For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)যাওয়ার একটা ডাক আছে। রজত বারান্দায় বেরিয়ে এসে পরিষ্কার আকাশে মাথা তুলে তাকাল। বিরাট পাখির মতই
আ্যালুমিনিয়াম রঙের একটি হেলিকপ্টার নেমে আসছে। অনেকটা কল্পবিজ্ঞানের ছায়াছবিতে
যেভাবে আকাশ থেকে অন্য গ্রহের মানুষ নেমে আসে - প্রায় সেইভাবেই কয়ে লোক
নেমে আসছে। তাদের মাথা, মুখ - সবই দেখতে পাচ্ছে রজত। বিশু কখন তার রা তাগ
করেছে। চোখের ইশারায় তাকে থামাতে রজত দেখতে পেল - গেস্ট হাউসের পেছন দিকটায়
বেশ বড়সড় মাঠ। সেখানেই হেলিকপ্টারটা নামছে। আর এম ঝা বললেন, বাটারফ্লাই উইল
গো ব্যাক টু দি সাইট। আপনারা ইচ্ছে করলে দশ মিনিটে পৌছে যেতে পারেন। এখান থেকে খনি কতদূরে? তা বাই কারে দেড়ঘণ্টা লাগবে। যাবেন নাকি? দেখতে দেখতে পৌছে যাবেন। নাঃ, আপনার কি মনে হয়? কি জানতে চাইছেন? এখনো কি কেউ নিচে বেঁচে আছে খনির ভেতর? আমি না বলব না। St বলব না। পিটসাইডে আমরা সারা দেশের এক্সপার্টদের জড়ো
করেছি। কেউ খনির আগুন নেভাবার ব্যাপারে চল্লিশ বছরের এক্সপিরিয়েন্স রাখেন। কেউ বা
পাতালে ভেন্টিলেশনের এক্সপার্ট | ওঁরা সবাই খনির সামনে বসে পাতালের HITS ম্যাপ সামনে
রেখে মাথা ঘামাচ্ছেন। ঘন্টায় ঘন্টায় রেসকিউ টিমকে পরামর্শ দিচ্ছেন। কথা বলতে বলতে আর এম ঝা ঘরের ভেতরে ঢুকে গেলেন। ফোন বাজছে। সাইট থেকে
আসতে পারে ফোন। দিল্লি থেকেও আসতে পারে। কিংবা কলকাতা থেকে। রজত বলল, চল বিশু। আমরা আমাদের মত এগোই। বিশু “হ্যা” বা 'না' বলে না কখনো | চুপ করে ফলো করে। নয়ত পছন্দ না হলে গৌজ হয়ে
দাঁড়িয়ে থাকে। ওর মুখে কখনো হাসি দেখেনি রজত দূর থেকে একবার কি দু'বার সে বিশুকে
হাসতে দেখেছে। সেই বিশু গাড়ির দিকে এগোতে এগোতে খুব চাপা গলায় বলল, জানেন
রজতদা, মৃত্যু আসে বিদ্যুৎবেগে। রজত কোনও জবাব দিল না। শীতের এই দুপুরে তাদের ভাড়া করা গাড়িটা অনাথ শিশুর
মতই প্রান্তর ভাঙছে। সরু ফিতে পিচরাস্তার দু'ধারে খাড়াই নালা। শীতে কুঁকড়ে যাওয়া
হলুদপানা ঘাস সব জায়গায় মাটি ঢাকতে পারেনি। বেলা প্রায় তিনটেয় রজত আর ares নিয়ে গাড়ি এসে দাড়াল নিরসা মাইনের কাছাকাছি।
ততক্ষণে বিকেলের ছায়া WANA আকাশ কেমন কালচে হয়ে উঠল। পিচরাস্তা থেকে ডাইনে খানিকক্ষণ পাথর পেটানো রাস্তা। তারপরই ঘন করে ফেলা
কয়লাগুঁড়ো। গুঁড়োর নিচে কোথাও মাটি আছে। গাড়ির চাকার এক-একটা দাগ আরেকটা
দাগকে কেটে বেরিয়ে গেছে। কয়লা বয়ে নিয়ে যাওয়ার রোপওয়ে TH তাই দু'টো বাকেট
শূম্যে দূরে দূরে ভাসছে। একটা গোডাউন মত বাড়ির আড়াল পেরোতেই রজত তো অবাক। এ যেন ছুটির দিনে
- বা বড়দিনে কোনও টুরিস্ট স্পটে মানুষের মেলা। শুধু মানুষ নয়। গাড়িরও মেলা। কালো কয়লাগুঁড়ো বাতাসে। পায়ের নিচে কালো
কয়লাগুড়োয় ঢাকা মাটি । তার ওপর অন্তত দেডশো গাড়ি। আ্যামবাসাডর, ফিয়াট, মারুতি, ১৮