For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)চবিধিশ ঘণ্টা কাজ করেও তো কলকাতায় বাড়ির কাজের লোকদের তিনশো টাকা দেওয়া
হয় না।
সুনীল এবং কিষান দুজনই নীলাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, এ প্যারিস, কলকাতা নয়।
লাখ টাকা বেতন দিয়ে কাজের লোক কে রাখে এখানে? মদে বরফ ঢালতে ঢালতে বলে
সুনীল।
সব কি নিজের হাতে করতে হবে?
সোফার হাতলে বসে নীলা।
চৈতালির গেলাসে মদ ঢালতে ঢালতে কিযান বলে, ভয় পেলে না কি?
ভয়ের কী আছে। ঘরদোর তো সব গোছানোই দেখছি। ঘরে দৃষ্টি ছড়িয়ে বলে নীলা।
গোছানোর কিছু নেই, তোমার কাজ হল, কোনও কিছু অগোছালো না করা। কিযান
জোরে হাসে। খিদে সামাল দিতে দু চাক রুটি খেয়ে, জল খেয়ে দু গেলাস, চৈতালির তাড়ায় গরম
জলে স্নান করে নেয় নীলা। স্নানের জলে ধুয়ে যায় সিথির সিদুর। ধুয়ে যায় চোখের
কালো কালি। নিজেকে শুদ্ধ স্নিগ্ধ করে ভেজা চুলে তোয়ালে পেঁচিয়ে, যেই না জানালায়
দাঁড়িয়েছে, আকাশ বা আকাশের নীচে যে স্বর্গ, দেখতে, হই হই করে ওঠে কিযান, বউ
হয়ে এ কী পোশাক পরেছ? শাড়ি পরো, গয়না পরো, ACHAT CS আসবে বউ দেখতে। কিযানের আবদার বা আদেশ মতো নীলা জিনস ছেড়ে লাল একখানা কাতান পরে
সোনার অলংকারে গা মুড়োলো, হাত ভরে সোনার HTS, কানে ভারী ঝুমকা, গলায়
সোনার মালা। মুখে পাউডার মেখে কাজলু পরে, সিদুরের টিপ পরে কপালে, সিথিতে
সিদুরে আঙুল টেনে এয়োতির চিহ্ন এঁকে, ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক লাগিয়ে তাকাল নিজের
দিকে। এ সিদুর তো সুশাস্তর পরিয়ে দেবার কথা feet! নীলার ঠোঁটের কোণে এক
টুকরো তেতো হাসি, কোথায় এখন সুশাস্ত! দিব্যি আছে নিশ্চয়। বছর ধরে প্রেম করল
নীলার সঙ্গে, আজ বিয়ে হয়, কাল বিয়ে হয় এমন, শেষ অন্দি জাতে মেলে না বলে
কেটে পড়ল, কুলীন ব্রাহ্মণের ছেলে সুশাস্ত চক্রবর্তী, নমশূদ্রের মেয়ে নীলাঞ্জনা মণ্ডলের
সঙ্গে প্রেম করতে পারে, কিন্তু বিয়ে_ aq CB) লেখাপড়া জানা ছেলেও যে এত
জাতফাতের তোয়াক্কা করে! তোয়াক্কা সম্ভবত সুশাস্ত করেনি, করেছে ওর বাবা মা, আর
প্রাগুবয়স্ক ছেলেই বা কী করে বাপ মায়ের পছন্দ করা মেয়ের সঙ্গে সাত পাকে ঘোরে,
নিজের পছন্দ জলাঞ্জলি দিয়ে! নীলার কাছে ও সব কেবল অবাক করা ব্যাপার নয়।
নিজের জীবনটিও তাকে অবাক করে, বিশেষ করে জেদ করে বিয়ে করার ব্যাপারটি।
জীবনে আর যে দুর্ঘটনা ঘটুক এটি যে ঘটবে না, এ ব্যাপারে অনেকটাই সে নিশ্টিত ছিল।
সুশাস্তর বিয়ের পর, স্মৃতির ধার, দাঁতের কামড় নীলাকে রক্তাক্ত করছিল প্রতিদিন, এ
ছাড়া, সে ভাবে, তার উপায়ই বা কী ছিল! নীলার হঠাৎ মনে হয়, বাঁচার জন্য কি তার
কলকাতা ছাড়া, না কি এ অন্য রকম এক মৃত্যুকে বেছে নেওয়া, অথবা বিয়ে করতে হয়
বলে করা, না করলে লোকে মন্দ বলে, ভুরু কুঁচকে তাকায়, তাই! নাকি কী ব্যাপার, বয়স
এত হয়ে গেল, এখনও পাত্র GSA না! এসব কূটকথা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সে ১৮