ভারতের মুক্তি সংগ্রামে চরমপন্থী পর্ব | Bharater Mukti Sangrame Charampanthi Parba

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
লাজপৎ রায়কেও দেখা গেল OG ভাষায় শ্রীকৃষ্ণের জীবনী-প্রণয়নে | এই সময়েই ভাগবত ধর্মের মূল বিষয়বস্তু-_ভক্তিযোগের ব্যাখ্যা লিখতে শুরু করেন অস্বিনীকুমার দত্ত। যুক্তিবাদী ব্রাহ্ম হিসেবে সুখ্যাত বিপিনচন্দ্র পাল বিজয় গোস্বামী প্রচারিত ‘aq বৈষ্ণবীয় weg’ প্রভাবিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে 'ভারত-আত্মা' রূপে বরণ করতেও দ্বিধা করেননি ।* এমনকি ক্যাথলিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় লিখে ফেললেন-_'শ্রীকৃষ্ণতত্ব' | চরমপন্থীরা অবশ্য নিকট অতীতেরও শরণাপন্ন হয়েছিলেন | রমেশচন্দ্র দত্ত বিরচিত “মহারাষ্ট্র জীবন-প্রভাত' প্রকাশিত হওয়ার (১৮৭৮) দুই দশকের মধ্যে ছত্রপতি শিবাজীর স্মৃতিচারণের অস্ফুট গুঞ্জন পরিণত হয় দেশব্যাপী শিবাজী-উৎসব পালনের সমারোহে। বলা Tey এ বিষয়ে অগ্রণী ছিলেন বালগঙ্গাধর তিলক | এই নবমূল্যায়ন পূর্ণতা পেয়েছিল রবীন্দ্রনাথের 'শিবাজী Gere’ কবিতায় (১৯০৪) | এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে প্রায় পুরো উনিশ শতক জুড়ে পশ্চিমী ভারতবিদ্গণ এ দেশের সুপ্রাচীন ও গৌরবোজ্জ্বল সভ্যতা আবিষ্কারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন ।* fey চরমপন্থীরা তারও উপরে উঠে দেশমাতাকে জগজ্জননী GAT সঙ্গে একাসনে বসালেন | “কেন্টিক' পুনরুজ্জীবনবাদ, eater রোমান্টিক আন্দোলন অথবা শ্লীভ-প্রেমী আন্দোলনের মতো বাস্তববিমুখ পলায়নী মনোবৃত্তি চরমপন্থী আদর্শের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে | বিগত শতকের শেষ লগ্নে ভারতীয় জীবনে ওপনিবেশিক শোষণ ও প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির SI যে আবর্ত সৃষ্টি করেছিল বা ইউরোপের প্রযুক্তি বিদ্যার অসামান্য সাফল্য ও সামরিক শক্তির প্রচণ্ডতা যে অসহায় মনোভাব সৃষ্টি করেছিল, হয়তো-বা তার থেকে ত্রাণ পাবার জন্যই অতীতের গর্ভে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন চরমপন্থীরা । এ দেশের শিক্ষিতদের বাল-সুলভ ইংরেজ-বিশ্বাস ও নবলন্ধ গৌরবরোধ শাসককুলের অবজ্ঞা বা করুণা-মিশ্রিত অহমিকার বর্মে বারবার প্রতিহত হচ্ছিল । তাই পার্থিব সম্পদে Har ey আধ্যাত্মিক এঁশ্বর্যে মহিমময়ী দেশমাতৃকার শরণাগত হয়ে তাঁরা পাশ্চাত্যের এই আক্রমণের প্রতিরোধে উদ্বুদ্ধ হতে চেয়েছিলেন | তবে শুধুমাত্র এই কারণে চরমপন্থীদের অবিমিশ্র পুনরুজ্জীবনবাদী হিসেবে চিত্রিত করা অসমীচীন হবে । শেযোক্তদের মতো তাঁরা প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার বহিরঙ্গের নির্বিচার পুনঃপ্রীবর্তনে তৎপর হননি | হিন্দু সংস্কৃতির অস্তলীন আধ্যাত্মিকতার পুনরুদ্ধার এবং তার দ্বারা নবজাগ্রত ভারতবর্ষের জীবন সর্বক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করাতেই তাঁরা উৎসাইী হয়েছিলেন | ইউরোপের অধিকাংশ পণ্ডিত (aa তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন চার্লস হিমেসাথ (Charles Himesath? এবং ভারতীয়দের মধ্য অনেকে বন্কিমচন্দ্রের সাহিত্য-কৃতির মধ্যে ধর্মীয় (হিন্দু) পুনরুজ্জীবনবাদ এবং চরমপন্থী রাজনৈতিক আদর্শের উৎস ween করেছেন i বিজাতীয় রীতিনীতি ও আচার-ব্যবহারের অনুকৃতি বর্জন, দেশজ ধ্যান-ধারণার মধ্যে জাতীয়তাবাদের মূল Bored, সনাতন হিন্দু ধর্মের পুনরুজ্জীবনকে জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক সোপান হিসেবে ব্যবহার ও দেশমাতৃকার একটি অত্যুজ্্বল ভাবমূর্তি রচনা--এ সমস্ত কিছুর পূর্বাভোস যে বন্কিমচন্দ্রের চিন্তা ও বিশ্বাসের মধ্যেই মেলে তা এই পণ্ডিতেরা দেখাতে চেষ্টা করেছেন। Vera অপ্রচ্ছন্ন বাঙালীয়ানাকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পরিপন্থী বলেও কেউ কেউ মনে করেন। বন্কিমচন্দ্রের রচনায় হিন্দুধর্মশাস্ত্রের বহু তথ্য ও তত্ব্বের উল্লেখে হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক মনোভাব যেমন পুষ্ট হয়েছে, তেমনি উগ্র হয়ে উঠেছে মুসলমানদের স্বাতন্ত্যাবোধ-_এ যুক্তির সমর্থকদের সংখ্যাও কম নয় | রামমোহনকে ধর্ম সংস্কারক লুথারের সগোত্র ও বঙ্কিমচন্দ্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার মূর্ত প্রতীক লয়োলার ভূমিকায় কল্পনা করতে দ্বিধা করেননি TE পণ্ডিত । ১৮



Leave a Comment