বারাকপুরের প্রথম সিপাহী বিদ্রোহ ১৮২৪ | Barrackpurer Pratham Sipahi Bidroha 1824

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ভূমিকা ১৮২৪ সালে ২রা নভেম্বর সকালে বারাকপুর সেনানিবাসে ভারতীয় সিপাহীদের প্রথম বড় মাপের বিদ্রোহ হচ্ছে বহির্বিশ্বে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর অভিযানের বিরুদ্ধে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে উত্তর ভারতীয় সিপাহীদের প্রথম সংগঠিত বিদ্রোহ । ১৭৬২ সাল থেকে ডাচ,ফরাসী ও স্পেনীয়দের বিরুদ্ধে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী মাদ্রাজ কলকাতা ও বোষ্বে থেকে ম্যানিলা, (১৭৬২ - YY), সিংহল (১৭৮১, ১৭৯৫ - ৯৬), আম্বোয়ানা (১৭৯৬), মিশর (১৮০১-০২), মরিশাস ও জাভা (১৮১০-১২) প্রমুখ দেশে দক্ষিণ ভারতীয় সিপাহীদের সামুদ্রিক অভিযানে পাঠানো হয়।* কিন্তু এই সমস্ত অভিযানে পাঠানোয় কোম্পানীর দক্ষিণ ভারতীয় সিপাহীদের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ দেখা যায় নি। কারণ অভিযান কালে কোম্পানী সিপাহীদের বৈদেশিক ভাতা, পেনসন ও অভিযানকালীন বিনা মূল্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করে। কিন্তু ১৮২৪ সালে বারাকপুর থেকে তিনটি নেটিভ ইনফ্যানট্রি রেজিমেন্ট, ২৬, ৪৭ ও ৬২ নং কে ব্রহ্মদেশে পাঠানোর সময় সিপাহীরা দাবী করে যতক্ষণ না তাদের দক্ষিণ ভারতীয় সিপাহীদের মত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, তারা অভিযানে অগ্রসর হবে না। তার ফলেই ভারতের সমর অধিনায়ক বিদ্রোহী তিন বাহিনীকে তোপের মুখে উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যার দৃষ্টান্ত ভারতে কোম্পানী ও বৃটিশ রাজ আমলের সামরিক ইতিহাসে বিরল। স্বাধীন, পরাধীন পৃথিবীর যে কোন দেশে স্থল ও নৌবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ যে কোন মাপের হোক, একটি সাধারণ ঘটনা। মিউটিনি বা বিদ্রোহের অর্থ হচ্ছে যে কোন সামরিক অধিকর্তার আইনগত ভাবে ঘোষিত আদেশ সংঘবসদ্ধভাবে অমান্য বা বিরোধিতা করা অথবা আইনগত সামরিক অধিকতর আদেশ লঙ্ঘন করতে সহকর্মী সৈনিকদের উৎসাহিত ও উস্কানী দেওয়া বা দেওয়ার চেস্টা করা।* এই অমান্যতা ও অবাধ্যতাকে আবার অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন কোন আইনানুগ সামরিক অফিসারের পদাধিকার বলে প্রদত্ত নির্দেশ বা command যদি নিম্নপদস্ক সৈনিক বা সামরিক অফিসার ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করে তাহলে তা হবে শৃংখলা ভংগের কাজ এবং তা বিদ্রোহ হিসাবে গণ্য হবে।' ধর্মীয় বা সামাজিক রীতিনীতি সৈনিকদের ব্যক্তিগত জীবনের ওপর যত প্রভাবশালী হোক না কেন সেগুলি কখনই সামরিক আদেশ লঙ্ঘন করার অজুহাত বা অছিলা হিসাবে গণ্য করা যাবে না।' তবে কোন অবস্থায় যদি সামরিক আদেশ বেআইনী হয় তাহলে সৈনিকরা উচ্চতর সামরিক অধিকততারি আদেশ অমান্য করতে পারে।* উদাহরণস্বরূপ ধরা যেতে পারে যে যদি নিরপরাধী শাস্ত জনতার উপর গুলি বর্ষনের কোন সামরিক নির্দেশ আসে তাহলে সৈনিকরা সে নির্দেশ অমান্য করতে পারে। অবশ্য এ ধরনের নির্দেশ একমাত্র নাৎসী জামনিীর আমলের ছাড়া পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।



Leave a Comment