অনন্ত দ্রাঘিমা | Ananta Draghima

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
২০ «৭ অনন্ত দ্রাঘিমা জলে ভেসে গেলে আর আমি জড়ো করতে পারব না। CATA গিয়েচি। হাটুজলে নেমে নালফুলের ডাটিগুলো যত্ন নিয়ে ডাঙায় ছুঁড়ে দিচ্ছিল চুনারাম। বার বার জল থেকে ডাঙায় ওঠা সময় সাপেক্ষ কাজ, সময় বাঁচাতে চুনারামের বুদ্ধিটা মনে মনে তারিফ করল রঘুনাথ। মনে মনে সে ভাবল আজ ঘরে ফিরলে দুর্গামণির আঁধার মুখে আলো ঝরে পড়বে। অনেক দিন পরে মায়ের খুশি মুখটা দেখতে পাবে CH! গুয়ারাম খাটতে যাবার পর থেকে কেমন মেঘলা হয়ে আছে দুর্গামণির মনটা। রঘুনাথ আড়চোখে দেখেছে। তারও মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। অভাবই এই মন খারাপের জন্য দায়ী--একথা বুঝতে আর বাকি নেই রঘুনাথের। আর একটু বড়ো হয়ে অভাবের টুটিটা সে টিপে ধরবে। লুলারাম কাকার কথাগুলো সে আজও মন থেকে মুছে ফেলতে পারে নি। কথাটায় দম আছে; মদের মতো নেশা হয় শুনলে। পরের ধন চুরিয়ে যারা বাঁচে তারাও তো মানুষ। তাদের কেউ ডরে, কেউ ঘেন্না করে। তবে তারা বেশ গঠাঁটবাট নিয়ে থাকে। তাদের কাছে নিজ-হাত জগন্নাথ। কোনো কাজই তো পাপের নয়। বিধান যদি এই হয় তাহলে পাপের কোনো প্রশ্ন ওঠে না। রঘুনাথ অন্যমনস্ক হয়ে গেল ভাবতে-ভাবতে | জলে গা-ভাসাতে আর ভালো লাগল না Gis | উদ্ভুলমাছের চেয়েও জোর-গতিতে সাঁতার কেটে সে ডাঙার কাছাকাছি এল। চুনারামকে বলল, তুমি ডাঙায় ওঠো, আমি একদিকটা সামলে নিচ্ছি। -_পারবি রে দাদু? -_না পারার কি হল? রঘুনাথের গলায় ছোকরা হয়ে ওঠার জেদ ঝরে পড়ল। নাল ফুল আর ভাটা]লোকে নিয়ে সে জল সাপড়ে ডাঙায় উঠে এল। ডাঙায় উঠে বাঘ দেখার মতো চমকে উঠল সে, বুকের মধ্যে চলতে থাকল আটাচাকির মেসিন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নীলাক্ষবাবু CHS সামলে সাইকেল থেকে নেমে পড়লেন। ভরদুপুরে এদের পুকুরয়াড়িতে দেখতে পাবেন আশা করেন নি; তিনি অবাক হলেন, কি ব্যাপার, তোমারা এখানে কী করছ? চুনারাম ভেজা হাত পরনের খাটো ধুতিতে মুছে নিয়ে হাসল, এই যে বাবু, নালফুল তুলচিলাম। পেটের ধান্দায় কুথায় না যেতে হয় গো! —Sl বলে যাওয়ার আর জায়গা পেলে না? শেষ পর্যন্ত আমার এই পুকুরটাই তোমাদের নজরে পড়ল? বলিহারি দিই তোমাদের চোখকে। নীলাক্ষবাবুর গলা ষুঁইয়ে ঘৃণা আর বিস্ময় পাশাপাশি ঝরে পড়ল, তিনি এক দৃষ্টিতে নালফুলগুলোর দিকে তাকালেন, এগুলো তুললে যে, অনুমতি নিয়েছ? অসহায় ঘাড় নাড়ল চুনারাম, জলের মুফুতে জিনিস, কত লোকে তো নেয় বাবু, আমি না হয় দুটো ডাটা না বলে তুলে নিয়েচি। -_কেন নিলে? আমার জলের ফসল আমার, মানো তো কথাটা? রাগে লাল দেখাচ্ছে নীলাক্ষবাবুর চোখ দুটো। সেই অগ্নিবর্ণ চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ ম্যাদামারা হয়ে গেল চুনারামের, তার ভাবখানা এমন, সে যেন টানাজাল ফেলে সব মাছ ধরে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এখন ধরা পড়ে যাওয়াতে কাঁচুমাচু মুখ। তাকে দেখে Foca উঠলেন নীলাক্ষবাবু, জান, আমি তোমাকে থানায় ঢুকিয়ে বেধড়ক মার খাওয়াতে পারি। -_জানি, সে ক্ষেমতা আপনার আচে, বাবু! আপোসের পথে হাঁটতে চাইল চুনারাম, এবারকার মতো ছেড়ে দিন গো, বেলা বাড়চে ঘর যাই। তাছাড়া ভোখও লেগেচে জব্বর। পেটের ভেতর খিদে ভাবটা কুকুরের নখ হয়ে আঁচড় কাটচে। অনেকক্ষণ পরে নীলাক্ষবাবুর নজর রখঘুনাথের উপর পড়ল, তোমার সাথে এটা কে?



Leave a Comment