উপন্যাস সমগ্র ২ [সংস্করণ-১] | Upanyas Samagra 2 [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ছিল দুটো উঁচু পাহাড় | সেই পাহাড়টা কাটতে বাকি তখন | এদিকে CAPS পথ পরিষ্কার করা হয়েছে তার উপর মাটি ফেলে উঁচু করা হচ্ছে | শুনলাম, বিলেত থেকে কোম্পানি খাস সাহেব ইঞ্জিনিয়ার পাঠাচ্ছে, তার চোখের সামনে পাহাড় কাটা হবে নতুন কি একটা যন্ত্র দিয়ে । আর রেল লাইনও পাতা হবে তার তদারকিতে | কিন্তু কে জানতো কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ এসে হাজির হবে সেই সাহেব । রাস্তিরে সব তাঁবুতে ঘুমিয়ে আছি, জ্যোৎস্না রাত, হঠাৎ কানে এল বেশ একটা মিষ্টি আওয়াজ | ঝুমুর ঝুম ঝুমুর ঝুম..--ঠিক যেন Yea পরে কেউ ASR | অনেকক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইলাম, আর ভাবলাম কে হতে পারে | এতো MSTA নাচার শখ হল কার | অথচ অনেক দুর থেকে যেন ক্রমশই কাছে আসছে শব্দটা | হঠাৎ ভয় হল | কাপালিকটা নয় তো ? আমাদের পত্তনদার দলটায় সিপাই সান্ত্রী টোটা বন্দুকের অভাব ছিল না | বাঘ ভালুক কি কম দেখেছি তখন | তবে হ্যাঁ ভয় ছিল বইকি | ভয় পেতাম এঁ কাপালিকটাকে | দেখেছিলামও একদিন | আমি আর ওয়াট্‌্সন সাহেব, দু-জনে বন্দুক হাতে নিয়ে বেরিয়েছিলাম Ace দিকে | দূর থেকে মন্দিরের ভাঙা চূড়াটা দেখা যেতো তাই ইচ্ছে হতো ভেতরে কি আছে দেখবার | আঁধৈর্য হয়ে জিজ্ঞেস করতাম, কাপালিক দেখেছো দাদু ? দাদু হাসতেন আমার কথা শুনে | বলতেন, দেখেছি। আমি আর ওয়াটসন সাহেব, আমরাই প্রথম দেখি । Ser পর্যন্ত যেতে যেতে বেশ রাত হয়ে গেল সেদিন | তবু বন্দুক হাতে নিয়ে এগিয়ে চললাম আমরা-_দেখতে হবে মন্দিরটা কিসের | জঙ্গলের মধ্যে, যেখানে মানুষের চিহ্ন নেই কোথাও, সেখানে মন্দির এল কোখেকে | অথচ মন্দিরটায় কেউ একজন যে থাকে বেশ বুঝতে পারতাম । প্রায়ই দূর থেকে দেখতে পেতাম মন্দিরের কাছ থেকে ধোঁয়া উঠছে | আর কোনো কোনোদিন রাস্তিরে আগুন জ্বলতেও দেখতে পেতাম | মন্ত্রে-তন্ত্রে দাদুর বিশ্বাস ছিল না মোটেই । কিন্তু যখন কাপালিকের বর্ণনা দিতেন, ভয়ে শিউরে উঠতাম আমরা, আরো ঘন হয়ে POM দাদুর কাছে, দাদুকে EA গনগনে আগুন জ্বলছে সামনে, একটা মড়ার ওপর কাপালিক বসে রয়েছে, আগুনের ভাঁটার মতো দুটো লাল চোখ অন্ধকারেও যেন জ্বলছে | দাদুর গল্প শুনতে শুনতে আমরাও ঠিক যেন দেখতে পেতাম কাপালিককে | শুধু কাপালিকই নয়, যা কিছু বলতেন তিনি, বর্ণনা দিতেন, তা যেন চোখে দেখতে পেতাম | আর তাই হয়তো এত ভাল লাগত নিরুর দাদুকে, নিরুর দাদুর মুখে গল্প শুনতে | আর তাঁর হাসি-হাসি মুখের সঙ্গে আমাদের পরিচয় এতো ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল যে কোনোদিন তাঁর কান্নাভরা চোখ দেখতে হবে কল্পনাও করিনি | নিরুর দাদু আর নিরুর মার কান্না দেখে আমি কেঁদে উঠেছিলাম প্রথমটা, অথচ বুঝতে পারিনি কি ঘটেছে, কেন এমন বিপদের ছায়া নেমেছে নিরুদের বাড়িতে । শুনলাম ক্রমশ | সব কথা অবশ্য কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারেনি | তবু কিছুটা বাবা-মার আলোচনা শুনে ব্যাপারটা বুঝলাম | কিন্তু এও কি সম্ভব ! স্বপ্ন কি তাহলে সত্যি হয় ? তবে যে দাদু বলতেন, BH WAR, স্বপ্ন সত্যি নয়! নিরুর মামাকে মনে পড়লো | মনে পড়লো তাঁর বিয়ের দিনে মাসীমা আমাদের সামনে বসে খাইয়েছিলেন কত কী । সারিবন্দী হয়ে সবাই বসেছিল-_পশ্টু, দিদি, নিভার মা, আঁটুলের ছোট কাকী, মণ্টু, মানী, আলো, কুসুম সবাই । আর মার পাশেই বসেছিলাম SH | নিরুর মা আমার সামনে বসে যত রকমের মিষ্টি সব দুটো দুটো করে দিয়েছিলেন আমাকে | আর মা যত বলে, খেতে পারবো না, মাসীমা তত হাতা ভরে ভরে মাছ ঢেলে ১৬



Leave a Comment