বসু-বাড়ি | Basu-bari

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ছবি আঁকায় বিশেষ পারদর্শী হতে পারলাম না, কিছু মাস্টারমশাই শ্রীহরেন সেনগুপ্ত আমার মধ্যে শিল্প ও শিল্পকর্ম সম্বন্ধে এমন একটা রুচি ও ধারণার সৃষ্টি করেছিলেন যেটা পরবর্তী জীবনে আমার খুব কাজে লেগেছে । আমাদের মাস্টারমশাইরা যে বাবা-মা'র কল্যাণে সহজেই আমাদের পরিবারভুক্ত হয়ে যেতেন তাই নয়, বাবা ও রাঙাকাকাবাবুর দেশের কাজেও তাঁরা অংশীদার হতেন । যে হরেন সেনগুপ্তমশাই আমার শিশু বয়সের আর্টের শিক্ষক, তিনি বৃদ্ধবয়সে আজও নেতাজীর কাজ করে চলেছেন | আজকের নেতাজী মিউজিয়মের সব তৈলচিত্রই তাঁর আঁকা | ছেলেবেলায় অসুখ-বিসুখ তো আমার লেগেই থাকত | মাকে সেজন্য অনেক WOH পোয়াতে হয়েছে | মা হোমিওপ্যাথিক গৃহচিকিৎসার বই হাতের কাছে রাখতেন, আর থাকত একটা কাঠের বাক্সে সুন্দরভাবে সাজানো হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ছোটছোট শিশি | হোমিওপ্যাথিক গুলি তো খেতে ভাল, cafes অনেক | কবিরাজী চিকিৎসারও বাড়িতে বেশ চলন ছিল ৷ সেকালের শ্েষ্ঠ কবিরাজ ও দাদাভাইয়ের বিশেষ সুহৃদ শ্যামাদাস বাচস্পতির কথা তো আগেই বলেছি | কবিরাজী ওষুধ তৈরি করতে হাঙ্গামা অনেক এবং সবক্ষেত্রে তা সুস্বাদুও নয়। fy মা ওষুধ ও রুগির পথ্য হাতে নিয়ে এসে দাঁড়ালে না বলবার উপায় ছিল না। আ্যালোপ্যাথিও চলত পাশাপাশি, কারণ আমাদের নতুনকাকাবাবু সুনীলচন্দ্র ছিলেন বিলেত-ফেরত ডাক্তার | তিনি নিজে তো আছেনই, অন্যান্য অনেক বিশেষজ্ঞ বন্ধুদেরও প্রয়োজনমতো হাজির করতেন | বাড়ির অসুখ-বিসুখের ব্যাপারে, বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে, রাঙাকাকাবাবুর মতামত ছিল বিজ্ঞানধর্মী । যেমন ধরো, আমার ম্যালেরিয়া হয়েছে এবং ক্রমাগত তেতো কুইনিন PAA গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে | রাঙাকাকাবাবু মাকে লিখলেন, কেবল ওষুধ খাওয়ালেই তো চলবে না, রোগের মূল কারণ বের করে তার প্রতিবিধান করতে হবে | বললেন, বাড়িতে মশার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করুন | দিদির হল টাইফয়েড, রাঙাকাকাবাবু বলে পাঠালেন, বাড়িতে এত সংক্রামক রোগ কেন হয়, এ-বিষয়ে অনুসন্ধান হওয়া দরকার | রাঙাকাকাবাবুর নিজেরও অসুখ-বিসুখ কম করেনি | পরে ১৯৩৬ সালে আমাদের কার্শিয়ঙের বাড়িতে তাঁর সঙ্গে থাকবার সময় দেখেছি, আধাডাক্তারি ও গৃহচিকিৎসার বই পড়ছেন | কিছুদিন আগেই ইউরোপে তাঁর পেটে অপারেশন হয়েছিল | দেখলাম গল ATTA বা পিত্তকোষ সম্বন্ধে অনেক কিছু জানেন | তাঁর প্রায়ই সায়াটিকার ব্যথা হত, শরীরের এই বিশেষ নার্ড সম্বন্ধে দেখলাম তিনি বেশ ওয়াকিবহাল | নানা রোগের উপসর্গ ও লক্ষণ সম্বন্ধে তাঁর বেশ জ্ঞান থাকায় তাঁর আর একটি সুবিধ৷ হয়েছিল । প্রয়োজন হলে জেলের কর্তৃপক্ষ বা পুলিসকে বেশ ধোঁকা দিতে পারতেন । nan ১৯৩৪ সাল | বাবা তখন কার্শিয়ঙে গিধাপাহাড়ে নিজের বাড়িতে অন্তরীণ হয়ে আছেন | হঠাৎ এক সকালে কার্শিয়ঙের বাড়ির চৌকিদার আমাদের কলকাতার > নং উড়বার্ন পার্কের বাড়িতে এসে উপস্থিত | এসেই মা'র সঙ্গে কিছু গোপন কথাবার্তা | লুকিয়ে এসেছে | বাবা কিছু জরুরি গোপনীয় কাগজপত্র কালু সিংয়ের মারফত পাঠিয়েছেন | মা'র ২২



Leave a Comment