বঙ্কিমচন্দ্রের চন্দ্রশেখর | Bankimchandrer Chandrashekhar

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১০ বন্কিমচন্দ্রের চন্দ্রশেখর আকাঙ্ক্ষা, তার তাপসী মূর্তিখানি বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি; কিন্তু কপালকুণ্ডলা বিবাহ কাকে বলে, তাই জানেন না, গৃহিণীপদের পূর্ণ অধিকার লাভের সুযোগ সত্ত্বেও উদাসীনা; কপালকুগুলা স্বভাব-যোগিনী। শেক্সপিয়রের মিরাগুর চেয়েও কপালকুণ্ুডলা ভিন্ন; অরণ্যদ্বীপ-লালিতা মিরাণ্ডার ‘Petious heart’ ও ‘Virtue of compassion’-4 ACK কপালকুগুলার সাদৃশ্য থাকলেও কপালকুগুলার বনোম্মত্ততা মিরাণ্ডায় অনুপস্থিত। কপালকুগুলার ভক্তিভাববিমোহত্ত faery নেই। মিরাগ্ডা প্রেম ও স্বামী সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু মৃন্ময়ী প্রেমসংস্কারবর্জিতা, স্বামীকে তিনি হৃদয়ে দেখতে পাননি। বন্কিমচন্দ্রের নিয়তিবাদও সম্পূর্ণ শেক্সপিয়রীয় নিয়তিবাদ নয়, তার সঙ্গে এসিয়াটিক প্রাচ্য অদৃষ্টবাদের মিশ্রণ আছে (নিয়তি কেন বাধ্যতে)। মীরকাশিম ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বন্দ্বের পটভূমিকায় স্থাপিত হলেও “চন্দ্রশেখর (১৮৭৫)-এর মূল কাহিনি সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। প্রতাপ-শৈবলিনীর আকর্ষণ এবং শৈবলিনীর স্বামী চন্দ্রশেখরের আদর্শ চরিত্র এই উপন্যাসের প্রধান বিষয়। বন্কিমচন্দ্রের 'রাজসিংহ'ই (১৮৮২) একমাত্র বিশুদ্ধ এতিহাসিক উপন্যাস | কারণ এর কাহিনি ও প্রধান চরিত্রগুলি এঁতিহাসিক। রাজস্থানের চঞ্চলকুমারীকে ওরঙ্গজেবের বিবাহের ইচ্ছা এবং তা থেকে রাণা রাজসিংহের জয়লাভ এবং চঞ্চলকুমারীর সঙ্গে বিবাহ এই মূল ঘটনা ইতিহাস অনুমোদিত। এই কাহিনির সঙ্গে তিনি জেবুমিসা-মবারক-দরিয়া বিবির একটি কাল্পনিক উপকাহিনিও চিত্রিত করেছেন। Corgis চরিত্র এক অপরূপ সৃষ্টি | FSA (১৮৮৭) তার সর্বশেষ উপন্যাস। এতে সামান্য এঁতিহাসিক কাহিনি ও পটভূমিকা থাকলেও এঁতিহাসিক চরিত্রে কল্পনার আতিশয্য বড় বেশি দেখ! যায়। রূপের মোহ (শ্রী তুমি এতই সুন্দরী) চরিত্রবান পুরুষকে কতদূর সর্বনাশ করতে পারে এ উপন্যাসে তা দেখানো হয়েছে। সুকুমার সেন বলেছেন, “গল্পরস সুনির্দিষ্ট দেশকালের আধারে (আধুনিক বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় “স্পেস টাইম-কন্টেক্সট'-এ) পরিবেশিত হলেই উপন্যাসকে বলব এঁতিহাসিক. তা না হলে নয়।” তাহলে বন্কিমের আটখানা উপন্যাসকেই এঁতিহাসিক উপন্যাস বলতে পারি। আচার্য যদুনাথ সরকারের সমর্থনও তাতে আছে। কিন্তু এসব গ্রন্থের অনেক ক্ষেত্রেই মনে হয়, ইতিহাসকে SAG করা বা ইতিহাস রসকে আয়ত্ত করা বন্কিমের মুখ্য প্রয়াস নয়। ইতিহাস কখনো বা গৌণ, কদাচিৎ তার বিশিষ্ট অবলম্বন। আসলে বন্কিমের উপন্যাসকে Aeris, পারিবারিক বা SES বলে ভাগ করাটা একটা বাহ ব্যাপার। বন্কিমের এতিহাসিক রোমান্স বা রোমান্টিক রচনার কথাটাও বুঝবার মতো। 'কপালকুগুলা”র মতো উপন্যাসে ইতিহাসের যোগাযোগটা তুচ্ছ; তাকে এঁতিহাসিক বলা ঠিক AT | এতিহাসিক রোমান্সও তা AT | কেবল অতীতের কেন, কপালকুগুলা সর্বকালের জগতের রোমান্স। জগৎ ও জীবনের শাশ্বত রহস্যের কবি কল্পনায় রূপায়িত কথা।



Leave a Comment