পঞ্চাশটি গল্প | Panchashti Galpa

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
cK. Sel দোক্কা খেলা বাড়িটা এমন ছিল না তখন। টিনের ছাদ, পাকা দেয়াল, চুনকামের রং রোদে-জলে ধোওয়া। এখানে ওখানে পলেস্তারায় সময়ের আঁচড় লেগেছিল। বছর দুয়েক আগে অলোকেশ ওর বিমা কোম্পানির অফিস থেকে লোন নিযে POTS মেরামতিতে হাত দিয়েছিল। কিন্তু মেরামতি করতে গিয়ে বাড়ির খোলনলচেই পালটে গেল। ইট এল, সিমেন্ট এল, লোহালক্কড় মিস্ত্রি কুলি সবই এল। টিনের ছাদের বদলে কংক্রিটের ছাদ হল, সামনে একটা ঘর বাড়ানো হল, পুরনো পলেস্তারা উঠিয়ে নতুন করা হল। আগে দেয়ালে শুধু সাদা রং ছিল, এবার বাইরে গোলাপি রং আর ভেতরে হালকা সবুজ ডিসটেম্পার করা হল। পুরনো বাড়ি একেবারে নতুন হয়ে গেল। খুশির ব্যাপার হলেও, স্মৃতিজীবী মানুষের যা হয়, মণিশঙ্করের মনের গভীরে কোথায় এক দীর্ঘ নিশ্বাস আটকে রইল। পুরনো বাড়ির সঙ্গে অলোকেশের মায়ের যোগসূত্রটা খুঁজতে চেয়েছিলেন তিনি। এ-বাড়িতে রেণু রেণু হয়ে মিশে আছে অলোকেশের মায়ের সাধআহ্লা্দ, স্মেহমমতা। এ-বাড়ি থেকেই একদিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল SAA, আর ফিরে আসা হয়নি। কিন্তু অলোকেশকে কেউ পিছন থেকে টেনে রাখেনি, সামান্য ইটপাথর মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা- ভালবাসার প্রতীক হয়ে থাকেনি। যদিও অলোকেশ কিংবা অলোকেশের বউ নমিতা কিংবা অলোকেশের সাত বছরের মেয়ে বুলার মতো নতুন করে বানানো AG তাকেও সুখী করেছিল, তবুও aaa মনে হয়েছিল পুরনো বাড়ির সঙ্গে কী যেন চলে যাচ্ছে, U কোনওদিনই ফিরে পাবেন না তিনি। এমন একটা সময়, যখন OTA বয়েস টানে, কিন মন ছোটে উজানে। সেইসময় সব আনন্দের মধ্যে কোথায় যেন একটা নরম দুঃখ তিরতির করে ফেলে-আসা জীবনের জন্যে। তবু ছেলের সংসারের সুখ সচ্ছলতা তাকে স্বস্তি দিয়েছিল, নতুন বাড়ি করার জন্যে ছেলেকে উৎসাহ দিয়েছেন, নিজে পাড়িয়ে থেকে নানান পরামর্শ দিয়েছেন, মিস্ত্রিবে: বলেছেন এটা করো ওটা করো। বাড়ি শেষ হলে নতুন রং হল, WAG! জানলায় নতুন পরদা এল, তারপর যেদিন অলোকেশ ছোট্ট কাঠের বোর্ডে বাড়ির নাম লিখে এনে বাইরের দেয়ালে পেরেক মেরে ঝুলিয়ে দিল-_ সেদিন নতুন আর পুরনো দু'দিকের দুটো সময় মিলিয়ে নিতে পেরে ভাল লেগেছিল Gia বাড়ির নাম-_ শাস্তি কুটির। অলোকেশের মায়ের নাম ছিল শাস্তিলতা। তার নামেই বাড়ির নাম। আবার জলপাইগুড়ি শহরের এক প্রান্তে শাস্ত নিরিবিলি পরিবেশে এ-বাড়িতে ছিমছাম শাস্তিও ছিল, তাই সেদিক থেকেও এ নামকরণও ভাল লেগেছিল। পুরনো বাড়ির শাস্তিলতা নতুন বাড়িতে জড়িয়ে রইলেন অন্য কোনওভাবে। কিন্তু আজ এ-সময় যখন বিকেলের আলো ধূসর হয়ে আসছে, বাড়ির বারান্দায় বেতের চেয়ারে শিথিল শরীরে বসে থেকে যখন তার অনেক কথা মনে পড়ছিল, সামনের বেড়া দেওয়া এক টুকরো সবুজ মাঠে বুল! যখন একা একা খেলছিল, যখন ডানা মেলে পাখিরা দূরে উড়ে যাচ্ছিল, তখন তীর ঠোটের কোনায় কান্নার হাসি স্থির হয়ে রইল। শাস্তি কূটিরের নাম পরবর্তীকালে একটা দুঃখের ঠাট্টা হয়ে গেছে। PROTA GIA সবই আছে, শুধু নামটাই নিরর্থক হয়ে গেছে। বুলা খেলছে। খেলার নাম সম্ভবত এক্কা দোক্কা। একা একা আপন মনে কী খেলে কে জানে। মণিশঙ্কর সেই খেলার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু খেলাও দেখছিলেন না, বুলাকেও না। আসলে তিনি তখন খেলছিলেন বুলার মতোই কোনও থখেলা। অনেক দূরের কোনও অন্ধকার মাঠে একা b



Leave a Comment