বাঙ্গলা সাহিত্যের ইতিহাস [খণ্ড-২] | Bangala Sahityer Itihas [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
৬ বাঙ্গালা সাহিতোযেব ইতিহাস আরবী অথবা তুর্কী) প্রতিশব্দ (যা আগেই বিকল্পরূপে চলিত হইয়াছিল) প্রতষ্টিত হইল | যেমন,-_ হাওয়া, বাতাস “বা”, “বাই” স্থানে)* , লাল “বাতা” স্থানে) ; শিকাব, শিকাবী (“আহের”, “আহেবি” স্থানে); চাকব “নাড়া” স্থানে); ঠাকুব “গোসাই” স্থানে) , মোহব “মুদো” স্থানে); সিপাই (“পাইক” স্থানে) , জমি (“ভুঁই” স্থানে); মজুব, মজুবিযা বেরুনিয়া” স্থানে); বেগার “বেটা” স্থানে), ইত্যাদি 1 বেশ কিছু এমন ফাবসী শব্দও নেওয়া হইল যেগুলিব কোন প্রতিশব্দ বাঙ্গালায ছিল না | যেমন, আইন-কানুন, ফসল, মাহিনা, জামা, মোজা, বন্দুক, কাগজ, হিসাব, ইত্যাদি 1. অনেকগুলি নূতন Twa সঙ্গে সঙ্গে সেইসব বস্তুর casita নামও বাঙ্গালায গৃহীত হইযাছিল ৷ বিশিষ্ট ফারসী শব্দেব মতো এগুলিও বাঙ্গালীর শব্দভাণ্ডাবে স্থায়ী হইয়াছে | যেমন,__গরাদে,জানালা, বাল্তি, তোযালে, মিস্ত্রি, তিজেল, পরাত, ইত্যাদি ৷ বাঙ্গালা ভাষাব সঙ্গে পোর্তুগীজ ভাষাব উল্লেখযোগ্য সংস্পর্শ ঘটে নাই | সুতবাং বাঙ্গালায় coisa ভাষাব প্রভাবের প্রশ্ন নাই । তবে cine পাদরিরা তাঁহাদেব ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে বাঙ্গালা গদ্যে ছোটখাট নিবন্ধ বচনা করিয়াছিলেন | তাহাব মধ্যে অল্প কিছু মৌলিক বচনা, বাকি সব অনুবাদ | পোর্তৃগীজ পাদবিদেব লেখা গদ্যবচনাব আদর্শ সম্ভবত বাগমাগী বৈষ্ণব সাধকদেব প্রশ্নোত্তবময পুস্তিকায গৃহীত হইয়াছিল এমন অনুমান বোধকবি অযথার্থ নয | স্বতস্ত্র পবিচ্ছেদে এ সম্বন্ধে আলোচনা দ্রষ্টব্য | ব্যাবহারিক প্রযোজনে বাঙ্গালা গদ্যের অনুশীলন সপ্তদশ শতাব্দীতে অপবিহা্য হইয়াছিল | (পূর্ববর্তী শতাব্দীতে এখানে সংস্কৃত ব্যবহৃত হইত, কেননা তখনকাব দিনে শিক্ষিত মানেই সংস্কৃতজ্ঞ | সপ্তদশ শতাব্দী হইতে কম-সংস্কৃত জানা শিক্ষিত ব্যক্তিব সংখ্যা বাড়িতেছিল 1) সরকারি দলিলপত্র সবই ফাবসীতে লেখা হইত | তবে যেখানে কাববাব বাঙ্গালীর সঙ্গে বাঙ্গালীব সেখানে বাঙ্গালাই, চলিত । কামতা-কামঝূপ ও কাছাড-ত্রিপুবাব মতো অল্পবিস্তব স্বাধীন প্রতান্ত বাজ্যে সবকাবি কাজেও বাঙ্গালা চলিত | বিষ্ণুপুবে, শ্রীনিবাস আচার্যের ও তাঁহাব শিষ্য বা শিষ্যদেব প্রভাবে,বৈষ্ণব ধর্মের মধ্য দিযা সংস্কৃত বিদ্যা এই সব বাজসভায বিশেষভাবে সমাদৃত হইযাছিল | কিন্তু সেখানেও সবকাবি কাজে বাঙ্গালা ওডিয়া ফারসী এবং নাগবী (pat) প্রয়োজন মতো চলিত 1 সাহিত্যে গদ্যেব ব্যবহাব তখন সম্ভাবনার সীমান্তের কাছেও CAL নাই | তবে দলিলপত্রে এবং লোকমুখে ও গল্পকথায় গদ্যের দুইটি ভিন্ন ছাঁদ তখন আপনা আপনি গড়িযা উঠিতেছিল | শেষোক্ত ছাঁদের কিছু প্রতিবিশ্বন অ-বিশুদ্ধ সংস্কৃতে, গদ্যে লেখা 'সেকশুভোদযা' বইটিতে পাই | সেকথা পরে বলিব ॥ ৪ নূতন পাঞ্চালীকার প্রবেশ ও কীর্তনশিল্পের সৃষ্টি সমসাময়িক সাহিত্য সম্পূর্ণভাবে ধর্মকথাশ্রিত হইলেও সপ্তদশ শতাব্দীর অধিকাংশ দীর্ঘ রচনায়- পুরাণের অথবা ধর্মগ্রন্থের অনুবাদ-অনুসরণ না হইলে-_বাহিরে ধর্মের রঙটুকু মাত্র ফুটিয়াছে, অস্তরে ধর্মের রসটুকু ধরে নাই, অর্থাৎ দেবতার প্রতি ভীতি যতটা আছে ভক্তি ততটা নাই । পরবর্তী শতাব্দীর কয়েকটি বিশিষ্ট রচনায দেবতার সম্বন্ধে অনাগ্রহ আরও প্রকট হইয়াছে | সেখানে ভক্তি অত্যন্ত ফিকা এবং ভীতির স্থানে অভ্যস্ত সম্ভম ও প্রণতি |



Leave a Comment