নানা রসের ৯ টি উপন্যাস | Nana Raser 9 ti Upanyas

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
“হঠাৎ ট্যাটু!” “ইন-থিং!” “তুই আবার কবে থেকে ইন-আউট করতে লেগেছিস?” “আপকামিং ক্লাস, চড়চড় করে মই বেয়ে উঠছে ইয়ার। OY ডান হাতের ফোর আর্মে একখানা ড্রাগন। যখনই হাত তুলব, নজরে পড়বে। আর দেখতে হবে না। দাম চড়ে যাবে এক লাফে ।” “ফান্টু!” “ওল্ড ভ্যালুজ নিয়ে থেকে যা মেছোবাজারে,” আরিয়ান ভিড় ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এইটা শুনলে তার ফাটাফাটি রাগ হয়ে যায়, ধ্রুব জানেন | এই সাউথের ছেলেগুলো উত্তর কলকাতা মানেই মেছোবাজার বুঝে চলেছে। কোথায় থাকিস? মেছোবাজারে। কোথায় যাচ্ছিস? মেছোবাজারে। সংযুক্তা গল্প করেছিলেন, 'জানো লোরেটোতে পড়তে গিয়েছি, একটা মেয়েকে বেশ ভালো লাগল। জিজ্ঞেস করি, কোথায় থাকো, না বালিগঞ্জ প্লেস।” আমি বললাম, “ও বালিগঞ্জ?” মেয়েটা সঙ্গে সঙ্গে বলল কী জানো, “তা কি মেছোবাজারে থাকব?” বলতে বলতে সংযুক্তা হেসেছিল। “তুমি তো বাবা সেই বালিগঞ্জের মক্কেল, অমনি আপস্টার্ট নাকি? আমি তো প্রথমে না-ই করে দিয়েছিলাম |” রূপরাজ ছেলেটি বলল, “আমার নিজের যে নর্থ পছন্দ, তা মোটেই নয়। কিন্তু গোয়াবাগানের ছেলে অত সহজে কিল খেয়ে, কিল হজম করার পাত্র আমি নই। তুই যা গেছোবাজারে,” চেঁচিয়ে বলি। আশপাশের দু'-চারজন মিচকি হাসে। “আরে বাবা, এই নর্থ ক্যালকাটাই আসল কলকাতা। এখানেই রেনেশীস। রবীন্দ্রনাথ থেকে সত্যেন বোস। কী সাহিত্য, কী বিজ্ঞান, এখানকারই কোণ-কানাচ থেকে বেরিয়েছে, তবে না দাঁড়িয়ে আছিস! নইলে কোথায় দাঁড়াতিস দাঁড়কাক? চললেন ট্যাটু করতে, নাকি ইন-থিং! পত্রপত্রিকা, বোকা বাক্স যা খাওয়াচ্ছে, খেয়ে যাচ্ছে। খা বাবা, বোকা বন। তেরি লাইফ, তেরি চয়েস।” . আমার কতকগুলো প্রিলিপল আছে। প্রিন্সিপল ছাড়া কোনও Boro হয় আমি মানি না। প্রথম কথা, সব লোকে যা করছে জাস্ট দলে পড়ে, আমি তা করব না। যত প্রেশার দিবি, আমার কুকার তত চড়ে যাবে। ফার্স্ট ইয়ারেও কেউ আমাকে সিগারেট খাওয়াতে পারেনি। ঘুরতে-ফিরতে গাট্টা, ইয়ার্কি। আমি খাইনি। ইচ্ছে হলে স্মোক করব, মেরি মর্জি। ফ্যাশন বলে, ম্যাচো বলে, ইন-থিং বলে আমার ওপরে চাপিয়ে দিতে পারবি না কেউ কিছু। এখন খাচ্ছি, টেনশন হলে, ভালো দেখায় বলে, অনেক সময়েই সিগারেট ঝুলিয়ে রাখি ঠোটে। উত্তর কলকাতা পুরনো, Fels, সেকেলে। বেশ, কিন্তু এখানেই জন্মেছি, বড় হয়েছি এবং এই জায়গাটার একটা লম্বা ইতিহাস আছে। বিপ্লবও সেই ইতিহাসের অংশ | এখন এই জায়গাটাকে তাচ্ছিল্য করলে তো নিজেকেই তাচ্ছিল্য করা হয়, নিজের জন্মমাটির ইতিহাসকে তাচ্ছিল্য করতে হয়। নিজেকে তুচ্ছ করে কেউ কোনওদিন বড় হতে পারে? অন প্রিন্সিপল, আমি উত্তর কলকাতার হয়ে লড়ে যাই। আমি বলি বিবেকানন্দ। আমি বলি, পাথুরিয়াঘাটা, জোড়ারসাকো। আমি afei, চিতপুরের যাত্রা পাড়া, হিন্দু কলেজ, বেথুন কলেজ, এবং বলি, নকশাল। এই রে, হাজরার মোড় থেকে জ্যাঠামশাই উঠলেন, হয়ে. গেল আজ! একেবারে কোণ ঘেঁষে বসে পড়ি। বই খুলে পড়তে থাকি। জ্যাঠামশাই এখানে কী করছেন, এই বুড়োগুলো কি Tara চলে নাকি? হেদুয়ার জ্যাঠামশাই, হাজরায়? জ্যাঠামশাইটি আমার নিজের নয়। নিজেরও অবশ্য আছে, বহাল তবিয়তে আছে। তবে সেটিকে আমি গোয়াবাগানের বাড়িতে জুতো পালিশ করতে দেখে -এসেছি। তিনি পালিশ-বিশারদ। এবং সক্কালবেলায় বাড়ির সব্বার জুতো ঝকঝকে করে পালিশ করাই এঁর বাতিক। তবে আপাতত বাসের ১২



Leave a Comment