রবীন্দ্রনাথের বলাকা গতিরাগের কাব্য | Rabindranather Balaka Gatirager Kabya

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
চ৮ রবীন্দ্রনাথের 'বলাকা” গতিরাগের কাব্য আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত হল সুখ-দুঃখ বিরহ-মিলনপূর্ণ জীবনের প্রতি আকর্ষণ তিনি “চৈতালি*র ক্ষিপ্ত পর্বে গ্রামবাংলার বস্তচিত্র আকলেন, কয়েকটি AA প্রাচীন ভারতের কাব্যসৌন্দর্যে সাড়া দিলেন। এভাবে আমাদের পূর্বোল্লিখিত পলদ্মাতট পূর্বপর্ব ও পল্মাতট-পর্ব শেষ হল। এবারে উম্মুক্ত হল তৃতীয় পর্ব--প্রাচীন ভারতে তার মানসভ্রমণপর্ব, একের পর এক তিনি লিখে চললেন “কথা” “কাহিনী” “নৈবেদ্য, স্ত্রীর মৃত্যুতে “Tay, Pie’, উৎসর্গ। বৈদিক গুপনিষদিক যুগ, বৌদ্ধযুগ, মহাভারতের কাল বা নিকট অতীতের রাজপুত-মারাঠা- শিখদের শীর্যবীর্যময় যুগ তার কল্পনাকে উদ্দীপ্ত করেছে এই পর্বে। মনুষ্যত্বের আদর্শ বার বার চিত্রিত হয়েছে। 'কল্পনা'র “স্বপ্ন” কবিতায় দূরে বছ দূরে উজ্জয়িনীপুরে তিনি পূর্বজন্মের প্রথমা প্রিয়ার সন্ধানে বেরিয়েছেন। এই পর্বের নানা কবিতায় বারবার প্রাচীন তপোবন জীবনাদর্শের প্রতি আকর্ষণ ব্যক্ত করেছেন। “নৈবেদ্য"র কবিতায় প্রাচীন ভারতের মহিমা রূপ পেয়েছে। উপকরণবিরল সহজ সরল তপোবনের পরিচয় তিনি পেয়েছেন কালিদাসের মতো কবির কাব্যে। এই সময় বছর কয়েকের জন্য তিনি বেশ একটু সংকীর্ণ weds “হিন্দু হয়ে উঠছিলেন। “হিন্দুর এক্য' ও অন্যান্য কয়েকটি প্রবন্ধে হিন্দুত্বের বা আর্যত্বের উগ্র প্রকাশ ঘটেছিল। Say জীবনাদর্শের প্রতি অনুরাগ, ব্রাহ্মণের CMS এসব প্রবন্ধকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। এই পর্বকেই আমরা বঙ্গদর্শন (নবপর্যায়) পর্ব--তৃতীয় পর্ব বলতে পারি। কিন্তু এ এক সাময়িক পর্ব। ১৯০৭ থেকে তিনি তার বিশ্যাত উপন্যাস 'গোরা' লেখা আরম্ভ করেন। শেষ হয় ১৯১০ এ। গোরার হিন্দুত্বের ঘোর কেটে যায়, ভারতীয়ত্ববোধে তার উত্তরণ ঘটে। হিন্দু ভারত থেকে মহাভারতে গোরার এই PPT আসলে রবীন্দ্রনাথের নিজেরই উত্তরণ। বলাকা পূর্ব পর্বে বলাকা'র আভাসের দিক থেকে উপন্যাসে যেমন “গোরা'র গুরুত্ব, প্রবন্ধে তেমনই 'ভারতবর্ষের ইতিহাসের ধারা'র মৃূল্য। এই প্রবন্ধে বিভিন্ন উপাদানের মধ্য থেকে ভারতে কিভাবে এক মহাভারত বিকশিত হয়ে উঠেছে। তার বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা তিনি করেছেন। এখানে Rees CHOY নেই, দৃষ্টি মুক্ত ও উদার। এসব তিনি লিখছেন পঞ্চম পর্বে। এই পর্বেই 'অচলায়তন' নাটক লিখছেন। এতে আচার-বিচার-মানা হিন্দু সমাজের ওপর ব্যঙ্গের বাণ নিক্ষেপ করেছেন। এই মনোভাবের পরিচয় পরবর্তী 'বলাকা' পর্বে আরও বেশি পেয়েছি। তখন. কবিতায় চলছে NST কাব্যের পালা। এই গীতাখ্য কাব্যত্রয়ের পর্ব আসলে ‘CA (১৯০৫-০৬) থেকেই শুরু হয়ে গেছে। বর্তমান শতাব্দীর আরম্ভ থেকে একের পর এক শোকের আঘাত রবীন্দ্রনাথের জীবনে এসে পড়ে। ১৯০২ সালে কবি-পত্নী মৃণালিনী দেবীর মৃত্যু, ১৯০৩-এ মধ্যমা কন্যা রেণুকার মৃত্যু, ১৯০৫-এ পিতা দেবেদ্দ্রনাথের মৃত্যু, ১৯০৭-এ কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথের মৃত্যু। এইসব শোক জয় করে তিনি এক অভিনব অধ্যাত্মলোকে উত্তীর্ণ হলেন। এই অধ্যাত্মলোকের অনুভূতি তারই স্বকীয়। এর সঙ্গে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস বা আধ্যাত্মিক চেতনার যোগ নেই। একথা সত্য, তখনকার গদ্য প্রবন্ধে তিনি উপনিষদ্‌, গীতা জাতীয় বিখ্যাত গ্রদ্থগুলি থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তার উপলব্ধির সঙ্গে মেলে এমন উদ্ধৃতিই তিনি চয়ন করেছেন। এসব উদ্ধৃতির ব্যাখ্যা ও তার নিজের মতো, কোনও পূর্বাচার্যের ব্যাখ্যানুসারী নয় তার ব্যাখ্যা। তার কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথের মৃত্যুর দু'মাস পরে, তিনি মাঘোৎসবে Wey নামে ভাষণ দেন। এই ভাষণ এখন ‘ef’ বইটির অস্তর্ভুক্ত। এই ভাষণে তিনি বলেছেন ঃ “হে রাজা, তুমি আমাদের দুঃখের রাজা; হঠাৎ যখন অর্ধরাত্রে তোমার রথচক্রের



Leave a Comment