এই নরদেহ | Ei Naradeha

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৮ এই নরদেহ তা জানে না এখানে একদিন মাঝরাত্রে কী পৈশাচিক একটা কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল। তখনকার দিনের লোক যারা ছিল তারা সবাই ওই মুখুজ্জে-বাড়ির সামনে ভিড় করেছিল কাণুটা Gene) তারা নিশ্চয়ই এখনও বেঁচে আছে! কিন্তু এখন হয়ত আর রোয়াকে বসে আড্ডা দেবার বয়েস নেই তাদের। এখন যারা এখানকার পাড়ায় দল বেঁধে আড্ডা মারে, ঘটনাটা বললে তারা শুনে চমকে উঠবে। এক-একটা ASA যুগ আসে আর আগের যুগটা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সত্যিই কি তা বাতিল হয়? যে-সূর্যটা দিনের পর দিন উদয় হয়ে অস্ত যায় আর রোজ-রোজ নবজন্ম নিয়ে বিরাজ করে তাকে কি কেউ বাতিল করতে পারে? এমন শক্তিধর aries কি প্রতিষ্ঠান কিছু আছে? না, এই ছেলে-ছোকরারা কেউ সে ঘটনার কথা জানে না। সে ঘটনার কথা জানতে. চায়ও না। কিন্তু সন্দীপ সে-ঘটনার কথা চোখে না-দেখলেও কানে শুনেছে, কাগজের পাতায় পড়েছে। আজ ঠিক আন্দাজ করে সেই জায়গাটাতেই এসে দাঁড়িয়েছিন্ু। কিন্তু রাস্তার লোকের অহেতুক কৌতূহলের ঠেলায় বেশিক্ষণ সেখানে দাড়াতে পারলো না সে । অথচ যদি সবাই জানতে পারতো যে সে নিজেও সেই সেদিনকার খুন-খারাবির সঙ্গে জড়িত তাহলে হয়ত অবাক হয়ে যেত তারা! ঘড়ির Howe রাত ক'টা? রাত একটা কি দু'টো কি তিনটেও হতে পারে। কেউ তা সঠিক বলতে পারবে না। কারণ পাড়ার কেউ-ই তখন জেগে ছিল না। যখন জানা গেল তখন ভোর বোধহয় চারটে। শীতকালের ভোর চারটে মানে চার দিকে তখনও জমাট SAT | ইনকাম-ট্যাক্স-অফিসার দক্ষিণ ভারতের অধিবাসী মিষ্টার বরদারাজন গুরুম্বামী বরাবর ভোর DIRT সময় প্রাতঃভ্রমণ করতে বেরোন। সেদিনও তেমনি বেড়াতে বেরিয়েছিলেন। সেন্ট্রাল এ্যাভিনিউ-এ তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে রোজ fawa স্ট্রীট ধরে তিনি যেমন কর্ণওয়ালিশ স্কোয়ারে বেড়াতে যান সেদিনও তেমনি বেড়াতে বেরিয়েছিলেন। হাতে একটা BAG | রাস্তা ফাকা। কোথাও কেউ নেই। তিনি আপন মনে নানা কথা ভাবতে-ভাবতে চলেছেন-_ হঠাৎ রাস্তার ওপর ভারি লম্বা একটা জিনিস পড়ে থাকতে দেখে তিনি থর্মীকে দাড়ালেন ভালো করে নজর করে দেখতে গেলেন। কী ওটা? ওটা কী পড়ে আছে ওখানে? কে ফেলেছে? কী জিনিস? কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলেন ওটা একটা মানুষ৷ একটা মানুষ রাস্তার মাঝখানে আড়াআড়ি পড়ে আছে। হয়ত শুয়ে আছে, ঘুমোচ্ছে-_ কিন্তু রাস্তার ওপরে কি কেউ অমন করে শুয়ে থাকে? বিশেষ করে এই শীতকালে | মাথাটা নিচু করে স্পষ্টভাবে দেখতে গিয়েই মিস্টার গুরুম্বামী চমকে দু'পা পেছিয়ে এলেন। লোকটা তো মরে গেছে। তখন কী যে তার করণীয় তা তিনি বুঝে উঠতে পারলেন না। তার চারপাশে তিনি চেয়ে দেখলেন কেউ কোথাও নেই। সবাই শীতের SOSA লেপ -কম্বল মুড়ি দিয়ে জানালা দরজা বন্ধ করে আরাম করে ঘুমোচ্ছে-_ হঠাৎ কর্ণওয়ালিশ স্ট্রাটের দিক থেকে ঠিক্রে আসা একটা গাড়ির হেড্‌-লাইট-এর আলোয় একটু স্পষ্ট হলো ADT | কিন্তু সে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্যে । তারপরেই আবার গাঢ় অন্ধকার কিন্তু সেই এক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারলেন ওটা একটা মানুষের মৃতদেহ বটে কিন্তু পুরুষের মৃতদেহ নয়। মৃতদেহ একজন মহিলার। মিস্টার গুরুস্বামী ওপরের দিকে চেয়ে দেখলেন। যে-বাড়িটার নিচে মৃতদেহটা পড়ে ছিল ঠিক তার ওপরেই একটা তেতলাবাড়ি ঝুল-বারান্দা। ঝুল-বারান্দাটা ফুটপাথের ওপরে তিন-ফুটের মতন বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। মনে হয় ওখান থেকেই কেউ মৃতদেহটা ফেলে দিয়েছে। কিংবা মহিলাটি ওই ঝুল-বারান্দা থেকে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে... মিস্টার গুরুম্বামী তখন এই ভীষণ আবিষ্কারের আতঙ্কে থর থর করে কঁপছেন। তিনি বাড়িটার সামনের গেটের পাশের থামের ওপর লেখা বাড়ির নম্বরটা দেখে নিলেন। বারো-বাই-এ FGA BAT তিনি আর সেখানে দাঁড়ালেন না। সোজা কাছাকাছি পুলিশের থানার সন্ধানে বেরোলেন। তিনি জানতেন কোথায় ও-এলাকার থানাটা।



Leave a Comment