For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)না--আরো নীচে লতাপাতা এত জটিল আর মাথার আচ্ছাদন এত কঠিন | এই সব মিলিয়ে এখন যেন চারপাশ থেকে একটা ঢাকনা তোলার মত ভাব | আকাশটা নীল আর
রোদটা এত প্রচণ্ড হওয়াতেই এই খোলামেলা ভাবটা ছড়ায় বটে কিন্তু সেই ঢাকনাটা এখনো সরে নি |
আকাশ-ভাঙা জল আর মাটির তলার জল--_এই দুদিকেই এখন ত জমা জলের পচন | আকাশের জল
'শেষ হলে মাটির তলার জল টেনে নেবে গাছপালা | এই ভরা বর্ষাতে কি সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে
গেছে ? বাতাসও কেমন অনিশ্চিত-_-পুব থেকে কখনো, কখনো-বা উত্তর ধেষাও মনে হয় । AMS
তেমনি অনিশ্চিত-_-কখনো মনে হয় আরামের আর কখনো মনে হয শরীরের সব রস শুকিয়ে যাবে |
ছায়াও তেমনি, কখনো মনে হয় ঠাণ্ডা, কখনো মনে হয় হিম । আকাশ-বাতাসের এই FAS ভাবটা সবচেয়ে বোঝা যায় ধানখেতে | নতুন চারাব কাচা সবুজ
যেন উঠে যাচ্ছে-_সমস্ত ধানখেতের চেহারাই এখন রঙচটা ফ্যাকাশে সবজে | বাতাসে ত ধানথখেত
দোলেই--এত পাতলা পাতায় ও CHAT ধানখেত ত প্রায় জলের মতই | কিন্তু সেই দোলায়
একটা রঙেরই রৌদ্র ছায়াপাতের প্রবাহ খেলে না, যেন মনে হয় বিবর্ণ মড়া একটা খেত ছড়িয়ে পড়ে
আছে | এখন ধীরে-ধীরে খেতের জল শুকোবে | তারপর মাটি শুকোবে | তারপর মাটি খটখটে হবে |
আর, সামনের তিনমাসের এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে-সঙ্গে ধানগাছের গা থেকে এই সবুজের শেষ আভাটাও
চলে যাবে | বাতাসে ধানগাছের হিল্লোলিত রং দেখেই বোঝা যায় মাটিতে ও বাতাসে তখনো কতটা রস
লেগে আছে | এই রস যত শুকোবে-_-ধানগাছের সবুজ তত ঝরবে | ঝরতে-ঝরতে শেষে আর-এক
রঙের দিকে বদলে যাবে | তখন ধানগাছের শরীরের সব রস শুকিয়ে ধানের দুধ ঘন হবে | যত
শুকোবে-_ধানের দুধ তত জমবে | যত জমবে-_-ধানগাছ তত হলুদ হবে | যত হলুদ হবে-_ধানের
ভেতর চাল তত তৈরি হবে | তারপর বাতাস, মাটি ও শবীরের সব জল ঝরিয়ে সমস্ত ধানখ্েতটা
সোনারং হয়ে যাবে | সোনালি হলুদ | ধানখেতের মরণের রোগ ৷ যত শুকোবে তত সোনালি | আর,
ধান তত পাকবে | তারপর একসময় সেই রসহীন শুকনো পাতার তুলনায় চালভরা fre অনেক ভাবী
হয়ে উঠবে, ধানখেত নুয়ে যাবে, নেতিয়ে পড়বে, ধানগাছের মাথায় ধানের শিষ মাটিতে ফিরে যেতে
চাইবে আর মাটিতে নোয়াতে পাতাগুলো খড়খড়িয়ে সোজা হয়ে উঠে বাতাসে দূুলবে | তখন ধানখেত
বাতাসে জলাশয়ের মত হিল্লোলিত হয় না, মাঠময় ছড়িয়ে থাকে-_দেখলে মনে হয় ধানখেত.
নয়-_পোয়ালের খেত | সামনে ফরেস্টটা শেষ হয়ে যায় | ফরেস্টের ছায়ার ভেতর থেকে ওরা সামনে দেখে, ঘাস আর
গাছ-গাছালির ওপর সেই পুরনো পরিষ্কার রোদ । যেন সেই রোদের আভাসেই এখানে ফরেস্টের
ছায়াচ্ছন্নতাও কেটে যাচ্ছে Bash পেরিয়ে ওরা বা দিকে ঘোরে-_ধানখেত | ধানখেতের ভেতর দিয়ে সেই রোদে যেতে-যেতে আবার বর্ষাটাকে TSI নে হয়, যেন শরৎ শুরু
হয়ে গেছে | ডাইনে একটা গা | বাশের বেড়ার লাইন আর গায়ে গা লাগান বাড়িগুলোর পেছন দিক
দিয়ে বানানো প্রাকারেই বোঝা যায় মুসলমান পাড়া ৷ গোচিমারি । পাশ দিয়ে ওরা আরো কোনাকুনি
এগয় | একটু পরেই তিস্তার ঠাণ্ডা বাতাস | বাতাসটা তিস্তার ওপর দিয়ে আসছে- বাতাসের ঠাণ্ডাটা
এমনই তাজা আর টাটকা, যদিও ভেজা | ফরেস্টের ভেতরের বাতাস যে বাইরে আসছিল, সেটাও
ভেজা ছিল কিন্তু ফরেস্টের পাশ দিয়ে আসার সময় তার জলীয় তৈলাক্ত ভেজা ছায়াতেও ঘামিয়ে
দিয়েছিল, ধানখেতের রোদেও সেটা যেন পুরো শুকোয় নি, অদৃশ্য তিস্তার এক ঝলকেই সেটা মুছে
যায় | ওরা আর-একটা সরু পাকা রাস্তায ওঠে | দলটা ডান দিকে ঘোরে ৷ বিনোদবাবু পেছন থেকে
বলেন, 'এইটা চ্যাংমারি হাটের রাস্তা, পেছনে ।' চ্যাংমারিটাও সুহাসের হলকায় পড়বে | সুহাস যা কাজের পরিকল্পনা করেছে তাতে একেবারে শেষে
এ অঞ্চল ধরতে হবে | এখন যে-লাইনটা শুরু করবে, এর পরে তার তলায় পুব-পশ্চিমে আর-একটা
লাইন হবে চ্যাংমারিতে | তখন চ্যাংমারি থেকে আদাবাড়ি, চক মৌলানি, দক্ষিণ চক মৌলানি, দক্ষিণ
মাটিয়ালি, ঝাড় মাটিয়ালি, লাটাগুড়ি আর উত্তর মাটিয়ালী- এই মৌজা দিয়ে কাজ শেষ হবে | এগুলো
গত সেটেলমেন্টের পর মাল সার্কেলে এসেছে, তার আগে ছিল মাটিয়ালি স্যর্কেলে ৷ সুহাস একটু
দাড়ায় । বিনোদবাবু তার পাশ দিয়ে এগিয়ে যান | দলের দিকে পেছন ফিরে সুহাস এই রাস্তাটি দিয়ে
চ্যাংমারি হাটের দিকে তাকায় | তারপর আবার ঘুরে দলের পেছন-পেছন চলে | একটু যেতেই সামনে ৪৯
তি : পা: বৃ : 8