কাকে বলে ইতিহাস [সংস্করণ-২] | Kake Bale Itihas [Ed. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
পনেরো দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা ব্রিটেনেই পাওয়া যায় তাতেও আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ, উনিশ শতকের জীকজমক ও বিশ-শতকীয় বিবর্ণতা এবং উনিশ শতকীয় আধিপত্য ও বিশ শতকীয় হীনতার মধ্যে বৈপরীত্য আর কোথাওই এত লক্ষণীয় ও এত বেদনাদায়ক নয়। এই মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিম ইওরোপে ও — বোধহয় খানিকটা কম পরিমাণে — উত্তর আমেরিকায়। উনিশ শতকের বিশাল বিস্তারবাদী যুগে এইসব দেশই যোগ দিয়েছিল সক্রিয়ভাবে। কিন্তু আমার এমন সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই যে এই মনোভাব ছড়িয়ে রয়েছে পৃথিবীর অন্যান্য জায়গাতেও। একদিকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনতিক্রমণীয় প্রতিবন্ধক খাড়া করা ও অন্যদিকে ঠাণ্ডা যুদ্ধ প্রচারের নিরবিচ্ছিন্ন লোত সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো কাগুজ্ঞানসম্পন্ন মূল্যায়নকে দুঃসাধ্য করে তোলে। কিন্তু যে-দেশে জনগণের এক বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এ-বিষয়ে নিশ্চয়ই সচেতন যে তাঁদের এখন যত অভিযোগই থাকুক না কেন, পঁচিশ, পঞ্চাশ বা একশ বছর আগের চেয়ে অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে, সেখানে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে এক ব্যাপক হতাশা গেড়ে বসেছে — এমন কথা প্রায় কেউই বিশ্বাস করবেন না। এশিয়ার জাপান ও চীন — এই দুটি দেশই তাদের নিজস্ব আলাদা আলাদা উপায়ে এমন এক অবস্থানে রয়েছে যার দৃষ্টি অগ্রমুখী। মধ্যপ্রাচ্যে ও আফ্রিকায়, এমনকি যেসব অঞ্চল SHS অবস্থায় রয়েছে সেখানেও, বিভিন্ন উত্থানশীল জাতি এক ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছে, যে-ভবিষ্যতে তারা, যত অন্ধভাবেই হোক না কেন, বিশ্বাস করে। আমার সিদ্ধান্ত : বর্তমান সংশয়বাদ ও হতাশার ঢেউ যা সামনে ধংস ও ক্ষয় ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না এবং প্রগতিতে বিশ্বাস ও মানবজাতির আরও অগ্রগতির সম্ভাবনাকে অর্থহীন বলে খারিজ করে দেয় তা একধরনের শিরোমণিতন্ত্র — নানান শিরোমণি সামাজিক গোষ্ঠী যাদের নিরাপত্তা ও সুযোগসুবিধে এই সঙ্কটের ফলে সবচেয়ে বেশি পরিস্ফুটভাবে ক্ষয়ে গেছে এবং সেইসব শিরোমণিস্থানীয় দেশ বাকি পৃথিবীর ওপর যাদের এককালের অবিসংবাদী প্রভৃত্ব চুরমার হয়ে গেছে — তারাই এই মনোভাব তৈরি করেছে। বুদ্ধিজীবীরাই এই আন্দোলনের প্রধান ধজাধারী, ক্ষমতাসীন সামাজিক গোষ্ঠীর তারা সেবা করেন, তার ধ্যানধারণার জোগানদার তারাই (“কোনো সমাজের ধ্যানধারণা তার শাসক শ্রেণীরই ধ্যানধারণা”)। এইসব বুদ্ধিজীবীর মধ্যে কেউ কেউ আদতে অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠীভুক্ত হতে পারেন — কিছু সে-কথা অপ্রাসঙ্গিক; কারণ, বুদ্ধিজীবী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় তারা অবধারিতভাবেই বুদ্ধিজীবী-শিরোমণিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান। বুদ্ধিজীবীরা সংজ্ঞাগতভাবেই গড়ে তোলেন একটি শিরোমণি গোষ্ঠী



Leave a Comment