জনপদবধূ এবং অন্যান্য উপন্যাস | Janapadabadhu Ebang Annyanya Upanyas

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
দোদুল্যমান দীর্ঘ বেণীর মূলে ফুলের মালা জড়ানো, জরির কাজ করা ময়ূরকঠী রঙের চোলির রবিকা বা ব্লাউজের বদ্ধনীতে সুশোভিত তার বক্ষসম্পদ। একটু হলদে ধরনের ফরসা ওর দেহের বর্ণ, নাসিকার গঠনও হয়ত খুব Sh aT কিন্তু কৃষ্ঞকলি ফুলের কুঁড়ি সদ্য ফুটলে যেমন দেখতে লাগে, তেমনি স্ফুরিত ওর রক্তিম অধর, আর পরম আশ্চর্য যদি কিছু থাকে তো, সে ওর ঘনপন্ম টানা-টানা দুটি ভাবময় চোখ। আমার দিকে ভীরু পাখির মতোই মুহূর্তকাল তাকিয়েছিল সে। তারপরে নিমীলিত চোখে হাতের ডালাটি নিয়ে আমার কাছে এসে দাঁড়াল । পায়ের কাছে রাখল সেই ডালা। আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে ডান হাতে তুলে নিল প্রদীপখানি। বাঁ হাত ডান হাতের বাজুতে ছুঁইয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বরণ করতে লাগল আমাকে | প্রথমে প্রদীপ, তারপরে ছোট্ট একটা মাটির ঘট। এর পরে দু-এক বিন্দু জল ছিটিয়ে দিল আমার ওপরে, ছিটিয়ে দিল নিজের GATAG | তারপরে ডালাটি মাটিতে রেখে উঠে দাঁড়াল, হাতের ইশারায় বললে লাল পশমের আসনটিতে বসতে | নিদারুণ কৌতুহল নিয়েই এতক্ষণ নিশ্চুপে লক্ষ্য করে চলেছিলাম ওর কার্যকলাপ, এবারে আর থাকতে পারলাম না, ভাঙা ভাঙা ওদেরই ভাষায় বলে উঠলাম, যদি না শুনি তোমার কথা? উল্লাসের দ্যুতিতে ঝলমল করে উঠল দুটি চোখ, বিস্মিত ভঙ্গিমায় একখানা হাত আরক্তিম কপালের ওপর Baa রেখে বলে উঠল, কী আশ্চর্য! জানেন আপনি আমাদের SA? কিছু কিছু জানি। অনেকদিন আছেন বুঝি আমাদের দেশে? তা আছি। ভারি কোমল, সরু আর সূরেলা ওর কণ্ঠস্বর, বলার ভঙ্গিও মৃদু, বললে, বসবেন না এসে আসনে? না। ধীরে ধীরে একেবারে কাছে এসে দাঁড়াল, তারপরে প্রায় অস্ফুট স্বরেই বলে উঠল, না বলতে নেই। আমার কথা আজ শুনতে হয়। আমার ঘরে এসেছেন, আমার রাজত্বে এসেছেন, আর আমার-কথা শুনবেন না? ডালাটির দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে অসহিষুণ কণ্ঠেই বলে উঠলাম, কিন্তু এসব কী? একটু ঝুঁকে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে অল্প একটু হাসল, বললে, এসব অনুষ্ঠান আমাদের করতে হয়। কেন? ধীরে ধীরে তার করপল্লব স্পর্শ করল আমার বাছমূল, কিন্তু মুহূর্তকাল মাত্র। সে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কোমল গলায় বলতে লাগল, মানুষ তো মানুষের অস্তরটা দেখাতে পারে না, তাই কতগুলি প্রতীক দিয়ে তার ভিতরের ভাবটি সে প্রকাশ করে। মানে! অল্প একটু হাসল সে, বললে, এই যে ডালার ছোট্ট দীপটি জ্বলছে, যা দিয়ে আপনাকে ১২



Leave a Comment