বইয়ের লেখক
বইয়ের আকার
44 MB
মোট পৃষ্ঠা
420
ধরণ
For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)বিভূতিভূষণের কিশোরসাহিত্য বাংলা শিশুসাহিত্যের প্রচলিত ধারায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থান নির্ণয় করা ভারী শক্ত। আমার
ছেলেবেলায় 'রাজর্ষি' ও 'রামের সুমতি”র সঙ্গে আর একটিমাত্র বই পড়বার অনুমতি পেয়েছিলাম মায়ের
কাছে, সে বইটি হল 'পথের পাঁচালী*”। দীর্ঘদিন আমার মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল “পথের পাঁচালী"
শিশুসাহিত্যের অস্তর্গত5, তার আবার শিশুপাঠ্য সংস্করণ হয় কী করে? পরে জেনেছি বয়স্ক ও দশ
পাঠকদের সাহিত্যের আঙিনায় লক্ষ্মণের যে গণ্ডিটি টানা হয়েছে বিভূতিভূষণ বেশিরভাগ সময়েই ত
মনে রাখননি। কেন না তার শিল্পীসত্তার মধ্যে সবসময় লুকিয়ে ছিল একটি কিশোর মন। তিনি ‘alien
সঙ্গে একেবারে তাদের সমবয়সি ইয়ে মিশতে পারতেন এবং তার মধ্যে আরোপিত ছেলেমানুষি মোটেই
থাকত না। সেইজন্য কিশোর পাঠকদের মনের খুব কাছাকাছি পৌছোতে তার একটুও অসুবিধে হয়নি,
নয়তো তার কিশোর পাঠ্য রচনার পরিমাণ যেমন বেশি নয় তেমনই তাদের শুধুমাত্র শিশুসাহিত্যের
মলাটবন্দি করাও সঙ্গত মনে হয় না। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিভূতিভূষণ যখন সাহিত্যক্ষেত্রে এসেছেন তখন বাংলা ——
শৈশব পেরিয়ে গিয়েছে, অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ, যোগীন্দ্রনাথ সরকার, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী,
সুকুমার রায়, দক্ষিণারঞ্জন মজুমদার, সুনির্মল বসু অর্থাৎ শিশুসাহিত্যের দিকপাল লেখকরা সকলেই
এসে গিয়েছেন এবং তাঁদের রচনার সঙ্গে বাঙালি শিশু ও কিশোরদের পরিচয় ঘটেছে। তবুও বিভূতিভূষণ
কিশোরচিত্তে নিজের জন্য একটি স্থায়ী আসন করে নিলেন 'টাদের পাহাড়” প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আযাডভেঞ্চার কাহিনি শিশুসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান। শিশুর মনে কৌতুহল বেশি, কল্পনাও
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কল্পনাকে বাস্তব মোড়কে পুরে দেখার বাসনা তীব্র হয় এবং সেটি আর এক
ধরনের কল্পনা। পরির দেশ কিংবা দৈত্য-দানব-রাক্ষস-খোক্ষস শিশুদের যতটা মুগ্ধ করে কিশোর মনকে
ততটা AR করে না, তারা ভালোবাসে অজানা ভৌতিক-ভয়াল পরিবেশ এবং অচেনাদেশে গিয়ে ভয়ংকর
বিপদের সম্মুখীন হবার গল্প শুনতে | চাদের পাহাড়” ঠিক সেই প্রত্যাশাই পূর্ণ করে। এ উপন্যাসের নায়ক
আ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় যুবক। তার তরুণ তাজা মন পাটকলের বাবু হবার কথা ভাবতেই পারে AI— CATA
ঘোড়া শেষকালে ছ্যাকরাগাড়ি টানতে যাবে? কখনোই নয়। অতএব শুরু হয় আফ্রিকার টাদের পাহাড়ের
গল্প। লীলা মজুমদার লিখেছেন, 'টাদের পাহাড়ের নামটিও মন গড়া নয়, সত্যিকার আফ্রিকার সত্যিকার
পাহাড়ের স্থানীয় নামের অনুবাদ Wal’ অথচ উপন্যাসটির অনুবাদ কিন্তু বিদেশি ছায়ায় লেখা হয়নি।
ছোটোদের জন্য নিছক আ্যাডভেঞ্চার কাহিনি লেখার সময়েও বিভূতিভূষণের সত্যনিষ্ঠা অভূতপূর্ব।
আফ্রিকা যাবার ইচ্ছা তার ছিল, বিচিত্র জগতের জন্য উপাদান সংগ্রহের সময় তার সে বাসনা তীব্র হয়।
আফ্রিকা ভ্রমণকারীদের রচনা Gore খুঁটিয়ে পড়ে তিনি Broa পাহাড়” রচনায় হাত দেন এমনকী
ডিঙ্গোনেক বা বুনিপের কথাও সংগ্রহ করেছিলেন জুলুল্যান্ডের আরণ্য অঞ্চলের প্রচলিত প্রবাদ থেকে।