গর্ভধারিনী | Garvadharini

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
Heil জয়িতার ACH কথা বলে সুদীপ ব্যালকনিতে এল। ওদের বাড়ির সামনের রাস্তাটা বেশ চওড়া। যেহেতু রাত এখন বেশ তাই লোকজন নেই বললেই চলে। ঠাকুরের পানের দোকানটা অবশ্য খোলা। আশেপাশের বাড়ির রীধুনেরা এখন ওখানে আড্ডা মারছে। ও-পাশের রকটায় দুজন দাবা খেলছে রাস্তার আলোয়। এ ছাড়া আর কোন প্রাণের অস্তিত্ব নেই। মাঝে মাঝেই হুস-হাস গাড়ি ছুটে যাচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সুদীপ ভাল করে লক্ষ করল। না, কোনও অপরিচিত মুখ সে দেখতে পেল না। কেউ সন্দেহজনক ভঙ্গিতে এই বাড়ির দিকে তাকিয়ে বসে নেই। অথচ তার খোঁজে নাকি দু'বার লোকটা এসেছিল। কার্তিকদার বর্ণনা মত সে কোন চেনা লোকের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারছে না। কার্তিকদার বয়স হয়েছে, ওলট-পালট হয়ে যায় সব। কিন্তু দু'বারে বলার সময় যে মিলগুলো পেয়েছে সেরকম কোনও মানুষকে চেনে না সুদীপ। তাছাড়া লোকটা এসেছিল তখন যখন বাড়িতে সে ছিল না, বাবাও নয়। দু'বারই। অস্বস্তিটা লেগে আছে শোনার পর থেকেই | আনন্দর হোস্টেলেও একই কাণ্ড ঘটেছে। আনন্দ আজ রাস্তায় হাঁটার সময় বারংবার পেছন ফিরে তাকিয়েছে। তার সন্দেহ ছিল কেউ বোধহয় অনুসরণ করছে। কিন্তু সুদীপ বলেছিল তারা এমন কোনও কাজ করেনি যে এমন কাণ্ড ঘটবে, অথচ বাড়িতে এসে কার্তিকদার কাছে শোনার পর আনন্দর কথা সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। এত রাত্রে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কোন উপায় নেই। আনন্দর হোস্টেলে ফোন থাকলেও সুপার এত রাত্রে ডেকে দেবে না। কল্যাণের বাড়িতে টেলিফোন নেই। জয়িতা তো নিজেই করল। সুদীপ আশঙ্কা করেছিল ওর ওখানেও বোধ হয় কেউ হানা দিয়েছে! জয়িতার যে সমস্যা সেটা ওর অনেকদিনের দেখা। এটা নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কি দরকার! তবে এটা খুব চমকপ্রদ ঘটনা মানতেই হবে। যে মহিলাটি জয়িতাকে ফোন করে বলেছেন তিনি আজ ওর বাবার সঙ্গে শুয়েছেন তিনি নমস্যা। ওঁকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে। অবশ্য যদি ভদ্রমহিলা হন! জয়িতার বাড়ির আবহাওয়াটা তো এখন কলকাতার ওপরমহলে উঠে যাওয়া বা উঠতে চাওয়া পরিবারের! ওখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে যখন জয়িতা তখন ওদের জন্যে এত আপসেট হয় কেন ও মাঝে মাঝেই কে জানে! একমাত্র ওই একটি ব্যাপার ছাড়া জয়িতার কোন ব্যাপারে জড়তা নেই। জড়তা? সুদীপ শব্দটা নিয়ে দু'চারবার নাড়াচাড়া করল। জড়তা তার নিজের নেই? GH ব্যাপারে অকারণ আড়ষ্টতা আসে কেন? সুদীপ নিজের ঘরে ফিরে এল। কীটসব্যাগ নয়, ত্রিপলের একটা লম্বা ঝোলা আছে সুদীপের ৷ দীপু মামা এনে দিয়েছিল জার্মানি থেকে। বেশ মজবুত, দেখতেও খারাপ নয়। এতকাল সেটা পড়ে থাকত চ্যাপটা হয়ে, এখন ফেঁপে ফুলে চমৎকার দেখাচ্ছে। বেশ কিছুকাল যাতে স্বচ্ছন্দে থাকা যায় এমন জিনিসপত্র ওতে ভরা হয়ে গেছে। যে কোনও সময় নোটিস এলেই বেরিয়ে পড়তে পারে সুদীপ। হাওয়া ক্রমশই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই বাড়িটা সুদীপের বাবা অবনী তালুকদারের। হাইকোর্টের নামজাদা উকিল। বিশাল বাড়িটায় তিনজন মানুষকে নিয়ে বেশ কয়েকজন ঝি-চাকর আরাম করে আছে। খাবার টেবিল ছাড়া সুদীপের সাহায্যে ওরা তেমন লাগে না। এই যে আজ একটা লোক দু'বার এল, এরা তার নাম-ঠিকানা জেনে নেওয়ার বুদ্ধিটুকুও ধরে না। সুদীপের অস্বস্তি কিছুতেই কাটছিল না। অবনী তালুকদার সুদীপের সঙ্গে কথা বলেন না। মাস ছয়েক হল বাক্যালাপ বন্ধ। সুদীপ আশঙ্কা করেছিল তাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হবে কিন্তু অবনী তালুকদার সেটা বলেননি। তবে সমস্ত খরচ-খরচা দেওয়া TH করে দিয়েছেন। সুদীপের অবশ্য এখন onfy wis কিছু আটকাচ্ছে না। খরচ বলতে সিগারেট, বাসভাড়া, চায়ের দাম আর কলেজে'র মাইনে। জমানো টাকায় সেটা চলে যাচ্ছে আপাতত। তবে সে নিজে যেমন, তেমন অবনী তালুকদারও চেষ্টা করেন যাতে পরস্পরের মুখোমুখি ১২



Leave a Comment