For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)১২ উনিশ শতকে নারীমুক্তি আন্দোলন ও বাংলা সাহিত্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সবথেকে বেশি নাড়া দিয়েছিল। অথচ দ্বিতীয়ার্ধের এই
অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি সম্বন্ধে গবেষকরা প্রায় নীরব। সেই উপেক্ষার বাধা
অতিক্রম করে এই আন্দোলনের স্বরূপটি আমরা এখানে তুলে ধরেছি এবং লুগুপ্রায়
পত্রপত্রিকা থেকে আমাদের বক্তব্যের সমর্থনে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। ust
নারীক্েন্দ্রিক আন্দোলনের সাহিত্যে প্রতিফলন : এই গ্রন্থে নারীকেন্দ্রিক আন্দোলনের সাহিত্যে প্রতিফলনের ব্যাপারটিও অভিনবত্তের
দাবি রাখে। ইতিপূর্বে নারীকেন্দ্রিক আন্দোলনগুলি নিয়ে যীরা আলোচনা করেছেন সেই
আন্দোলনসমূহের সাহিত্যে প্রতিফলনের দিকটি উপেক্ষাই করে গেছেন। আমরা A
আয়াস স্বীকার করে সমকালীন সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগ, যথা কাব্য, নাটক, উপন্যাস,
প্রবন্ধ ও পত্রপত্রিকার বিভিন্ন রচনায় নারীকেন্দ্রিক আন্দোলনের প্রতিফলন দেখিয়েছি।
প্রসঙ্গত বলে রাখছি যে, যে সমস্ত গ্রহকে এখানে নাটক বলে উল্লেখ করেছি, তাদের
অধিকাংশই নাটক নয়, লঘু প্রহসন মাত্র। আবার, কেবল রসের দিক দিয়েই যে প্রহসন
তাও নয়। আকারের দিক থেকেও অধিকাংশ রচনাই সাধারণ প্রহসনের আকৃতি থেকেও
ক্ষুদ্র। সুতরাং এদের নিতান্ত শিথিলভাবে নাটক বলে উল্লেখ করা যেতে পারে। একথাও
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, নাটকের মাধ্যমে সমস্যাগুলির বাস্তব পরিচয় যত অস্পষ্ট
হোক, এদের রাপায়ণে সাহিত্য শিল্পের দাবি অনেকখানি পূরণ হয়েছে। সামাজিক উপন্যাস
ও সামাজিক নাটকের প্রকৃতিগত এ পার্থক্যও চোখে পড়বে। ইতিহাসকেন্দ্রিক গবেষণায় অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা শেষ কথা বলে কিছু নেই।
আমরা যেমন নতুন তথ্যের ভিত্তিতে প্রচলিত অনেক সিদ্ধান্তকে wer করেছি, ঠিক
তেমনি নতুনতর তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের কোনও কোনও সিদ্ধান্ত যে ভবিষ্যতে খণ্ডিত
হবে না এমন অনড় দাবি আমাদের নেই। তবে একথা ঠিক, বর্তমান নারীসমাজ যে সবদিক দিয়ে এগিয়ে চলেছে এর ইতিহাস
জানতে হলে বিগত শতকের নারীকেন্দ্রিক আন্দোলনের পুঞ্খানুপুস্খ ইতিহাস ও সমকালীন
সমাজমনের পরিচয় সমগ্রভাবে জানার একান্ত প্রয়োজন, যা আমি এই গ্রন্থে তুলে ধরেছি। বর্তমান পণপ্রথার বিভীষিকা থেকে নারীসমাজকে কিভাবে উদ্ধার করা যায় এ প্রশ্ন
আজ আমাদের সকলের। আমার আলোচনা তার পথ দেখাবে। ভবিষ্যৎ নারীসমাজের
অগ্রগতির আরও নতুন নতুন পথ আবিষ্কারে সহায়ক হবে। বর্তমান মুসলিম সমাজে
নারীর অধিকারের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন চলছে, আমার গ্রন্থটে তাকে শক্তিশালী
করবে। বিগত শতকে পুরুষশাসিত সমাজে নারী নির্যাতনের চিত্র দেখে বর্তমান
সভ্যসমাজ ঘৃণায় তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করবে। পুরুষ সমাজের চোখ ফুটবে।
হয়তো নিজেদের কুকর্ম দেখে লজ্জা পেয়ে পণপ্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। AST
উপশম হবে। এককথায় গ্রন্থটি সম্পূর্ণ যুগোপযোগী। সমাজের সাধারণ মানুষের স্বার্থ ছাড়া গ্রহটি বাংলা অনার্স ও এম.এ ছাত্র-ছাত্রীদের
কাব্য, নাটক, উপন্যাস ও প্রবন্ধ-এককথায় সাহিত্য-আলোচনায় বিশেষ সহায়ক হবে।
আগামী দিনের গবেষকরাও নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন মূল্যবান তথ্যের সন্ধান পাবেন, যা আমি
লুগুপ্রায় পত্রপত্রিকা থেকে উদ্ধার করেছি। পাঠক-পাঠিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের কাছে
বিগত শতকের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরার এটি এক বিনীত প্রয়াস।