For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)দিল্লি সুলতানির পতন ও মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা ৫ আফগান সৈনিকের রক্তে পানিপথ রঞ্জিত হলো। এই যুদ্ধই ছিল ইতিহাস বিখ্যাত
পানিপথের প্রথম যুদ্ধ। এঁতিহাসিকদের মতে কামান-বন্দুকই ছিল বাবরের যুদ্ধ জয়ের
নিশ্চিত কারণ। যুদ্ধের গুরুত্ব ঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধছিল ভারতের ইতিহাসে এক যুগাম্তকারী ঘটনা।
এর ফলে প্রথমত, দিল্লি এবং তার চারপাশের সুলতানি শাসনের অবসান হলো। বাবর
বহু ধন-সম্পদ সংগ্রহ করে সেগুলিকে জন সমর্থন আদায় এবং মোগলশক্তি বৃদ্ধির কাজে
লাগালেন। দ্বিতীয়ত, পরবর্তীকালে মাত্র পনেরো বছরের মধ্যে (১৫৪০-১৫৫৫ খ্রিঃ)
ছেদচিহ্ন ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী মোগল সাম্রাজ্য ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৃতীয়ত, মুসলমান হলেও
মোগলরা ছিল সুলতানি আমলের ভারতীয় মুসলিমদের নিকট বিদেশী এবং শত্রু
গোষ্ঠীভুক্ত। এই ভারতীয় মুসলিমগণ বিদেশী শত্রুদের রুখবার জন্য ভারতীয়
অ-মুসলমানদের মুখাপেক্ষী হলো। যেমন, গোয়ালিয়রের রাজা Faraway রাজপুত
বাহিনী বিদেশী শত্রুর বিরুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীর পরম সহায়ক হয়েছিলেন। সুতরাং এই সময়
থেকে হিন্দু-মুসলিম বৈষম্য দূরীভূত হয়ে একটা জাতিগত সমন্বয়ের পথ পরিস্কার হয়।
অবশেষে বলা যায়, উদারপন্থী বাদশাহী শাসনের ফলে ভারতে সমন্বয়ী সংস্কৃতির ধারা
গড়ে ওঠে। দিল্লিতে মোগল অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও সেই অধিকারটুকু সমগ্র ভারতে মোগল
আধিপত্য ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অস্তরায় ছিল। তখন ভারতের
অনেকগুলি Arey দিল্লি অপেক্ষা অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। এদের মধ্যে এক অংশে
ছিলেন কয়েকজন প্রাদেশিক সুলতান এবং দ্বিতীয় অংশে ছিলেন রাজপুতনার নরপতিবৃন্দ।
তবুও নতুন আগ্নলেয় অস্ত্রে সজ্জিত বাবর দিল্লির সুলতান অপেক্ষা মোগল অধিকৃত ভূখণ্ডের
সীমা বৃদ্ধিতে তৎপর হলেন। এই পর্যায়ে প্রথমত তিনি হুমায়ূনের সাহায্যে গঙ্গা-যমুনার
দোয়াব অঞ্চলের ছোট ছোট আফগান নেতাদের পরাজিত ও বন্দি করলেন। হুমায়ূনের
নেতৃত্বে জৌনপুর ও গাজীপুর অধিকৃত হলো। সঙ্গে সঙ্গে বাবর নিজেই গোয়ালিয়র
অধিকার করলেন। বাবরের নির্দেশ অনুসারে অন্যান্য মোগল সৈন্যধ্যক্ষরা এটাওয়া, কলপী,
ঢোলপুর, কনৌজ প্রভৃতি অঞ্চল অধিকার করলেন। এইভাবে উত্তর প্রদেশের এক বিরাট
বিস্তৃত অঞ্চল মোগল-অধিকারে এলো। দ্বিতীয়ত, পার্শ্ববর্তী চিতোরের রাজপুত শক্তি ছিল পরাক্রান্ত। চিতোরের রাণা সংগ্রাম
সিংহ বারাণাসঙ্গ প্রথম-থেকেই ভারতে রাজপুত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। তিনি
আশা করেছিলেন যে বাবর পূর্ববর্তী মোঙ্গলদের মত ভারত লুঠন করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন
করবেন অথবা তাকে ভারত থেকে বিতাড়িত করাও সহজ হবে। কিন্তু লক্ষ্য করা গেল
যে বাবর ভারতে স্থায়ী মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়েছেন। তিনি সংগ্রাম সিংহের
অগোচরে কল্পী ও ACTA দখল করেছেন — যা ছিল এতদিন সংগ্রাম সিংহের অধীনস্থ।
কাজেই সংগ্রাম সিংহ এবার বাবরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হলেন।