For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)১২/বিদ্ধদেব বসুর দশটি উপন্যাস আমার এখন মনের মধ্যে যন্ত্রণা হ'তে থাকে-_ কিন্তু উপায় নেই, তবু আমাকে বসতেই হয় কাগজ
আর কলম নিয়ে; এবং আত্ম-নিপীড়ন যত নিষ্ঠুর হয়, কোনো-এক বিকৃত উপায়ে মন তা-ই থেকেই
উপভোগ নিংড়ে বের করে--উৎকট উপভোগ! কত উৎকট, বুঝতে পারি নেশার হাত থেকে
মাঝে-মাঝে যখন oie বিরতি আসে। যদি কখনো প্রশাস্ত বিরতি না আসতো! যদি আমাকে আদৌ
এ-নেশা পেয়ে না বসতো! কিন্তু দেরি হ'য়ে গেছে : বড্ড বেশি দেরি হ'য়ে গেছে ; এখন আর
এ-সব আক্ষেপ করবার সময় নেই।
যা বলছিলাম, সেই খাতা ভরিয়ে তোলবার চেষ্টায় দারুণ উৎসাহে আমি আত্ম-নিয়োগ করলাম।
মাইকেল মধুসূদনের মতো, গোড়ায় মাতৃভাষার প্রতি আমার তাচ্ছিল্যের সীমা ছিলো না ; পরিণত
শৈশর পর্যন্ত ভালো ক'রে বাংলা শিখিনি। কিন্তু মধুসূদনের অনেক আগেই বিভাষায় সাহিত্যরচনার
মুঢ়তা আমি উপলব্ধি করেছিলাম। ইংরেজিতে 2 আমার প্রথম প্রচেষ্টা-এবং শেষ। আমার দ্বিতীয়
প্রচেষ্টাই হ'লো বাংলায় ; তাব বিষয়-_-এখনো আমার মনে আছে-ছিলো ‘Gan’! পয়ারে, ব্রিপদীতে,
মিলের পরে মিল দিয়ে দিয়ে, রোজ একটি দুটি ক'রে নিয়মিতরূপে আমার পদ্যরচনা চলতে লাগলো।
ভেবে-ভেবে আমি সব কাব্যোপযোগী বিষয় বের কবতাম। সন্ধ্যা, নদী, তাবা, চন্দ্র, সূর্য, ফুল, শিশু
আমার কাব্য-ছাগশিশু সদ্য-উম্মেষিত দাঁত দিয়ে পৃথিবীর যাবতীয় বস্তু পরখ ক'রে-ক'রে দেখতে
লাগলো। সৌভাগ্যবশত, বাল্যকালে আমাকে SHA প'ড়ে সময নষ্ট করতে হয়নি, Apa সময়
ছিলো আমার হাতে ; অবাধ, wR, fra থেকে দিন প্রবলতর গতিতে পদ্যের পব পদ্য নি:লৃত
হ'তে লাগলো ; কয়েক মাসের মধ্যে খাতা উঠলো Sra!
ইতিমধ্যে একটা ব্যাপার হ'লো ; আমার সাহিত্যিক জীবনের সেটাই সবচেয়ে প্রধান ঘটনা ব'লে
ধরা যেতে পারে। আমার আর-এক আত্মীয় আমাকে এল খানা ববীন্দ্রনাথের চয়নিকা উপহাব দিলেন।
(চারুবাবুব চয়নিকা--ছোটো সাইজের, ইন্ডিয়ান প্রেসের নিখুঁত ছাপার। হায় সেই অতীত স্বর্ণ-
যুগ, দশজনের ভোট কুড়িয়ে যখন চয়নিকা তৈরি হতো না, যখন SAA আকারে, ভীম ওজনে,
যত্নহীন ছাপায়, এ-আ্যা-র উচ্চারণের পার্থক্য-চিহণ -বিভূষিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যকেতাব চয়নিকা
বেরুতো না!) সেই বই খুলে প্রথম পৃষ্ঠায় পড়লাম :
wae এ প্রভাতে রবির কর
কেমনে পশিলো প্রাণের 'পব
আর সঙ্গে-সঙ্গে, আমার মনেও নির্বারের স্বপ্নভঙ্গ হ'লো। এক সকালবেলায়, দশ নম্বর সদর স্থ্রীটের
বাড়ির ছাতে দাড়িয়ে সূর্যোদয় দেখতে-দেখতে রবীন্দ্রনাথের পৃথিবীর মুখ থেকে পরদা উঠে
গিয়েছিলো ; আমার পৃথিবীর মুখ থেকেও পরদা WTA গেলো, জীবনে প্রথম যেদিন রবীন্দ্র-কাব্যের
সংস্পর্শে এলাম। আমার চোখেন সামনে সমস্ত সৃষ্টির এক আশ্চর্য রূপাত্তর ঘটলো ; আকাশের
রং, ঘাসের রং, মানুষের কথাবার্তা, হাসির শব্দ-_সব বেন এক গভীরতর ইঙ্গিত নিয়ে আমার
মনকে স্পর্শ করতে লাগলো। বদলে গেলো সমস্ত পৃথিবীর চেহারা ; বদলে গেলাম আমি।
আজি এ প্রভাতে রবির কর
ক্রেমনে পশিলো প্রাণের 'পর--
ভালো ক'রে বোঝাবার ক্ষমতা তখনো হয়নি , বিস্ময়েন, আনন্দের বন্যায় যা আমাবে তখন একেবারে
ভাসিয়ে নিয়ে গেলো, তা হচ্ছে কবিতার ছন্দ, তাস emia, সংগীত 1 উন্মাদনার মাঁতা সেই সংগীত
আমাকে অভিভূত করলো।
আনন্দময়ী মুরতি তোমার
কোন দেব তুমি আনিলে দিবা--
অমৃত-সরস তোমার পরশ,
তোমার নয়নে দিব্য বিভা।
'“পতিতা'র প্রকৃত নিষয়বস্তু না-বুঝেও এই সংগীতকে ঘিরে আমার বালক-মন অস্পষ্ট রহস্যের