নন্দনবাসিনী | Nandanbasini

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
কাজ আছে? oi কাজটা নিয়ে লিপিকা প্রশ্ন করল না। চুপচাপ ঘরে ঢুকে গেল। তখন সকাল ABT | শরতের রোদে আকাশ ভেসে যাচ্ছে। লিপিকার হাবভাব, কথায় সন্দেহ জাগলেও আমি কোনও প্রশ্ন করলাম TH দুই বোন, মহাসমুদ্রে বিচ্ছিন্ন দুটো দ্বীপের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের মাঝখানে চোখের জল, আর ছলাৎছল ঢেউ ভাঙার আওয়াজ ছাড়া, অন্য কিছু ছিল না। লিপিকা কেন সেই দুপুরে আমাকে সঙ্গী করতে চেয়েছিল, জানলাম দশদিন পরে। কয়েকদিন ধরে যা আশঙ্কা করছিলাম, আশঙ্কা করে অস্থির হচ্ছিলাম, তাই ঘটে গেছে। ড্রুইংরুমে বসে তমালকাকা, মিতাকাকিকে ঘটনাটা বলতে গিয়ে ছেলেমানুষের মতো বাবা হাউহাউ করে কাদছিল। মুখে শাড়ির আঁচল চেপে মা কান্না সামলাচ্ছিল। ড্রইংরুমের বন্ধ জানলার পাশে, চাতালে বসে আড়ি পেতে আমি শুনছিলাম। যোলোই মার্চ কলকাতায় লিপিকাকে রেজিস্ট্রি করে টর্পেডো বিয়ে করেছে। ম্যারেজ রেজিস্টার অফিস থেকে খবরটা বাবা জেনেছে। বন্ধ জানলার পাশে দীড়িয়ে যন্ত্রণায় ফেটে যাচ্ছিল আমার বুক। বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল তমাল কাকা। মায়ের পিঠে হাত রেখে মিতাকাকি গুম হয়ে বসেছিল। গরমকালে কাঠের জানলার দু পাল্লার মাঝখানে সরু রেখার মতো যে ফাঁক তৈরি হয়, সেখানে চোখ রেখে ঘরের ভেতরটা দেখতে পাচ্ছিলাম। ঘরে দম বন্ধ করা অস্বস্তি। বাইরে নিঃশ্বাস চেপে আমি দীড়িয়ে আছি। একটু আগে ACH হয়েছে। দুটো আলো জ্বলছে ড্রইংরুমে | দু পাল্লার রেখার মতো ফাঁক দিয়ে ড্রইংরুমের একফালি আলো অন্ধকার চাতালে এসে পড়েছে। আমি ছাড়া চাতালে কেউ CS | দোতলার ঘরে লিপিকা শুয়ে আছে। দশদিনে আধখানা হয়ে গেছে শরীর। অসুস্থ দেখাচ্ছে।গত এক VAT দুবার তাকে নিয়ে বাবা বাড়ির বাইরে গিয়েছিল। কোথায় গিয়েছিল, জানতাম না। বাবার কথা শুনে জানলাম। নরম গলায় বাবাকে তমালকাকা বলল, এত ঘাবড়াচ্ছ কেন? লিপির মতো বুদ্ধমতী কলেজে পড়া মেয়ে যদি নিজের পছন্দে বিয়ে করে, ক্ষতি কি? ঘরের মধ্যে সূচিভেদ্য নিস্তব্ধতা। তমালকাকা বলেছিল, লিপি নিশ্চয় আজেবাজে ছেলেকে বিয়ে করবে না। বাবা আবার ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠতে তমালকাকা নড়েচড়ে বসল। দু পাল্লার ফাকে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। তবু নড়তে পারছিলাম না। বাবার মুখে যোলোই মার্চ তারিখটা শুনে চমকে গিয়েছিলাম। সেই সকালের ছবি ছবছ মনে পড়েছিল। মুখে না বললেও লিপিকা সে দিন রেজিস্ট্রি অফিসে আমাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। আমি যাইনি। অমিতাভর পাশে বসে সেই দুপুরে লাইটহাউসে সিনেমা দেখেছিলাম। তামিল ছবি। সংলাপ একবর্ণ না বুঝলেও কিছু দৃশ্য দেখে লাল হয়ে যাচ্ছিলাম। অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আমার হাতের পাতায় Wer দিয়ে অমিতাভ কিছু লিখছিল। কী লিখছিল, আমি জানি না। সিনেমার শেষে তর্জনি দিয়ে আঁকিবুকি কাটার মর্মার্থ অমিতাভ বলেছিল। শুনে আমি শিউরে উঠেছিলাম। ড্রইংরুমের উজ্জল আলোয় পুতুলের মতো বসে আছে চারজন মানুষ। তমালকাকা কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। টিপটিপ করছে আমার Js | অমিতাভ সম্পর্কে কিছু খবর ইতিমধ্যে সহপাঠিনী হৈমন্তীর কাছ থেকে শুনেছিলাম। নবপল্লীতে হৈমন্তীদের বাড়ির দুটো বাড়ি পরে অমিতাভ থাকত | এখন থাকে বিরাটিতে। হৈমন্তীর মেজদার বন্ধু ছিল একসময় | ইঞ্জিনিয়ার মেজদার বয়স fet) বোম্বাইতে চাকরি করে। অমিতাভর নাম শুনলে কানে আঙুল দেয়। ১৮



Leave a Comment