ও. হেনরি গল্পসমগ্র [খণ্ড-১] [সংস্করণ-১] | O. henry Galpasamagra [Vol. 1] [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সত্যিকারের কোন বিশ্ব-নাগরিক জন্মগ্রহণ করে নি। তাদের কথা আমরা শুনতে পাই, অনেকের গায়ে বিদেশী লেবেলও আঁটা দেখি, কিন্তু যাদের দর্শন পাই তারা ভ্রমণকারী, বিশ্ব-নাগরিক নয়। আপনিই দৃশ্যটার বিচার করুন _খ্বেতপাথরের টেবিল, দেয়াল-সংলগ্ন সারিসারি চামড়ার গদি-আটা আসন। হাসিখুশি মানুষ, অর্ধবাসপরিহিতা মহিলার দল, সমবেত গলায় রুটি, অর্থনীতি, প্রাচুর্য বা কলা সম্পর্কে আলোচনা ; অক্লাস্ত পরিশ্রমী উৎকোচপ্রিয় পরিচারকের দল, গীতিকারদের বিনষ্টিসাধক সর্বজন মনোরঞ্জনকর সঙ্গীত পরিবেশন; কথা ও হাসির হুল্লোড়-_আর, আপনার যদি রুচি থাকে তো লম্বা গ্লাসে পরিবেশিত উর্জবার্জারেও ঠোঁট ভেজাতে পারেন। মৌচ চুংক থেকে আগত GLAS ভাস্কর আমাকে বলেছিলেন যে দৃশ্যটি প্রকৃতই প্যারিসসুলত। বিশ্ব-নাগরিকটির নাম ই. রাশমোর কগ্লান; পরবতী শ্রীষ্মকাল থেকে কনি দ্বীপে তার গলা শোনা যাবে। সেখানে তিনি একটি নতুন “আকর্ষণ” প্রতিষ্ঠা করবেন বলে আমাকে জানালেন; রাজকীয় সব ব্যবস্থা সেখানে করা হবে। তারপরই তার কথার চাকা ঘুরতে লাগল। বলতে গেলে তিনি যেন অতিপরিচয়জনিত অবহেলার সঙ্গে এই বিরাট, গোলাকার পৃথিবীটাকে হাতের মধ্যে পুরে নিলেন। অশ্রদ্ধার সঙ্গে বিষুবরেখা-অঞ্চল সম্পর্কে কথা বলেই তিনি এক মহাদেশ থেকে লাফ দিয়ে অন্য মহাদেশে চলে গেলেন, Stacy সবগুলি অঞ্চল নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করলেন, মহাসাগরগুলোকে তো তোয়ালে দিয়েই ঝেটিয়ে বিদায় করলেন। একবার হাত ঘুরিয়েই হায়দ্রাবাদের একটা বিশেষ বাজারের কথা শেষ করলেন। হু-উ-স্‌। আপনাকে নিয়ে তুললেন ল্যাপল্যান্ডের Ba উপর। শো-ও-ও! এবার আপনি সওয়ার হলেন কিয়েলাইকাহিকির সাগর-তরঙ্গের উত্তাল পিঠের উপর। জলদি | তিনি আপনাকে টেনে নিয়ে চললেন আর্কান্সাস-এর জলাভূমির ভিতর দিয়ে এবং ইডাহো পশু-খামারের ক্ষার প্রাম্তরে মুহূর্তের জন্য আপনাকে একটু শুকিয়ে নিয়ে তো করে ঘুরতে ঘুরতে আপনাকে হাজির করলেন ASTIN বড় বড় ডিউকদের সমাজে । যখন তখন তিনি আপনাকে শোনাবেন কেমন করে শিকাগোর হদের বাতাসে তার সর্দি হয়েছিল আর বুয়েনস্‌ আয়ার্সে বুড়ি এস্কামিলা চুচুলা বীজের গরম SY খাইয়ে আপনাকে সারিয়ে তুলেছিল। “ই. রাশমোর কগ্লান, একস্কোয়ার, পৃথিবী, সৌরমণ্ডল, মহাবিশ্ব” এই ঠিকানায় চিঠি লিখে ডাকে ফেলে দিন আর নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকুন যে সে-চিঠি তার হাতে যথাসময়ে পৌঁছে যাবে। আমি নিশ্চিত হলাম যে আদমের পরে এই প্রথম একজন সত্যিকারের বিশ্ব-নাগরিকের দেখা পেলাম। আর ভয়ে ভয়ে তার এই বিশ্ব-ভ্রমণের বৃত্তান্ত মন দিয়ে শুনলাম, পাছে তার বিবরণে এক মামুলি বিশ্ব-পথিকের স্থানীয় সুরটা ধরা পড়ে যায়। কিন্তু তার মন্তব্যগুলিতে কখনও দায়সারা তাব অথবা আস্থার অভাব দেখা গেল না ; তাকে মনে হল বাতাস অথবা মাধ্যাকর্ষণের মতই নগর, দেশ এবং মহাদেশের প্রতি সমান নিরপেক্ষ পানশালার বিশ্ব-নাগরিক ১৯



Leave a Comment