তাসিলার মেয়র | Tashilar Mayor

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
একই দোষ, অসাধারণ মদও =e ডিনার টেবলে মাঝে মাঝে টলতো। এক রাতে, তা রাত দশটা তো হবেই, ডিনার ঘণ্টা-দুয়েক হল শেষ হয়েছে রিনির। মেয়র সে রাতে বাইরে বেরোচ্ছিল। তার গায়ে এমন পোশাক যে দেখলে তাকে ফরেস্টের এক শ্রেণীর কর্মচারী থেকে পৃথক করা যাবে না, পিঠে রাইফেল, হাতে টর্চ । বাংলো থেকে বেরোতে বেরোতে তার মনে হল, রিনির শোবার ঘরের একটা কাচের জানলার পর্দা কিছু সরানো, আর তার কাছে বসে আছে রিনি, সামনে মদের গ্লাস। মেয়রের মনে হল, রিনি হাসল তাকে দেখে, হাত দিয়ে ইশারা করে ডাকলে। মেয়র বাংলোয় ঢুকে রিনির শোবার ঘরের দরজায় দীড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলে, কিছু কি দরকার ছিল ম্যাডাম? রিনি বললে, বসো, মেয়র, বসো। এ কী বেশ? বরং এ বোতলটাকে খুলে AH | আর তখন আলাপে অন্ধকারকে অতীতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছিল বোধহয়। রিনিই হেসে বলেছিল বোধহয়, বেশ হয় যদি রাইফেল কাধে অতীতে ঢোকা যায়। তাই বলছো? রিনি তার সেই শোবার ঘরে, বাংলোর স্টেটরুম যাকে বলে, ছোট টেবলটার ধারে মদ নিয়ে । মেয়র বোতলের ছিপি খুলে দিতেই অনেক ফেনা উপচে নেমেছিল বোতলের গা বেয়ে। তাকেই বোধ হয় মদে বিবশ হওয়া বলে fafa একবার জিজ্ঞাসা করলে, খাও না, না? একেবারেই না! কিন্তু মেয়র তখন টেবলটা থেকে খানিকটা দূরে, বরং সেই পর্দা গুটানো জানলার কাছে; সেই কাঁচের শার্সি দিয়ে সমুদ্র-সীল আকাশে সোনার টুকরোর মতো তারা দেখা যায়। গ্লাসে মদ ঢেলে ঢেলে সেটাকে টইটম্বুর করে রিনি উঠে দাঁড়াল একবার, বরং মেয়রের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। পড়ে যাবে নাকি? এই ভয়ে মেয়রকে রিনির দিকে এগিয়ে যেতে হল। রিনির চেষ্টা যেন সে ফেনা-উপচানো গ্লাসটাকে মেয়রের ঠোটের কাছে GCA MANS | পাছে একজন ভদ্রমহিলার হাতে ধরা মদের গ্লাসে চুমুক দিতে হয়, এই ভয়ে হাত বাড়িয়ে গ্লাসটাকে ধরলে মেয়র। একই গ্লাস ধরা দুজনের দুখানা হাত ফেনাযুক্ত লালচে মদে ঢেকে গেল। রিনির চোখদুটো অদ্ভুত, তাদের প্রান্তগুলো লাল। যেন হাত খালি হওয়াতে রিনির সে হাত মেয়রের মুখ ছুঁতে গিয়ে টালমাটাল করে গাল বেয়ে বেয়ে নেমে তার কাধের উপরে আশ্রয় নিল। তো, সেই রাতে শেষ পর্যন্ত শিফনপরা সেই স্থলিতচরণাকে পাঁজা-কোলে করে তার স্টেটরুমের বিছানায় নিতে হয়েছিল মেয়রকে। তখন তার ভয় হয়েছিল, সেই একটা অদ্ভুত উষ্ণতায় সেই বিবশার কি মৃত্যু হতে পারে? কেমন একটা উষ্ণতা মেয়র নিজেও অনুভব করছিল। ভয়ে ভয়ে বোতাম খুলে, যেন তাতে রিনির দম নেয়া সহজ হবে, সেই স্বচ্ছ গাউনটাকে খানিকটা আলগা করে দিয়েছিল মেয়র। তখন রিনি তো ঘুমিয়েই পড়েছে। আশ্চর্য নয়? না, মদ খাওয়াটা নয়। সে তো নিজের পয়সায় দামি মদ খায়। সেই অনেক সন্ধ্যায়, অনেক রাতে জানলার ধারে তেমন চুপ করে বসে থাকা রিনি মেমসাহেবের। মেয়র নিচের দিকে তাকাল। ব্রিজের নিচে সেই কালচে-বেগুনি পাথরের অসমান চাইগুলোতে দৃষ্টি পড়ল তার। বাইরে থেকে যা বোঝা যায় না, তেমন কোন ভাবনা আছে কি না রিনির কে জানে? কিছুক্ষণ কিছু না ভেবে, সে যেন অবাক হয়ে ভাবনার এক দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে রইল। একেই কি রেঞ্জার মনের তলার মন বলে? ওরা দুজনেই বিদ্বান, পোস্টমাস্টার আর ASMA ; ওদের অনেক কথাই মেয়র বুঝতে পারে না। দেখো, কী আশ্চর্য কথা, মানুষের মনের নিচেও নাকি স্তরে স্তরে মন আছে। অন্ধকার? পথ হারানো সামলিং বনের মতো? নাকি বনের কাছে বলেই শহরের রিনিমেমদের তেমন হয় এখানে? ২০ তাসিলার মেয়র



Leave a Comment