দশটি উপন্যাস | Dashti Upanyas

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বেরিয়ে যাবার আগে পুলকদা অমুর গাল টিপে বলে যায়, “টেস্ট খেলতে হবে, বুঝেছ?” অমুর তখন এক বছর বয়স। পূলকদা গত বছর আফিম খেয়ে মরে গেছে। কারণটা কেউ জানে না। অহীন বিয়ে করেছে, ছেলেপুলে হয়তো হয়েছে। থিয়েতে CATS SCAM | করার মতো অতখানি আলাপও এখন নেই। আর না থাকলে গিয়ে বলাও যায় না-- অহীন রোগে ধরেছে। ইনজেকশন লাগা। “বাবু কে একজন ডাক্ছে।” তারক চমকে মজুরটার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। “গলিতে কে একজন ডাকছে অনেকক্ষণ।” তারক ব্যস্ত হয়ে টুল ছেড়ে দাড়িয়ে ধপ করে বসে পড়ল। ডান পা ঝি বি ধরে অসাড় হয়ে গেছে। “কে? কাকে চাই, এদিকে আসুন।” চিৎকার করল তারক। “আমি নারান।” । “দরজা খোলাই আছে, এসো।” তারক ডান পায়ের পাঁতায় টোকা দিল। গোটা শরীর ঝনঝন করে উঠতেই সে ভাবল, ইনজেকশন নিলেই যখন সারিয়ে ফেলা যায় তখন আর চিত্তা কেন! প্রফুল্ল চিত্তে সে নারানকে দেখামাত্রই বলল, “আমার মনে আছে, মনে আছে। তোমার আবার আসার দরকার ছিল না।” “বলেছিলেন মাসের গোড়ার দিকে একবার দেখা করতে।” নারান নামক বাইশ-তেইশ বছরের যুবকটিকে কাঁচুমাচু দেখাল। তাইতে তারক তৃপ্ত বোধ করল। “তুমি বরং আজ দুটো-তিনটে নাগাদ আমার অফিসে এসো। যদি আজই ইন্টারভিউয়ের চিঠিটা বার করে দিতে পারি তা হলে হাতে হাতেই দিয়ে দোব। চেনো তো অফিসটা ?” “চারতলায়, স্টাফ সেকশন। আমি তো একবার গিয়েছিলাম।” “স্থ্যা, হ্যা, থার্ড ফ্লোর। তা হলে দুটো-তিনটেয়, কেমন ?” নারান চলে যাওয়ার পরও ঝি ঝি ছাড়েনি। খানিকক্ষণ বসতে হবে। তাই তারক He দিল, “দেবু, আজকের কাগজটা দিয়ে যাও তো।” দোতলা থেকে কাগজ দিয়ে গেল দেবাশিস। নদিয়ার এক উদ্বাস্ত কলোনিতে ওর বাবা মা ভাই বোন মিলিয়ে পাচজন থাকে। কলকাতায় সরকারি অফিসে পিওনের কাজ করে, খাওয়া-থাকা তারকদের বাড়িতে। বিনিময়ে বাসন মাজা ছাড়া সব কাজই করে অফিস যাওয়ার আগে এবং ফিরে এসে। রেণু থাকলে অবশ্য রীধতে হয় না। ওকে বঙ্কুবিহারীই জোগাড় করেছে। এমন ভদ্রলোকের মতো দেখতে, চালচলন মার্জিত, স্কুল ফাইনালও পাশ, তাকে প্রথম উবু হয়ে ঘর মুছতে দেখে তারক অস্বস্তি বোধ করে। রেণু আঙুল দিয়ে আলমারির তলাটা দেখিয়ে বলছিল, “ওর তলাটা যে মোছা হল না। আগে যে লোকটা ছিল তাকে প্রথম দিন যা যা বলে দিয়েছিলুম, ঠিক করে caw! একদিনও আর ফিরে বলতে হয়নি।” তারক চোখ টিপে, SH কুঁচকে রেণুকে চুপ করতে বলেছিল। রেণু অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল, “কেন?” দেবাশিস কাজ শেষ করে বেরিয়ে না যাওয়া ATG তারক কথা বলেনি। “ভদ্রঘরের ছেলে, তার সঙ্গে এ কী ধরনের কথা! ও কি চাকর? কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় শেখোনি?” “ও তবে কী? কীভারে কথা বলব!” রেণুর বিস্ময়ে বিন্দুমাত্র খাদ না পেয়ে তারকের মাথার মধ্যে ঝনঝন করে উঠেছিল। ঘর থেকে তখুনি সে বেরিয়ে যায়। AEA সেইদিনই বলে, “চাকরবাকর ক্লাসের কাউকে রাখলেই তো ভাল হত।” “ও কি দয়া করে কাজ করে দিচ্ছে? দু'বেলা খাওয়া-থাকা, হিসেব করে দেখ তো ফত হয়।” “তা হলেও ভদ্রঘরের ছেলে, শিক্ষিতও-_” সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুবিহারী খেঁকিয়ে উঠেছিল, “দিনকাল যা পড়েছে আর 'ভদ্দরলোক থাকতে হবে না। শিক্ষিতও তো কত দেখলুম। তিনবারে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করে এখন তুই ওকেই ভাবছিস শিক্ষিত। মোল্লার দৌড় আর EAS বা হবে।” ১৬



Leave a Comment