বিদ্রোহিনী নিবেদিতা | Bidrohini Nivedita

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
মিসেস নোবল ও'র কথার মর্মার্থ কী বুঝলেন তিনিই জানেন। বিবেকানন্দের সঙ্গে একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে বললেন, সাধু-সন্ন্যাসীর সঙ্গে আর দশজন সুখী গৃহস্কের ভাবনা-চিত্তায়, কাজকর্মে, স্বতাবে এবং জীবনধর্মের কোনো মিল থাকে না। তারা এক অন্য পৃথিবীর মানুষ। তাঁদের সংস্পর্শে এসে আমরাই ধন্য হয়ে যাই। হুডখোলা ফিটনগাড়িতে একদিকে মিসেস নোবল এবং নিবেদিতা, অন্যদিকে বিবেকানন্দ ও তুরীয়ানন্দ মুখোমুখি বসল। মাথার ওপর উজ্জ্বল নীল আকাশ এবং চারপাশে স্পর্ধিত ভঙ্গিতে টানটান হয়ে দাড়িয়ে থাকা পাম গাছের বনবীথির দিকে নির্নিমেষ চোখে চেয়ে রইলেন বিবেকানন্দ। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর স্বামীজি সারাপথ একাই কথা বলে গেলেন। পরিপাটি করে স্বামীজির জন্য ঘরটি সাজানোই ছিল। মে হাত ধরে তাঁকে ঘরে এনে সোফায় বসাল। বলল, আপনি এখানেই থাকবেন। এটাই আপনার লন্ডনের ঠিকানা। শরীর সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এক পাও নড়তে দিচ্ছি না। আপনার দেখাশোনার সব ভার আমার। সেবু যত্ন করে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তবেই আপনাকে ছুটি দেব। একে একে নোবল পরিবারের সবাই ঘরটিতে এসে বসল। স্বামীজি সহাস্যে সকলের সঙ্গে প্রীতিবিনিময় করে বললেন, মেরি-মা তোমাদের বাড়িখানা ভালোবাসায় মোড়া। ভালোবাসাব জাল ছিঁড়ে বেরোনো খুব শক্ত। আমার সাধ্য কি তোমার নজরদারি ফাঁকি দিয়ে চলে যাব। তবু একদিন সময় হবে শেষ। সেদিন আর ধরে রাখতে পারবে না কেউ। স্বামীজির কথা শুনে এক অনির্বচনীয় আনন্দ হল AVE | উপভোগ করার মতই কথা! মুখে চোখে তার রঙ লাগল। মে পুলকিত গলায় বলল, আপনি কথার যাদুকর। কথা দিয়েই আকাশে মেঘ GCS করে অলকানন্দা নামাতে পারেন। দিদি বলে, আমার গুরু কথা দিয়েই Tees সুধাসিন্ধ বইয়ে দিতে পারে। স্বামীজির অধরে স্মিত হাসি। বললেন, ও সব কিছু নয়। আসলে যে অনুভূতির জন্য যে ভাষা দরকার তা যদি ঠিক ঠিক ব্যবহার হয় তাহলে তা থেকে ভাষার দ্যুতি বেরোয়। একে বলে মনের ঘরে ভাবের চুরি। এ চুরিতে কারো ক্ষতি হয় না। মনের দীপটা উজ্জ্বলতর হয় শুধু। মনের ভিতর ছিটকে ওঠে তার aw! বিদ্যুৎ চমকের মত হঠাৎই হৃদয়ে বীধা পড়ে। মে বলল, আপনার অনেক কথা দিদির চিঠিতে জেনেছি। স্বপ্নের মত মনে BW! এখন চক্ষু-কর্ণের বিবাদভঞ্জন হল। স্বপ্নটা যে সত্যি এবং বাস্তব, এমন করে আগে কোনোদিন জানা হয়নি। ১৩



Leave a Comment