়া যাইবার শব্দ। কৌতুহলী মাঝিরা ব্যাপার কি দেখিবার জন্য কাশঝোপের আড়ালটা পার হইতে না হইতে কি যেন একটা হুড়ুম করিয়া চর হইতে জলে গিয়া ডুব দিল। চরের সেদিকটা জনহীন--কিছু কাহারও চোখে পড়িল না। কি ব্যাপার ঘটিয়াছে, কি হইল, বুঝিবার পূর্বেই বাকি দাড়ি-মাঝি সেখানে আসিয়া ( গোলমাল শুনিয়া বীরু রায় আসিলেন, তাহার চাকর আসিল। বীরু রায়ের একমাত্র পুত্র ছিল, সে কই? জানা গেল রম্ধনের বিলম্ব দেখিয়া সে খানিকক্ষণ আগে জোংস্নায় চরের মিথ্যে বেড়াইতে বাহির হইয়াছে। দাড়ি-মাঝিদের মুখ শুকাইয়া গেল, এদেশের নোনা গাঙ = অভিজ্ঞতায় তাহারা বুঝিতে পারিল কাশবনের আড়ালে বালির চরে বৃহৎ কুমীর শুইয়া ওৎ ছিল। ডাঙা হইতে বীরু রায়ের পুত্রকে লইয়া গিয়াছে। তাহার পর অবশ্য যাহা হয় হইল। নৌকার লগি লইয়া এদিকে ওদিকে খোঁজাখুঁজি করা হইল, নৌকা ছাড়িয়া মাঝনদীতে গভীর রাত্রি পর্যন্ত সকলে সন্ধান ক্রিয়া বেড়াইল--_তাহার পর কান্নাকাটি, + b



Leave a Comment