অষ্টম বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলন [খণ্ড-২] | Astam Bangiya Sahitya Sammilan [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বর্ধমান তথা বাঙালীর 'গৌরব'এর কথার উল্লেখ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। “ট” পরিশিষ্টে “বর্ধমানের পুরাকথা' স্বতস্ত্রভাবে ১ম খণ্ডে রাখা হয়েছে। অষ্টম বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলন উপলক্ষ্যে যে চারটি পৃথক শাখায় আলোচনা হয়েছে, তন্মধ্যে বর্তমান খণ্ডে সাহিত্য শাখার বিষয়বস্তু রাখা হল। একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়সূচীর মাধ্যমে এগুলি রাখা হয়েছে। উক্ত শাখায় সভাপতির আসন অলঙ্কৃত করেন মহামহোপাধ্যায় শ্রী হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়। সভার শুরুতে তিনি দীর্ঘ অভিভাষণের মধ্যে বালা সাহিত্যের ইতিহাস, পরিবর্তন, রামায়ণ-মহাভারত-এর অনুবাদ থেকে শুরু করে ইসলামী সাহিত্য, বৈষ্ণব সাহিত্য, ইংরাজী সাহিত্যের প্রভাব, সংস্কৃতের সঙ্গে সম্পর্ক, জটিলতা প্রভৃতি নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সভাপতির ভাষণ যেন অনেকটাই ছিল সাহিত্য চর্চার দিক নির্দেশ। এরপর গদ্য এবং পদ্য মিলিয়ে ৪৯টি প্রবন্ধ পঠিত হয় অথবা কয়েকটি পঠিত বলে গৃহীত হয়। তন্মধ্যে ৩৪টি প্রবন্ধ বর্তমান ACY সংকলিত করা হয়েছে। বিষয়সূচীর মধ্যে দেখা যায় কেবলমাত্র সাহিত্য নিয়ে সাধারণ আলোচনা ছিল না, বিষয়বস্তুর মধ্যে কাব্য, ভাষা, চিত্র, শিল্প, সঙ্গীত, স্থাপত্য, শিক্ষা, বিভিন্ন কবির সৃষ্টি, মঙ্গলকাব্য, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক প্রভৃতি নানা বিষয় DIGS হয়েছে। প্রবন্ধ ও কবিতাগুলি থেকে সমসাময়িককালে বাংলা সাহিত্য চর্চার বিষয়বস্তু ও ধারা বুঝতে অসুবিধা হয় না। যেমন ডাঃ আব্দুল গফুর সিদ্দিকী তার হিন্দু-মুসলমান” প্রবন্ধে খুব কঠোর ও কঠিন ভাষায় যে মন্তব্য করেছেন তা আজ অনেকাংশে অপ্রাসঙ্গিক অথবা রূঢ় মনে হতে পারে। প্রবন্ধটি সম্পর্কে সভাপতি মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় ভূমিকায় যথার্থভাবে উল্লেখ করেছেন। পরবর্তী সময়ে উক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে, AY প্রকাশিত হয়েছে, নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু প্রায় শতবর্ষ পূর্বে বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে এ সম্পর্কে যে ধারণা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তার গুরুত্বও কম নয়। আর একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে তা হল উনবিংশ শতাব্দীর শেষ এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বন্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ প্রমুখের সৃষ্ট বাংলা ভাষা ও সাহিত্য যে নতুন দিকের সূচনা করে, পরিবর্তন সূচিত হয় তাতে বাংলা ভাষার প্রকৃত রূপ সম্পর্কে অনেকে চিত্তান্বিত হয়ে পড়েন। সাধু এবং চলিত ভাষা, সংস্কৃত ভাষা, বিদেশি ভাষা, মুসলমানদের ভাষা, পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গের ভাষা এধরনের নানা প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে আসে। বলা যেতে পারে সাহিতোর এক যুগ পরিবর্তনের কালে সময়োপযোগী বিভিন্ন বিষয় যেমন আলোচনায় স্থান পেয়েছে তেমনি সাহিত্যিক এবং বিদ্বঞ্জনেরা অনেকাংশে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ধরনের মাহিত্য চচা নিশ্চিতভাবে অনেকাংশে এঁতিহ্য হিসাবে গৃহীত হতে পারে এবং সেই এঁতিহ্কে ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেই পরবর্তী প্রজন্ম সাহিত্য চর্চায় এগিয়ে চলেছে। [১৬]



Leave a Comment