For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)১৪ স্বপন কুমার--২০টি গোয়েন্দা উপন্যাস তা ছাড়া ঈশান মিত্রের দ্বিতীয়া স্ত্রী মায়া দেবী অপূর্ব সুন্দরী। যে কোনও পুরুষকে সম্পূর্ণ বশীভূত
করবার ক্ষমতা তার আছে। তাই দ্বিতীয়া স্ত্রীর প্রতি তার আকর্ষণ প্রথমা স্ত্রীর চেয়েও অনেক বেশি
হবে বলেই তাদের ধারণা। এক্ষেত্রে মায়া দেবীর কোনও সম্ভান হলে সেই মে সমস্ত সম্পত্তির
উত্তরাধিকারী হবে তাও কারও অজানা নয়। শঙ্কর হয়ত পাবে সামান্য একটা অংশ, আর তারা ত
এক কপর্দকও নয়। দীপক দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সত্যি, বিষয়-সম্পত্তি আর টাকাই মানুষের সত্যিকারের প্রবৃত্তির অনেক
উপরে আজ স্থান পেয়েছে। কিন্তু কেন? মানুষের জন্যেই টাকা। টাকার জন্যে ত আর মানুষ নয়! পার্কের দিক থেকে এক ঝলক ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে গেল। আকাশে মেঘের ফাঁকে ফাঁকে চাদের
লুকোচুরি খেলা চলেছে। ডেকে উঠল কোন্ একটা রাতজাগা পাখী। হঠাৎ দীপকের চমক ভাঙল। হলঘরে অতিথিদের কলগুঞ্জন থেমে গেছে। সবাই বোধ হয় ডাইনিং রুমে। সে যে কি করে
এতক্ষণ এভাবে তন্ময় হয়ে ছিল তা নিজেই ভেবে পেল না। হলঘরে প্রযেশ করতেই তার হঠাৎ দেখা হয় মনোরমার সঙ্গে। মনোরমার সঙ্গে আগে দীপকের
সামান্য পরিচয় ছিল। মনোরমা ঈশান মিত্রের প্রথম পক্ষের স্ত্রী বিনতা দেবীর বোন। বিনতা
দেবীর কঠিন অসুখের সংবাদ পেয়ে দু'বছর আগে সে পিতৃগৃহ থেকে এখানে এসেছিল।
তারপর দিদির আকস্মিক মৃত্যু ঘটে যাওয়ায় সে এই পরিবারেই থাকতে বাধ্য হয়। সে অল্পবয়সেই
বিধবা হয়েছিল। তাই fw yas খুব ভাল ব্যবহার পেত না। বরং ঈশান মিত্রের জীর্ণ সংসার-
তরীর হালটা বেশ দৃঢ়মুষ্টিতে ধরেছিল বলে, এ সংসারে তার যথেষ্ট প্রতিপত্তি ছিল। মনোরমা Peers |
তাই শঙ্করকে সে খুবই স্নেহ SAG! মনোরমার CAVITY শঙ্কর কোন দিনই মায়ের অভাব বুঝতে
পারেনি এতটুকুও। মনোরমার এ সংসারে দীর্ঘদিন থাকার আরও একটা কারণ ছিল। এটা অবশ্য দীপক কাণাঘুয়ায়
শগুনেছে--খুব বেশি বিশ্বাস করেনি। ঈশান মিত্রের বড় ভাইপো, অশোকের দাদা অমল নাকি বালরিধবা
মনোরমার প্রতি কিছুটা আসক্ত হয়েছিল। এমন কি, বিধবাবিবাহটা সামাজিক অনুশাসনের দিক থেকে
উচিত কিনা এ নিয়ে সে এককালে যথেষ্ট গবেষণা করেছে। কিন্তু তারপর যে কি কারণে দুজনের
বিবাহটা ঘটে ওঠেনি তা দীপকের অজ্ঞাত মনোরমা দীপককে দেখে কেমন যেন থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। দীপকের এই ধরনের আকরশ্মিক
আবির্ভাব যেন সে ঠিক আশা করেনি। দীপক বলল--মনোরমা দেবী যে! মনোরমা আলতো হাসিতে মুখখানা ভরিয়ে তুলে বলল-- হ্যা, নিচের ডাইনিং রুমে অতিথিরা
সব ভিড় করেছেন, তাই দোতলায় উঠে এলাম। তারপর আপনি যে এখানে? খেতে যাননি কেন?! MAS হেসে বলল-_-আমি ত আপনাদের ঘরের লোক। একসময় খেতে গেলেই হলো। মনোরমা হেসে বলল--কিন্তু তিন বছরের মধ্যে ত এ বাড়িতে পা দেবার সময় পাননি। আমরা
বেঁচে আছি কিনা, সেদিকেও নজর দেবার অবকাশ হয়নি আপনার। আপনি অদ্ভুত লোক কিন্তু দীপক বলল--সত্যি, বাবা মারা যাবার পর আমি কেমন যেন অন্য মানুষ হয়ে গেছি!
কলরব আর হৈ চৈ ত ভাল লাগেই না, বরং কেমন যেন একটা নিরালার দিকেই ঝুঁকে পড়ছে
আমার মন! আর ঠিক সেই জন্যেই অতিথিদের সঙ্গে ডাইনিং রুমে না গিয়ে পাশের ব্যাল্কনিতে
একা দীড়িয়েছিলাম। মনোরমা বলল-_বুঝেছি দীপকবাবু, আপনি আজকাল 'পোয়েট্' হয়ে উঠছেন। দীপক বলল-_ঠিক উল্টো মনোরমা দেবী। আমি হয়ে উঠছি কেমন যেন পেসিমিস্ট। আনন্দ-
কোলাহল-_-বিশেষ করে এ ধরণের সামাজিক ফাংশানকে উপলক্ষ করে যে উচ্ছাস, এ সবের দিকে
আর MICS চায় না আমার মন।