নির্বাচিত ভূতের গল্প | Nirbachita Bhuter Galpo

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ভূতিনীর সঙ্গে আমার বিবাহের কথা হইয়াছিল | তাহার রূপের কথা আর বলিব কি ? তাহার নাকটি দেখিয়াই আমার মন একেবারে মুগ্ধ হইয়াছিল । ও হো নাকেশ্বরি ! তোমাকে না দেখিয়া প্রাণ যে আর ধরিতে পারি না ! একবার তোমার ছবিখানি দেখিয়া প্রাণ শাস্ত করি । আমিও দেখি, তোমরাও দেখ, দেখিয়া চক্ষু WTS | যষ্ঠ অধ্যায় ভূতের তেল নাকেশ্বরীর সবি দেখিয়া ঘ্যাঁঘোঁর প্রাণ কিঞ্চিৎ শাস্ত হইল ; সে একে একে সকলের করমর্দন করিয়া প্রস্থান করিল | তখন আমীর, ব্রাহ্মণ ও তাঁতিকে বলিলেন, “আপনাদিগকে আমি অনেক কষ্ট দিয়াছি | ঘর-সংসার ছাড়িয়া আপনারা আমার সঙ্গে ঘুরিতেছেন । আর আপনারদিগকে আমি ব্লেশ দিতে ইচ্ছা করি না । আপনারা বাটী ফিরিয়া যান, আমার কপালে যাহা আছে, তাহা হইবে ।” কিন্তু ব্রাহ্মণ ও তাঁতি কিছুতেই আমীরকে একলা ফেলিয়া যাইতে চাহিলেন না। আমীরের অনেক অনুনয়-বিনয়ে শেষে স্বীকৃত হইয়া তাঁহার নিকট বিদায় লইয়া, বিরস-বদনে দুই জনে গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলেন | ইহারা চলিয়া গেলে ঘ্যাঁঘোঁর কূপের ধারে বসিয়া আমীর অনেকক্ষণ কাঁদিতে লাগিলেন | তারপর মনকে প্রবোধ দিয়া ভাবিলেন, “কাঁদিলে কি হইবে ? এখন ভূত ধরিবার উপায় few করি, তবে তো স্ত্রীর উদ্ধার হইবে 1” অনেকক্ষণ fal করিয়া আমীর মাথা হইতে পাগড়ীটি খুলিলেন | AAG উত্তমরূপে পাকাইলেন, আর তাহার একপাশে একটি ফাঁস করিলেন,। এইব্ূপে সুসজ্জ হইয়া, যে আমগাছে গোঁগোঁ নামক গলায়-দড়ি SS থাকে, সেইদিকে চলিলেন । গাছের নিকট উপস্থিত ইইয়া গাছের উপর উঠিতে লাগিলেন | অনেকদূর উঠিয়া গাছের ডালে পাগড়ীর অপর পার্শ্ব বাঁধিয়া ফাঁসটি গলায় দিতে উদ্যত হইলেন | ফাঁসটি গলায় দেন আর কি, এমন সময় চাহিয়া দেখেন যে, সেই গলায়-দড়ি PS সহাস্যবদনে তাঁহার সম্মুখে আর একটি ডালে বসিয়া রহিয়াছে | ভূত বলিল, “নে নে, শীঘ শীঘ্ব গলায় ফাঁস পরিয়া ঝুলিয়া পড়, নিচে হইতে আমিও সেই সময় তোব পা ধরিয়া টানিব এখন, তা হইলে সত্বর তোর মৃত্যু হইবে, তাহা হইলে আমার বেকার নাতিজামাই তোর ভূতগিরি করিতে পাইবে 1” আমীর কোনও কথা না কহিয়া আস্তে আস্তে জেব হইতে আফিমের CHONG বাহির করিলেন 1 কৌটাটির ঢাকন ভূতের সম্মুখে ধরিলেন | PS তাহাতে উকি-ঝুঁকি মারিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “ওর ভিতর ও--কে ?” আমীর বলিলেন, “একটি ভূত ৷” গোঁগোঁ বলিল, “ভূত ! কৈ, ভাল করিয়া দেখি 1” খুব ভাল করিয়া দেখিয়া গোঁগোঁর নিশ্চয় বিশ্বাস হইল যে, ভৃত বটে । সে জিজ্ঞাসা করিল, “উহার ভিতর তুই ভূত ধরিয়া রাখিয়াছিস কেন 1” আমীর বলিলেন, “আমি একখানি খবরের কাগজ খুলিবার বাসনা করিয়াছি; সম্পাদক ও সহকারী-সম্পাদকের প্রয়োজন । ডিবের ভিতর যে ভূতটি ধরিয়া রাখিয়াছি, তাহাকে সহকারী-সম্পাদক করিব | আর তোরে মনে করিয়াছি, সম্পাদক করিব ।” গোঁগোঁ বলিল, “আমি যে লেখা-পড়া জানি না । ” আমীর বলিলেন, “পাগল আর কি ! লেখা-পড়া জানার আবশ্যক কি ? গালি দিতে জানিস তো ?” গোঁগোঁ বলিল, “ভূতদিগের মধ্যে যে-সকল গালি প্রচলিত আছে, তাহা আমি বিলক্ষণ জানি ।” আমীর বলিলেন, “তবে আর কি ! আবার চাই কি ? এতদিন লোকে মানুষ ধরিয়া সম্পাদক করিতেছিল, কিন্তু মানুষে যা কিছু গালি জানে, মায় অশ্লীল ভাষা পর্যন্ত, সব খরচ হইয়া গিয়াছে ; সব বাসি হইয়া গিয়াছে । এখন দেশশুদ্ধ লোককে ভূতের গালি দিব । আমার অনেক পয়সা হইবে । ” ভৃত বলিল, “তবে কি তুমি গলায় দিয়া মরিবে না ? এঁ যে পাগড়ী ? 2 যে ফাঁস ?” আমীর বলিলেন, “আমি তো আর ক্ষেপে নি যে, গলায় দড়ি দিয়া মরিব । পাগড়ী আর ফাঁস হইতেছে টোপ, ওরে বেটা ! তোরে ধরিবার জন্য টোপ | যদি এ ফন্দি না করিতাম, তাহা হইলে তুই কি গাছের ভিতর হইতে বাহির হইতিস ? এখন চল, ইহার ভিতর প্রবেশ কর । ” এই বলিয়া আমীর তাহাকে চণ্ডুর নলটি দেখাইলেন | ভূত জিজ্ঞাসা করিল, “ও আবার কি ?” আমীর বলিলেন, “ইহার নাম ay, নে, শীঘ ইহার ভিতর প্রবেশ কর ৷” ভূত ইতস্তত করিতেছে দেখিয়া আমীর টেকোটি বাহির করিয়া বলিলেন, “দেখিতেছিস ?” ভূত জিজ্ঞাসা করিল, “ও আবার কি ?” আমীর বলিলেন, ১৮



Leave a Comment