নিশি রাত বাঁকা চাঁদ | Nishi Raat Banka Chand

শিল্পীদের ক্ষেত্রে অস্তত অনুরোধের আসর ছিল একটা মঞ্চ। নতুন গান রিলিজ হওয়ার পর হয়তো একটা অগ্নিপরীক্ষাও। পুজোর মাস দেড়েক আগে থেকে আসরটি সাজত নতুন নতুন গানের মালায়, গানই হত গানের বিজ্ঞাপন। নিলামে দর দেবার মতো একেকটা ডাক পড়ত গানের পরে পরে। অর্থাৎ ওই ব্যক্তির ওই গান চাই। এরকম এক ডাক তুলেছিল আমার ছেলেবেলার দুই বন্ধু, দুই ভাই, ভোম্বল আর ক্যান্টা। সদ্য পিতৃবিয়োগ হয়েছে ওদের, ওরা কলকাতা ছেড়ে চলে যাবে আসামে ধনী আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পড়াশুনো করবে বলে। সঙ্গে ওরা নিয়ে যেতে চায় শুধু একটি ৭৮ আরপিএম ডিস্ক। সদ্য ওই গানটি বেজেছে অনুরোধের আসরে। যাবার দিন দুপুরে ওদের বড়দা রেকর্ডটা কিনে এনে তুলে দিল ওদের মায়ের হাতে । আমি আর আমার দুই দিদি গিয়েছি ছেলেদের চোখের জলে বিদায় দিতে। সমানে শাড়ির খুঁটে চোখের জল মুছতে মুছতে মাসিমা রেকর্ড চাপিয়ে দিলেন হাতে- ঘোরানো গ্রামোফোনের টার্নটেবিলে। তারপর রেকর্ডের আগায় ইস্পাতের পিন ঘষা খেতেই বেজে উঠল পান্নালাল ভট্টাচার্যের অমর, অতুলনীয় কণ্ঠে সর্বকালের এক শ্রেষ্ঠ বাংলা গান, 'আমার সাধ না মিটিল, আশা না পুরিল, সকলি ফুরায়ে যায় WM! এত দুঃখ ও কান্নার সঙ্গে মিশে গানটা আমার জীবনে এসেছিল যে অনুভূতির আক্রমণের বাইরে দীড়িয়ে খোলা দৃষ্টিতে গানটিকে বিচার করতে আমার অনেক সময় লেগে গিয়েছিল। ক্রমে দুপুরের স্মৃতি কাটিয়ে যখন 'আমার সাধ না মিটিল”-কে উপভোগ Paces অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি তখন একদিন খবরের কাগজে পড়লাম পান্নালালের আত্মহত্যার খবর। এখনও চোখে ভাসে পান্নালালের Cle অতি সাধারণ, সিঙ্গল কলাম ছবিটা। সেদিন থেকে যখনই অনুরোধের আসর চালিয়েছি হৃদয়ের কোথায়, অস্তঃস্তলে একটা BS থেকে গেছে, 'আহা, যদি পান্নালালের একটা গান বাজে! গোটা অনুরোধের আসরই ছিল মধ্যবিত্ত বাঙালির গভীর আর্তির ধ্বনিমূর্তি, ধবনিরূপায়ণ। পঞ্চাশ ও যাটের দশকের কিশোর, সদ্যযুবা, যুবক ও মধ্যবয়স্কদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য ছিলেন হেমন্ত, ধনঞ্জয়, মান্না, শ্যামল, WAH, সতীনাথ, সুবীর, তরুণ, দ্বিজেন; বিশেষ বিশেষ মনোভাবের মানুষের জন্য অখিলবন্ধু এবং সমস্ত রোমান্টিক বাঙালির জন্য তালাত মাহমুদ ওরফে তপনকুমার। বাঙালি মেয়েদের জন্য সে দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন সন্ধ্যা, লতা, গীতা, প্রতিমা, FAS, উৎপলা, আলপনা, গায়ত্রী, নির্মলা, বাণী, ইলা, বনশ্রী ও পরের দিকে ahs | আমার এক বন্ধু অরুণ তার বান্ধবীকে গান শোনাত অনুরোধের আসরে মানবেদ্দ্রর গানের মাধ্যমে। পরে Marcas ১৮