স্রোতের বিপরীতে জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী | Sroter Biparite Jyotirindra Nandi

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
আদতে জ্যোতিরিন্দ্রের জন্ম প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দু'বছর আগে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সেক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতার পুঁজি ছিল দুটি বিশ্বযুদ্ধ, অসহযোগ আন্দোলন ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি। এমনতর প্রেক্ষিতে সমাজের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বা বিত্তহীন মানুষের চেতনা ও মূল্যবোধ, মূল্যবোধের অবক্ষয় রিক্ত নিঃসঙ্গ প্রকৃতি, প্রেম-অপ্রেম-যৌনতা চিত্রণ জোতিরিন্দ্রের কলমে এক স্মরণীয় উদ্ধার। বলেছিলাম জনি দখলের কথা। এক চিলতে জমির জন্য কিংবা ছোট্ট একটু মাথা গৌজার ঠাই বা বাসস্থান এবং সামান্যতম পরিধান ও ক্ষুম্নিবৃত্তির জন্য আমরা লড়াইয়ে সামিল হই। এ তো গেল স্বাভাবিক প্রবৃত্তিজাত লড়াই । আরো এক জাতের লড়াই আছে যা পরিকল্পনাপ্রসূত। রাষ্ট্রনায়ক এবং ধুরন্ধর কূটনীতিকদের ক্ষমতা দখলের লড়াই । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এদেশে গণআন্দোলনের প্রথম পর্ব শেষ হয়েছিল, কিন্তু পরস্পর যুযুধান দুই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সংঘাত অনিবার্য করে তুলেছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। অর্থ এবং মনুষ্যত্বের সার্বিক অভাব বা অনটনের বাজার তাই দুই মহাযুদ্ধের pores ফসল। এই বাজারে মানুষেরই হাটে পণ্য হয় মানুষ। দেশভাগের বিক্ষত বুকে বাস্তহারার দল এক টুকেরো জমির আশায়, সামান্যতম আশ্রয় ও আহার্যের জন্য হারাতে থাকে প্রেম-ভালবাসা- স্নেহ মমতা-প্রীতি সংস্পর্শের সবুজ জমি। সেই হৃতসর্বস্ব মানুষের বা মনুয্যেতর প্রাণীগুলির জীবনের হলুদ বিবর্ণতা শেষ পর্যন্ত দখল করতে সমর্থ হয় জ্যোতিরিন্দের সাহিত্যভূমি। তাই 'ক্ষয়িষ্ণ-সময়ের সার্থক কথাকার জ্যোতিরিন্দ্র'- এমন এক আপাত অভিধায় চিহ্নিত করা যায় তাঁকে। অমাবস্যার আকাশে চাদের উদয় সহসা হয় না। হলেও সকলের দৃষ্টিপথে পড়ে না তা। আবার, যা কিছু দৃষ্টিগোচর তার সবটাই সত্য নয় হয়তো। পূর্ণিমা-দিনের সাদা ফটফটে জ্যোৎস্নার অবিরাম গুণকীর্তনেও একঘেয়েমি আসে। কেননা চাদেরও কলঙ্ক আছে। শতধাবিকীর্ণ আলোর আড়ালে সেই সত্যটা যে না দেখেছে-_ তার WBS দৈন্য ঢাকা থাকে না শুরুপক্ষের GNSS | দেশ-কাল-প্রকৃতির প্রতি এই পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টিপাতই বিজ্ঞানমনস্কতা। বিশ শতকে বিজ্ঞানের জয়ধ্বনিতে মানুষের শক্তি যেমন অবহেলিত হয়েছিল, তেমনই মানুষকে এক সুদূরপ্রসারী চেতনলোকে পৌছে দিয়েছিল এই বিজ্ঞানই। বড় নির্মম এবং নিরাবেগ অভিঘাতে হাট করে খুলে দিয়েছিল তার বহির্বিশ্ব এবং অস্তর্বিশ্বের দরজা। হয়তো সেক্ষেত্রে মানুষের দেখার জগৎকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল বৌদ্ধিক যুক্তিবাদ। গ্রাস করেছিল সৃষ্ষ্মাতিসূক্ম্ম কোমল হৃদয়বৃত্তিগুলি। তমসাচ্ছন্ন সেই গ্রহণকালের লিপি উদ্ধারে কে কতখানি সফল হলেন তার থেকেও বড় কথা কে কীভাবে এই সময়কে ধরলেন। বস্তুতপক্ষে সময়ের সঙ্গে যুক্ত থেকেও সময়ের দাসত্ব করা কোনো অ্রষ্টার কাজ va | সাহিত্যের পূর্ণকুন্তে তার যাত্রা অব্যাহত অনির্দিষ্টকালের জন্য। তাই একটি বিলম্বিত নিকষ কালো রাত প্রদক্ষিণ করে অলৌকিক কোনো ভোরের প্রতীক্ষাই তার নিয়তি। তাই বাঁধা সময়ের নিছক আনুগত্য নয়। মামুলি সাদাকালো রেখায় সময় বিভাজন নয়। বিচিত্র রঙ ও রসের ANN, অস্তহীন সময়ের সঙ্গে আপোসহীন খেলাই পূর্ণতা দান জ্যোতিরিন্দ্র : সময় অসময় ১৭ Grices বিপরীতে ২



Leave a Comment