শতায়ু সুকুমার | Shatayu Sukumar

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সুকুমার রায়: দিশি ও বিলাতি দিশিবিলাতি যাবতীয় প্রেরণাকে পেরিয়ে গিয়ে তৈরি করে দেয় অন্য-একটা অর্থের জগৎ — সারূপ্যের সংকট কি্তৃতের অস্তিত্বটাকেই বিপন্ন ক'রে মহা wae বাধিয়ে বসে। এক ভবঘুরে পঞ্চাশের দশকে হৈতহৈ ক'রে গান গেয়েছিলো যে তার জুতো জাপানি, পাংলুন ইংলিশস্তানি, মাথায় লাল টুপি রুশী, আর দিলখানা হিন্দুস্তানি — যেরকম জীবকে আস্তর্জাতিক বাজারের কল্যাণে হরদম আমরা মোলাকাৎ করছি। কিন্তু সুকুমার রায়ের হিংসুটে কিন্তুত এর-ওর-তার থেকে এটা-ওটা-সেটা নেবার পর আচমকা একসময় আবিষ্কার ক'রে বসে: নই ঘোড়া, নই হাতি, নই সাপ, বিচ্ছু, মৌমাছি, প্রজাপতি, নই আমি কিচ্ছু মাছ ব্যাঙ গাছপাতা জলমাটি ঢেউ নই, নই জুতো, নই ছাতা, আমি তবে কেউ নই। কোথাকার জল কোথায় গড়ায়, চেষ্টা করেও খেই রাখা দায়। শুরু হয়েছিলো খিচুড়ি জীব দিয়ে, শেষ ule এসে পৌঁছুনো গেলো না-জীবে, না-জলমাটিতে, কিছুই-না তে | বাবুরাম সাপুড়ে যদি কোনোক্রমে দাঁত-নখ-শিং টুশঢাঁশ ফোঁসফাঁস বাদ দিয়ে সাপেব — সে কিংবদস্তিরই হোক, বা সত্যিকারই হোক — সাপত্ব ঘুচিয়ে দিয়ে wate মাফিক কোনো একটা সাপকে এনে হাজির ক'বে দেয়, তবে অর্থের একটা অন্যরকম কুটকুটুনি শুরু হয়ে যায়: এ হ'তে পারে জীবনের দুঃখ কষ্ট হাসি কান্না ঘাতঘোত সব বাদ দিয়ে এমন জীবনের জন্যে আব্দার যেটা মধ্যবিত্তের পক্ষে বিপুল আরামপ্রদ; অথবা বিদেশি সরকারের কাছে দাঁত-নখ সব কেটেকুটে চকচকে রেকাবিতে স্বরাজকে সাজিয়ে এনে দেবারও বায়না হ'তে পারে, যেটোও বাবুদের কাছে চমৎকার লাগতো | “খিচুড়ি'তে এই জীবের সঙ্গে এ জীবকে জুড়ে দেয়া গিয়েছিলো দুই শব্দের TB ও আদ্য বর্ণের সম্মেলনে, বিভিন্ন জীবের বিবিধ গুণপনা অর্থাৎ প্রবণতা ও শরীরী রূপ জুড়ে দিয়ে তৈরি করা যায় fogs কিছুই-নাকে; আর কোনো জীবের সবকিছু ছাঁটাই ক'রে দিয়ে উলটো প্যাঁচ করে তৈরি করা যায় 'না-সাপকে'* | সুকুমার রায়ের লেখার যেটা বৈশিষ্ট্য, কল্পনা এক জায়গায় থেমে থাকে না, 'ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে', তৈরি হয় গতি, নানারকম মোচড়, নিছক আমোদ বা 'অবিমিশ্র হাস্যরসের' মহল্লা পেরিয়ে এসে আমরা এসে পৌঁছুই সমাজেরই অনর্থ আর অসংগতির কেন্দ্রগুলায় — আর সমাজ, যেটা বিশেষ সমাজ, সময় আর জমি দিয়ে একটা ঘেরা জায়গা, বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিককার বঙ্গসমাজ — তথা ভারতীয় সমাজ | কোথাকার জল কোথায় গড়ায়। যখন 'স্ট্রভেলপেটাব' (ঝাঁকড়াচুল পিটার) — আলেমান সাবধান করা ছড়ার রাজ্য, ভয় দেখানো ভয়ানক, নিয়মমতো না-চললে, বড়োদের কথা না-শুনলে কী হয়, তারই বিকট, ভয়াবহ, 'চমৎকার' ছড়াছবির বই; ভালো-ভালো সব উপদেশ দিয়ে, ছোটোদের সব ছেলেমানুষি ছেঁটে দিয়ে, লেখাপড়া শিখিযে ব্যাঙ্কের মাছিমারা কেরানি বা হেড * “বাবুবাম সাপুডে” ব বাবুটিব আদিখ্যেতা ও আব্দাবেব একটা ব্যাখ্যানা হিসেবে মৎ-কৃত রচনাটিব দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ কবি, যেটা বেবিযেছিলো অমনব্েন্দ্র চক্রবর্তী সম্পাদিত 'কবিতা-পবিচয'এ, সব গুরুগঞ্ভীর পন্ডিতি লেখার মাঝখানে | ১৯



Leave a Comment