For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)আর-একটি মানুষের কথা বিশেষভাবে মনে পড়ছে, তিনি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেনের মতো বনহুদিকস্পশী ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে যে প্রাথমিক ধারণাটুকু
নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, সে ধারণা গঠনে প্রমদারঞ্জন ঘোষ, সৈয়দ মুজতবা আলী,
প্রমথনাথ বিশী, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ কয়েকজনের শান্তিনিকেতন-স্মৃতিকথার বিশেষ
ভূমিকা ছিল। এই জীবনী লিখছি শুনে অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত আমাকে উৎসাহ
দিয়েছিলেন, যেদিন দেখা করি সেদিনও আমাকে ক্ষিতিমোহন সেন সম্পর্কে দু-চারটি কথা
বলেছিলেন। সর্বাবস্থায় আপাত গাম্ভীর্যের অন্তরালে ক্ষিতিমোহনের যে আনন্দময় রসে
ভরপুর মনটি সকলের হৃদয় স্পর্শ করত তার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছিলেন :
ক্ষিতিমোহনের জীবনী সরস করে লিখবেন, তিনি নীরস মানুষ ছিলেন aT? তার সে কথা
আমি এক মুহূর্তও ভুলিনি। সাধ্যমতো চেষ্টাও করেছি। কিন্তু মনের ইচ্ছা আর হাতের কলম
যাঁদের একই ছন্দে চলে সেই স্তরের মানুষ যে নই, সেও তো আমার অজানা নয়।
একদিকে এই বিশাল ব্যক্তিত্বের বিস্তার আর অন্যদিকে আমার সাধ্যের সীমা--এ দুয়ের
মধ্যে একটা অলঙ্ঘনীয় ব্যবধান থেকেই গেল। আমেদাবাদনিবাসী, গুজরাতের শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সংঘের সম্পাদক শ্রীযুক্ত
মোহনদাস পটেলের কথাও ভুলতে পারব না কোনোদিন। তার বাল্যকালে তিনি পণ্ডিত
ক্ষিতিমোহন সেনকে ঘরের লোকের মতো জানতেন। তিনিও আমাকে উৎসাহিত
করেছিলেন। তারই উদ্যোগে আচার্য ক্ষিতিমোহন সেনের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে
গুজরাতের শান্তিনিকেতন-অনুরাগী ক্ষিতিমোহন-গুণমুগ্ধ মানুষরা 'সাধনাত্রয়ী' নামে একটি
স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেন. মোহনদাসভাই তার সম্পাদক ছিলেন। পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন
সেনের জীবিতকালে তার যে তিনটি গ্রন্থ গুজরাতি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল সেগুলি এই
স্মারকগ্রন্থে পুনর্মুদ্রিত হয়। এ ছাড়া এতে তার কিছু চিঠিপত্র ও তার সম্বন্ধীয় কয়েকটি
রচনা প্রভৃতির সমাবেশ ঘটেছিল। মোহনদাসভাই এই চিঠিগুলি ও তার নিজের রচনাটি
আমাকে অনুবাদ করে দেন, ক্ষিতিমোহন সেনের ছাত্রকে লেখা কয়েকটি বাংলা চিঠির
জেরক্স করে পাঠান। আর “RPA” সম্পূর্ণ অনুবাদ করে দিয়েছিলেন 'চীনজাপাননী
যাত্রা' যখন অনুবাদ করলেন, আমি তার কাছেই ছিলাম। প্রতিদিন দু-বেলাই আমরা এই
বইটা নিয়ে বসতাম। তিনি মুখে মুখে বাংলা অনুবাদ করে যেতেন, আমি লিখতাম। মোহনদাসভাইয়ের কাছে অপর্যাপ্ত সাহায্য পেয়েছি, তদনুপাতে স্নেহ পেয়েছি, প্রেরণা
পেয়েছি। তার কাছে যা পেয়েছি, ভয় হয়, পাছে খণস্বীকারের ছককাটা মাপের সীমায়
প্রকাশ করতে গিয়ে তাকে খর্ব করি। সে চেষ্টা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। তাকে আমার
প্রণাম জানাই। 'চীনজাপাননী যাত্রার উপকরণ এই জীবনীগ্রদ্থে তেমন কিছু ব্যবহার করতে পারিনি।
‘wate তো কিছুমাত্র নয়। আচার্য ক্ষিতিমোহনের প্রবন্ধ ও ভাষণের যে প্রাচুর্য ও
বৈচিত্র্য তার কতটুকুই বা এই লেখায় ধরা পড়ল! পরে তার একটি প্রবন্ধ ও ভাষণ ংকলন করার অভিপ্রায় আছে, আশা করি 'চীনজাপাননী যাত্রা”, 'তন্ত্রনীসাধনা' প্রভৃতি তার