আধুনিক ইয়োরোপের ইতিহাস (১৭৮৯-১৯৩৯) | Adhunik Europer Itihas (1789-1939)

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
৪ আধুনিক ইয়োরোপের ইতিহাস তবে কবে থেকে আধুনিক যুগ শুরু হয়েছে এবং কীভাবে শুরু হয়েছে বা বিবর্তন- প্রক্রিয়ার নানা স্তর কেমন, তা নিয়ে এঁতিহাসিকদের মধ্যে নানা বিতর্ক আছে। আগেই দেখেছি যে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ, এই যুগ পরিবর্তন প্রতি দেশে বা মহাদেশে পৃথক ঘটনা, যেমন ইয়োরোপে ও ভারতে তা সম্পূর্ণ আলাদা। আবার একথাও মনে রাখা দরকার যে, ইয়োরোপে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণ পর্বের প্রেক্ষাপট ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রব্যবস্থা; অথচ আফ্রিকা বা এশিয়ার অনেক দেশেই. এই পরিবর্তন ঘটেছিল পরাধীন ও গুপনিবেশিক (Colonial) রাষ্ট্রব্যবস্থায়। আমাদের বর্তমান আলোচ্য বিষয় হল ইয়োরোপের ইতিহাস। সুতরাং অন্য দেশ বা মহাদেশ বাদ দিয়ে শুধু ইয়োরোপের দিকেই দৃষ্টি দেওয়া যেতে পারে। প্রথমতঃ, ইয়োরোপেও মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে পরিবর্তন একদিনে হয়নি। এটা ঘটেছিল এক ব্যাপক পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অর্থাৎ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন। এই বিবর্তন ছিল ব্যাপক অর্থাৎ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সবদিক থেকে। দ্বিতীয়তঃ, নানা ঘটনার ঘাত প্রতিঘাতে এবং ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ফলে মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা, সমাজ ও মূল্যবোধ ভেঙে যেতে থাকলেও অতীত-এঁতিহ্য সর্বাশে লুপ্ত হয়ে যায়নি। তাই আজকাল সমাজবিজ্ঞানীগণ পরিবর্তন ও এঁতিহ্যের পরম্পরা (Changes and continuities) কথাগুলি আধুনিকতার (Modernity) ক্ষেতে ব্যবহার করেন। যাই হোক, মধ্যযুগের ইতিহাসের ধারা থেকে আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে পদার্পণের সবচাইতে বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো মধ্যযুগের সামস্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, জীবন আদর্শে ও অর্থনীতিতে ভাঙন এবং সামস্ততন্ত্র থেকে ধনতন্ত্র বা পুঁজিবাদে উত্তরণ (Transition from Feudalism to Capitalism) | সামস্ততন্ত্রের GAs মধ্যযুগের ইয়োরোপের সর্বাপেক্ষা বড়ো বৈশিষ্ট্য ছিল WIS (Feudalism) | যদিও এই প্রথার সংজ্ঞা, তার নানা দিক, বৈশিষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এবং এই প্রথার উৎপাদন পদ্ধতি ও অর্থনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ এবং পরিসর এখানে নেই তবু সামস্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে OTA কথা জেনে নেওয়া দরকার। নতুবা কি ভাবে ধীরে ধীরে এই সমাজব্যবস্থা ভেঙে যেতে শুরু করল এবং শেষ পর্যন্ত নতুন যুগের সূচনা হলো তা বোঝা যাবে না। ত্রিস্তর বিশিষ্ট এই ব্যবস্থার শীর্ষে ছিলেন রাজন্যবর্গ যাদের বেশির ভাগই ছিলেন নিষ্ক্রিয়, PIO এবং বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত | মধ্যস্তরে ছিলেন সামস্তপ্রভুর দল যাদের রাজারা রাজ্যের জমি চাষ-আবাদ করতে দিয়েছিলেন। সামস্তপ্রভু বা 'ব্যারন”গণ রাজন্যবর্গকে সৈন্য এবং অর্থ সরবরাহ করত। তৃতীয় স্তরে বা সমাজের সবচেয়ে নিচে ছিলেন কৃষক সম্প্রদায়। এই Fact] সামস্তপ্রভুদের জমি চাষ করত এবং এদের একমাত্র সম্বল ছিল কায়িক শ্রম। আবার অনেকক্ষেত্রে সামস্ত প্রভুরা নিজেদের অধস্তন ভুস্বামীবর্গকে জমির চাষ আবাদের ভার দিতেন, যারা নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য



Leave a Comment