For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)১৮/আশুতোষ মুখোপাধ্যায় দেখি, এই মানুষ আমার শেষ ছাপা কবিতার বইটা দুখানা করে ছিঁড়ে নিয়ে তাই জ্বালিয়ে মেয়ের দুধ
গরম করছে! আমি কি করেছিলাম সে-প্রসঙ্গ এটা নয়। আমি শুধু ভাবছি, এই লোকই আবার আমাকে লেখার
জন্য অনুনয় করছে, লিখে নাম-ডাক হোক আমার চাইছে। মাঝের এই Sd বছর কি সত্যি নয়?
সে-কি একটা দুঃস্বপ্ন? কোনো ছোটো পরিসরের মধ্যে নিজেকে যেন আর ধরে রাখা যাচ্চিল না। ছাদে চলে এলাম।
এখানে আলোছায়ার মিতালি। মাথার ওপর তারা-ভরা আকাশ। ওরা যেন কৌতুক-ভরে আমাকেই
লক্ষ করছে। লিখতে তো পারি। বলতে গেলে চোদ্দ থেকে উনত্রিশ--এই একটানা পনের-যোলটা বছর এই নেশার ঘোর কোনো
নেশার থেকে কম ছিল না। স্কুলে লিখেছি, কলেজে লিখেছি। সে-সব লেখা নিয়ে মেয়েদের থেকে
ছেলেরাই বেশি হৈ চৈ করেছে। আর, কলেজ থেকে বেরিয়ে আসার পরেও ছাই -ভস্ম যা-ই লিখেছি,
তাতেও আমার চেনা-মহলে GBS নিন্দার থেকে প্রশংসাই বেশি হয়েছে। বলা বাহুল্য, সেও একরকম
পুরুষের মহলই। একান্ত শুভার্থীজনের আনুকুল্যে বিয়ের আগেই আমার একখানা কবিতার বই আর
একখানা গল্পের বই ছাপা হয়ে গেছল। বিয়ের পর আরো একটা কবিতার বই এবং একখানা গল্পের
বই। সে সবের এক-তৃতীয়াংশ উপহারে নিঃশেষ হয়েছে। তবু, স্বভাবতই তখন লেখার ক্ষেত্র বিস্তৃত
করার দিকে CH আমার। একটু সুযোগ আর সহানুভূতি পেলে সেটা যে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত
হতে পারে, সে-বিশ্বাস প্রায়-বদ্ধমূল। ...সব আশা সব আকাঙ্ক্ষা, সকল বিশ্বাস আর সকল নির্ভরতা ভেঙে গুঁড়িয়ে তচনচ হয়ে স্রোতের
মুখে কুটোর মতো ভেসে গেছে। উৎসাহ আর উদ্দীপনা জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গেছে যে, সেটা অভিশাপ না আশীর্বাদ? ওই ভস্মস্তৃূপই যে জীবনের শেষ কথা নয় সে আর আজ আমার থেকে ভালো কে জানে? তাই, এই রাতে লেখার জন্য এমন অদ্ভূত নির্ভেজাল তাগিদ পাওয়ার পর থেকে থেকে কেবলই
মনে হচ্ছে, লিখতে পারি। আগে কখনো পারিনি, পারতুম না। আজ পারি। কিন্তু সে-লেখা সাহিত্য হবে না প্রায়শ্চিত্ত হবে? ...ভাবছি। শক্তি সংগ্রহ করতে চেষ্টা করছি।...সাহিত্য কী জীবন ছাড়া? জীবনে আলো আছে
CRA আছে, সুন্দর আছে, কুৎসিত আছে। সেই আলো-অন্ধকার সুন্দর-কুৃৎসিতের ভিতর থেকেই
যদি জীবন-সোনা ঝালিয়ে নিতে পেরে থাকি নাম তার যাই হোক, সে-বারতা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া
যাবে না কেন? একটা আলগা লজ্জা আর সঙ্কোচ চারদিক থেকে ছেঁকে ধরছে। লেখার এই চেষ্টাটা নিজেকে
অনাবৃত করে দেবার মতোই যেন। তবু ভেতর থেকে কে বলছে, এই লজ্জা আর সঙ্কোচও বেড়ে
ফেলে দেওয়া অসম্ভব নয় একেবারে | কারণ, আমি যা হতে পারতুষ্কু,তা হইনি। আমার কাহিনি বলুন, গল্প বলুন, এটুকুই সব। এটুকুই শেষ। দুই আমি রূপসী নই। বোনেদের মধ্যে আমারই গায়ের রং মাজা। তিন বোন আমরা। আমাদের পরে দাদা। দাদার নাম
চঞ্চল। নামের সঙ্গে স্বভাবের মিল। স্বভাব দেখেই ঠাকুমা ওই নাম রেখেছিল শুনেছি। সকলের বড়ো হলেও ছেলেবেলা থেকেই দাদাকে আমরা ছেলেমানুষ ভাঁবতুম। বাবা বলত ওর
প্র কোনোকালে হবে না। বাবার কথার ঝুঁড়ি ঝুড়ি নজির আমরা অনেক কাল ধরে দেখে
আসছি।