For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)চিন্তাতেই তিনি আচ্ছন্ন | গান্ধীজিকে তিনি তাঁর গুরুপদে বরণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। বিয়ে-
সাধি, যৌবনের উন্মাদনা, যৌনচেতনা প্রভৃতি তার কাছে তুচ্ছ বলে মনে হতে লাগল। এ
যেন ভগিনী নিবেদিতার স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণের চেয়েও বেশি বিস্ময়কর। কেন
না নিবেদিতা স্বামীজিকে দেখেছিলেন খুব কাছ থেকে৷ শুনেছিলেন তাঁর ওজস্বিনী ভাষায়
TES স্বামীজির জ্বলন্ত চোখ দু'টো যেন অন্তরের অন্তস্থল ভেদ করে নিবেদিতার wales
সত্তাকে পরখ করে নিয়েছিল। নিবেদিতা তন্ময় হয়ে স্বামীজিকে নিরীক্ষণ করেছিলেন।
পড়েছিলেন স্বামীজির লেখা বই পরম বিস্ময়ে । স্বামীজিকৃত হিন্দু সনাতন ধর্মের বিচার
বিশ্লেষণ নিবেদিতার মনে দোলা লাগিয়েছিল। তারপর স্বামীজির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন
অনেক যাচাই করে। মীরা কিন্তু গান্ধীজিকে জেনেছেন রল্যীর বই পড়ে প্রথমে। এর পর থেকেই গান্ধীজির
প্রতি মীরার শ্রদ্ধা। তিনি গান্ধীজিকে তখনো দেখেন নি। তার TOS শুনেননি। গান্ধীজিকে
পরখ করে নেবার সুযোগও তার ঘটেনি। তবুও গান্ধীজিকে পরম গুরু হিসেবে গ্রহণ করার
তার কি আকুলতা। পৃথিবীর ইতিহাসে শুধু একখানা বই পড়ে এরকম একজন মহাত্মার
শ্রীচরণে সম্পূর্ণরূপে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করার চরমদৃষ্টান্ত সম্ভবত এই প্রথম। সুধীজন
মীরার এই সিদ্ধান্তকে বিস্ময়ের চোখে দেখেছেন। কিন্তু মীরার কাছে এই সিদ্ধান্ত ছিল স্বতঃ
সিদ্ধ । পূর্বজন্মের কর্মফল যেন মীরাকে গান্ধী সকাশে নিয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে মীরা ভগবৎ গীতার ইংরেজি অনুবাদ পড়ে ফেলেছেন। আহরণ করেছেন
গীতার সার । মীরা মুগ্ধ । একদিকে গান্ধীজির ব্যক্তিত্ব পান্ডিত্য ও মানবতাবোধ ও অন্য দিকে
গীতার সারমর্ম মীরাকে যোগিনীবেশে ভারতে ছুটতে বাধ্য করল। তখন ভারতে চলছে ব্রিটিশ
বিরোধী গণ-আন্দোলন। মীরা তখন লন্ডনে। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজের উপর মীরার
চোখ পড়ল। মীরা দেখলেন বড় বড় হরফে কাগজে লেখা গান্ধীজি অনশন আরম্ভ করেছেন।
২১ দিন চলবে তার এই অনশন। ভারতে হিন্দু মুগ্লিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বন্ধ করার জন্যই
গান্ধীজির এই অনশন। এই অনশন অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হলনা। হিন্দু মুশ্লিম সম্প্রীতি
ফিরে এলো। গান্ধীজি অনশন করলেন ভঙ্গ । গান্ধীজি তখন কলকাতায়। গান্ধীজির অনশন
ভঙ্গের খবর মীরাকে দিল পরম স্বস্তি। মীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন। মীরা গান্ধীজিকে
চিঠি লিখলেন। গান্ধীর কাছে মীরার এই প্রথম চিঠি। তার মনের সম্পূর্ণ অনুভূতি, ভাব, ভালবাসা,
শ্রদ্ধা সবই যেন গান্ধীজিকে উজাড় করে দিলেন চিঠির মাধ্যমে গান্ধীজির শিষ্যত্ব গ্রহণের
জন্য মীরা যে PRA আরম্ভ করেছেন তাও জানালেন চিঠিতে 1 গান্ধীজির কাছে কুড়ি
পাউন্ডের একখানা চেক পাঠালেন। মীরা মনে মনে ভাবলেন গান্ধীজি হয়ত তার চিঠির কোন উত্তর দেবেন না। চেকখানাও
ফেরৎ পাঠাবেন। এভাবে চিঠি পাঠিয়ে কোন লাভ হবে না। চিঠি পাঠাবার পর বেশ কয়েক
মাস কেটে গেল। মীরা চিঠির উত্তরের আশা ছেড়ে দিলেন। একদিন মীরা বেডফোর্ড গার্ডেন
এ নিজের ঘরে বসে আছেন। টেলিফোনের সামনে বসে কি একটা কাজে ব্যস্ত তিনি। এমন সময় একজন MASH এসে তাকে একখানা চিঠি দিয়ে গেল। চিঠিটা ছিল খামের ভেতর।
4