দ্বিতীয় জগৎ | Dwitiya Jagat

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
লিখে দিয়েছিল। আর সেইটা পড়ে ব্যাঙ্কের সকলেই বেশ খুশী, কারণ এতে নাকি তাদের খারাপ হযে যাওয়া ইমেজ খানিকটা অন্তত ভালো হয়েছে। মনে মনে ভাবলাম মুরারীটা মহা-পাজী তো! আবার ভাবলাম হয়তো প্রথম দিন রিপোর্টিংটা করে ওর মনেও সামান্য অপরাধবোধ জেগে উঠেছিল তাই পরের দিন আবার সেটাকে শুধরে দিযেছে, কারণ ও ভালোই জানত একটা খবরের কাগজের রিপোর্টের কত দাম। এই খবরের কাগজই পারে মুহূর্তের মধ্যে কাউকে তুলতে আবার কাউকে নামাতে। ও হয়তো আন্দাজ করেছিল যে তার প্রথমদিনের রিপোর্টিংকে ভিত্তি করে দারোয়ানটার উপর নানা চাপ আসতে পারে, ফলে তার চাকরিটাও যেতে পারে। তাই দ্বিতীয় দিনে দয়ানন্দনের ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা এবং তার চাকরি বজায় থাকার ব্যাপারটা আদ্যোপান্ত আমার . মুখ থেকে শুনেই সঙ্গে সঙ্গে সে বলে উঠেছিল “যাক বাবা বাঁচালি, যা ভাবনা হয়েছিল বেচারার জন্য।” দয়ানন্দনের প্রসঙ্গ তো এখানে চাপা পড়েছিল, কিন্তু মুস্কিল করল আমার মুরারীটা, দ্বিতীয় দিনের এ ব্যাঙ্ক সম্বন্ধে ভালো রিপোর্টিং করার জন্য ডিসেম্বরের শীতেও আমায় ব্যাঙ্কে গেলেই ফ্রীজের ঠাণ্ডা জল খেতে হচ্ছে আজও, আর চেক রিসিভিং-এ দিলে মিনিট দশেকের মধ্যেই টাকা পেয়ে যাচ্ছি। তারপর থেকে, অর্থাৎ ঘুমোবার ইচ্ছে থাকলেও আর ব্যাঙ্কের বেঞ্চে বসে ঘুমোবার উপায নেই। এই Ws, দেখছো রাঙা বৌদি, কি আশাভুলো তোমার এই দেবরটি? ভানতে বসেছিল ধান, গাইতে শুরু করে দিয়েছে শিবের গীত। আচ্ছা বলতো রাঙা বৌদি, তুমি ছাড়া আর কারও কাছে এরকম আবোল তাবোল বকলে কি কেউ সহ্য করবে? পাগল বলবে না? হ্যা রাঙা বৌদি, আজকে আমার পরিচয় প্রায় এ রকমই । সামনা-সামনি যদিও কেউ এখনও এ বিশেষণটি দিয়ে ভূষিত করেনি, তবুও কানা-ঘুযোয় যা কানে আসছে তাতে এখনও পর্যগু পাগল না হলেও আমায় খুব শীঘ্র এই পৃথিবীটা পাগল বানিয়ে ছাড়বে। তুমি তো জানো রাঙা বৌদি, পিতৃমাতৃহারা বলে আমি একটু সেন্টিমেন্টাল, আর এই মেন্টালিটিটা গড়ে উঠেছে ভালোবাসাকে FIT বুঝলে না বোধ হয়। হ্যা রাঙা বৌদি, খুব পরিষ্কার করেই বলছি শোন। তোমার এই দেবরটি ভালোবাসার ভিখারী, যেখানেই ভালোবাসা সেখানেই তার ঝুলিটা এগিয়ে দেয়। আমার এ অবস্থার জন্য আজকে মনে মনে কিন্তু তোমাকেও দোষ দিই কখনও কখনও। মনে মনে দোষ দিলেও সামনে কিছুই বলতে মন চায় না। সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই মনে হয়, কতক্ষণে তুমি দক্ষিণ হস্তের তিনটি আঙুল দিয়ে আমার চিবুক স্পর্শ করে স্নেহ চুম্বনের আওয়াজ তুলবে, সেই আঙুলগুলোকে নিজের অধরে ও ওষ্ঠে ঠেকিয়ে! হ্যা রাঙা-বৌদি, সত্যি বলছি, এখানে এতদূরে বসেও মাঝে মাঝে যেন তোমার CSM পাই আমার চিবুকে। বুঝতে পারছ তো কত কাঙাল আমি। ১৮



Leave a Comment