For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)নাতির বিয়ের পর ঠাকুমা ম্যাজিকের মতো সুস্থ হয়ে ওঠেন। MIS ছেলে তো
সে-রকমই বলে। এ-বছর শ্রাবণ মাসের অবস্থা টাইট। মাস শেষ হতে চলল
বৃষ্টি-বাদলার দেখা নেই। একেবারে খটখটা। এই সময়ে প্রেম ও বিয়ে নিয়ে এত
বকবক করার কারণ কী? কারণ আমার এবং তুলির বিয়েও ভেঙে গেছে। সেটা বলার জন্যই এত বড়ো
ভূমিকা। তবে আর পাঁচজন প্রেমিক-প্রেমিকার বিয়ে ভাঙার সঙ্গে আমাদের বিয়ে
ভাঙার কোনো মিল নেই। আমাদের বিয়ে কোনো সুন্দরী মেয়ে, আমেরিকা থেকে
উড়ে আসা ননদের ছেলে, বাবার পাকড়াও করা মোটা মাইনের পাত্র, মৃত্যুপথযাত্রী
ঠাকুমা ভাঙেননি। আমাদের বিয়ে যিনি ভেঙেছেন তার নাম শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ওরিজিনাল রবীন্দ্রনাথ। পঁচিশে বৈশাখ যাঁর জন্ম, মৃত্যু-বাইশে শ্রাবণে। তিনি এই
কাজটি করেছেন, আমার বাবা, শ্রীভুপতি হালদারের মাধ্যমে। বড়োমানুষরা মৃত্যুর
পরও অন্যের মাধ্যমে নানা ধরনের কাজ করতে পারেন। তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এই বিয়ে ভাঙার জন্য আমার প্রেমিকা তুলি
আমার ওপর প্রতিশোধ নিতে চাইছে। কী আশ্চর্য! বিয়ে তো আমি ভাঙিনি। বিয়ে
ভেঙেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভায়া বাবা। আমি তো তুলিকে ভীষণ ভালোবাসি।
আমি তাকে বিয়ে করতেই চাই। তাহলে আমার ওপর কেন প্রতিশোধ? তুলি
আমার মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়েছে--আই শ্যাল কিল BE | আমি দোতলা থেকে পা টিপে টিপে নামছি। আওয়াজ হতে পারে বলে
জুতো পরিনি। জুতো আমার ATG | এই মুহূতে বাইরের CHC দেখলে আমাকে চোর
ভাববে। ভাববে চোর চুরি সেরে সিঁড়ি দিয়ে চুপি চুপি নেমে যাচ্ছে। কথাটা অর্ধেক ঠিক, অর্ধেক Ger | আমি চুপি চুপি সিড়ি দিয়ে নামছি ঠিকই, fore
আমি cols নই। আমি এ-বাড়ির ছেলে। এ-বাড়ির ছেলে হয়েও আমি চোরের মতো
আচরণ করছি কেন? করছি তার কারণ আজ শ্রাবণ মাসের বাইশ তারিখ। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের মৃত্যুদিন। কথাটা শুনে অবাক লাগছে? অবাক লাগবারই কথা। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের মৃত্যুদিনে আমাকে চোরের মতো আচরণ করতে হবে কেন? একটু গোড়া
থেকে বলে নিই। যদিও হাতে বেশি সময় CAS সংক্ষেপে যতটা পারি বলছি। আমার নাম নিখিলেশ। নরমাল নিখিলেশ নয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিখিলেশ।
আমার বাবা এই নাম রেখেছেন। আমার বাবা ভূপতি হালদার একজন
রবীন্দ্রনাথ-পাগল মানুষ। রবীন্দ্রনাথে পাগল বহু মানুষই। কিন্তু আমার বাবার
পাগলামি “বাড়াবাড়ি ধরনের পাগলামি'। বৈশাখ আর শ্রাবণ মাসে মানুষটা প্রায়
সর্বক্ষণ চোখ দুটো আধবোজা করে রাখেন। ধ্যানের মতো ভঙ্গি। রবীন্দ্রনাথ
ঠাক্রের নাম উচ্চারণের সময় জোড় হাত কপালে ঠেকান। মাঝেমধ্যে মনে হয়, যদি
সম্ভব হত উনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো CaN পরতেন, লম্বা দাড়ি রাখতেন।
তারপর ছাতা হাতে আঠেরো নম্বর ট্রামে উঠে অফিস যেতেন। কন্ডাক্টর টিকিট
চাইতে গিয়ে থমকে যেত। মানুষটাকে চেনা চেনা লাগে না! ১৪